করোনার পর এবার ডেঙ্গুতে রেড জোনে উপনীত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ শহর। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পদের বিলুপ্তি ঘটলে স্থানীয় পর্যায়ে জনদুর্ভোগ হয়েছে তীব্রতর। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা যানজট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এসকল বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতারা সোচ্চার এবং এসকল সমস্যাগুলো নিয়ে সমাধানে আসলেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবছে না। কিন্তু আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের শহরজুড়ে  ছড়াছড়ি দেখা গেলেও গুটি কয়েক দলের রাজনৈতিক নেতাদের ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করতে দেখা গেলেও বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক নেতারা ডেঙ্গু নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এদিকে নারায়ণগঞ্জের বৃহৎ শিল্প অঞ্চাল ব্যবসায়ী মহল থেকেও বিত্তবান ব্যবসায়ীরা ডেঙ্গু নিয়ে মাথা ঘমাচ্ছে না।

এদিকে সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ নগরজুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সংখ্যার সাথে সাথে মৃত্যুার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রধান কারণই হচ্ছে ডেঙ্গু শনাক্তে অবহেলা আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ শহরে কাঙ্খিত চিকিৎসা বা যন্ত্রাংশের অভাবে দীর্ঘ সময় অতিক্রম করে রাজধানীর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুও ঘটছে। ডেঙ্গু এখন নারায়ণগঞ্জ তথা পুরো দেশ জুড়েই মহামারি রূপ ধারণ করছে। এরমধ্যে বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের শহর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড মহাল্লায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু আক্রান্ত নেই ডেঙ্গু দমনে কার্যকর পদক্ষেপ। সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ নিলেও পর্যাপ্ত ডেঙ্গু নিধনের ঔষধ সরবরাহ করতে পারছে না। সেই সাথে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড পর্যাপ্ত বেড বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। তাছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত মুর্মূষুর্  রোগীদের বেঁচে থাকার অন্যতম যন্ত্রাংশ হচ্ছে যে মেশিনের মাধ্যমে প্লাজমা তৈরী করা হয়। মূলত, ডেঙ্গু রোগীদের মুর্মূর্ষ হওয়ার নেপথ্যের কারণই হচ্ছে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া শেষ পরিণিতি বিøডিং মৃত্যু। কিন্তু এর থেকে নিস্তারের একটি উপায়ই হচ্ছে সুস্থ রোগী থেকে রক্ত নিয়ে প্লাজমা দেয়া। পাশাপাশি আইসিও সেবারও প্রয়োজন হয়।

কিন্তু এসকল সেবাগুলো প্রদানে নারায়ণগঞ্জের স্বাস্থ্যখাত অনেকটা অক্ষম। এদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির নেপথ্যের অন্যতম আরও একটি কারণ হচ্ছে বর্ষা শুরুতেই নারায়ণগঞ্জ শহরে বিভিন্ন এলাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করা যা এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এর এই ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করায় নারায়ণগঞ্জ শহরে বিভিন্ন স্থানে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যায় এবং জলবদ্ধতা হলে দীর্ঘসময় থাকে কিছু কিছু স্থানে। যার ফলে নারায়ণগঞ্জ শহরের সরকারী দুটি হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীদের ছড়াছড়ি হয়। এদিকে গত ১মাসে কয়েক হাজার রোগী নারায়ণগঞ্জের সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে সেবা নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে দৈনিক বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা এবং মৃত্যুর মিছিল। তবে ডেঙ্গু নিয়ে জেলা প্রশাসন,সিটি করপোরেশন,সিভিল সার্জন এখনো নারায়ণগঞ্জ জুড়ে সচেতনতামূলক কোন কার্যক্রম বা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোন উদ্যেগ নিতে দেখা যায়নি। যার ফলে শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ ডেঙ্গুতে রেড জোনে উপনীত হচ্ছে।