Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

অটোরিকশার আসল-নকল ধরতে ব্যর্থ নাসিক ও পুলিশ প্রশাসন

Icon

মেহেদী হাসান

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

অটোরিকশার আসল-নকল ধরতে  ব্যর্থ নাসিক ও পুলিশ প্রশাসন

অটোরিকশার আসল-নকল ধরতে ব্যর্থ নাসিক ও পুলিশ প্রশাসন

Swapno

জনসাধারণের ভোগান্তির আরেক নাম নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোড। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়কটি থাকে তীব্র যানজটে। শহরের ২নং রেলগেইট থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত সড়কটি যেনো একেবারেই অচল অবস্থা। যানবাহনে উঠলেই ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় এই সড়কে। কিন্তু কেনো এই সড়কে এতো যানজট? প্রশ্ন জনসাধারণের মাঝে।


সরেজমিনে দেখা যায়, এই শহরের বিভিন্ন সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মিশুক। শহরের একপাশ থেকে অপর পাশে তাকালেই মনে হয় অটোরিকশা ও মিশুকের শহর এই নারায়ণগঞ্জ।  ছোট্ট এই শহরে প্রতিদিন লক্ষাধীক অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মিশুক চলাচল করে। কিন্তু এই সকল যানবাহনের চার ভাগের তিন ভাগই নেই কোন অনুমোদন। নকল নম্বর প্লেট লাগিয়ে শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই সকল যানবাহন।


কিন্তু কে আসল, আর কে নকল, এটা বের করতে বার বারই ব্যর্থ হচ্ছেন প্রশাসন। মাসের পর মাস সড়কগুলোতে এই সকল অবৈধ অটোরিকশা ও মিশুক দিন দিন বেড়েই চলছে। কিন্তু চেয়ার-টেবিলে বসে অনেকবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বললেও সড়কে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন প্রশাসন।


এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী (সদর-বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জে) এখন পর্যন্ত মাত্র ১৭ হাজার ৩৪২টি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। অথচ বাস্তবে চলছে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি অটোরিকশা ও মিশুক। রং পরিবর্তন ও নম্বর প্লেট নকল করে সড়কগুলোতে চলছে এই সকল যানবাহন। সূত্রে জানা যায়, একটি  রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে একাধিক অটোরিকশা সড়কে চলছে।


কিছু অসাধু অটোরিকশার মালিক ও বিশাল একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন বিভিন্ন নম্বর প্লেট কপি করে একই নাম্বারে তৈরী করছে একাধিক প্লেট। এদিকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেটগুলো দেখতে প্রায় অভিন্ন হওয়ায় আসল-নকল চিহ্নিত করা অসম্ভব। এই সকল জালিয়াতির কারণে সড়কে অনেক সময় হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রকৃত আসল নম্বর প্লেটের চালকরা।


এদিকে নারায়ণগঞ্জের নাগরিক সমাজ বলছে, ছোট্ট এই শহরে প্রশাসন যদি অটো রিকশা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে দিন দিন তার পরিনতি আরও খারাপ হবে। আমরা প্রতিবারই প্রশাসনের বিভিন্ন মিটিংয়ে শহরের অটোরিকশার কথা বলি। কিন্তু তারা বার বার আমাদের আশ্বাস দেয় ব্যবস্থা নেবে কিন্তু বাস্তবে আমরা তার ব্যবস্থা নিতে দেখি না।


সিটি কর্পোরেশনের প্লেট দেওয়ার আগে এই শহরের বিভিন্ন মোড়গুলোতে পুলিশ অটো রিকশা আটক করতো। কিন্তু প্লেট দেওয়ার পর থেকে পুলিশকে আর অটো রিকশা আটক করতে দেখা যায় না। আমরা মনে করি সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতার কারণে জাল প্লেট লাগিয়ে এই শহরে অটো রিকশা ও মিশুক চলছে। তারা যদি প্রথম থেকেই ডিজিটাল প্লেট দিত তাহলে এই নম্বর প্লেট জাল হতে পারতো না।


এবিষয়ে অটোরিকশার কয়েকজন চালকের সাথে কথা বললে জানা যায়, তারা যেই মালিকের গাড়ি চালায় তার একাধিক প্লেট রয়েছে। এই নম্বরে ১০-১২ প্লেট রয়েছে। বিভিন্ন প্রিন্ট কারখানা থেকে এই সকল প্লেট কোড স্ক্যানার করে প্লাস্টিক আবরণে নকল বের করা হয়। যা পুলিশ ধরতে পারে না। আবার গাড়ির রং ও পরিবর্তন করা হয়। অনেকবার প্রকৃত মালিকরা সিটি কর্পোরেশন ও এসপির কাছে অভিযোগ করেছে কিন্তু তারা দেখছি বলে আর পাত্তা দেয়নি। ভুয়া গাড়িগুলো যদি বন্ধ হয়ে যেতো তাহলে সড়কটা অনেক ফাঁকা থাকতো। আমরাও গাড়ি চালিয়ে আনন্দ পেতাম।


এদিকে অটো রিকশার কয়েকজন মালিক জানান, সিটি কর্পোরেশনের গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইওে গেছে। নিয়মিত অভিযান চালালে রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটোরিকশা রাস্তায় নামার সুযোগ পেত না। আমরা গত ৮-১০ ধরে বলছি ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেন, তাহলে অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ হবে। কিন্তু দিচ্ছি দিচ্ছি বলে এখনো ডিজিটাল প্লেট দেননি। আমরা প্রকৃত মালিকরা যারা সিটি কর্পোরেশনের ট্যাক্স দিয়ে প্লেট নিয়েছি আমরা চাই অতিদ্রুত ডিজিটাল প্লেট দিয়ে ভুয়া নম্বরের গাড়ি বন্ধ করে শহরকে যানজট মুক্ত করা হউক।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন