বন্দরে বিএনপির গ্রুপিং চরমে, বিশৃঙ্খলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

বন্দরে বিএনপির গ্রুপিং চরমে, বিশৃঙ্খলা
বর্তমানে বন্দর যেন এক আতঙ্কের নাম। নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আওতাধীন বন্দর থানাধীন ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে উপজেলা এবং নাসিকের ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে থানা কমিটি গঠিত। বিগত দিনে স্বৈরাচারের দোসর সাবেক সাংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও আজমেরী ওসমানের আঙ্গুলের ইশারায় পুরো বন্দর পরিচালিত হওয়ায় বিশৃঙ্খলা অনেকটাই কম লক্ষ্য করা গেলে ও গত বছরের ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করলেই সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে শুন্যের কোঠায় চলে আসে আওয়ামী লীগ।
সেই অবস্থায় বর্তমানে বড় বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি একক রূপে রয়েছে। যাকে ঘিরে বর্তমানে আওয়ামী লীগের ফেলে রাখা সবই বিএনপি নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে কিছু নিচ্ছে কৌশলে, কিছু নিচ্ছে আপোষে, কিছু নিচ্ছে বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে দখল করে। কিন্তু ১০ মাস পেরিয়ে গেলে বর্তমানে নির্বাচনী হাওয়ায় রয়েছে বিএনপি। যাকে ঘিরে উপজেলা ও থানা ইউনিট কমিটিতে নেতৃত্ব নিয়ে পুরোপুরি ভাবে ৬ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বন্দর বিএনপি।
যা নিজ দলের নেতাদের মাঝে অনৈক্য ও বিভেদের কারণে বিভক্ত বিএনপি সাংগঠনিক কার্যকমে দুর্বল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেখা দিছে একের পর এক ব্যর্থতার ছায়া। একই সাথে নানান বিশৃঙ্খলতার পাশাপাশি ঘটছে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অনাকাঙ্খিত অনেক ঘটনা। একজন পক্ষ আরেক পক্ষে বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি জমি দখলে অভিযোগ তুলছেন, কেউ বা আবার অন্যপক্ষে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী বলে আখ্যায়িত করছেন।
ইতিমধ্যে বন্দরে মহানগর বিএনপির এক শীর্ষ নেতার উপরে আরেক বিএনপি গ্রুপের হামলা। কয়েক গ্রুপের দখল বানিজ্যে, দফায় দফায় আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ। সর্বশেষ বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে জোড়া খুন। তাহলে বর্তমানে থানা ও উপজেলা বিএনপি কি দুর্বল যাকে ঘিরে তারা একত্রিত হয়ে উঠতে পারছেন না।
সূত্র বলছে, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদকে এক সময় বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করতেও দেখা গিয়েছিল। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই শাহেন শাহ বিএনপির সুবাতাসে একক কৃতিত্ব দেখা গেছে। বর্তমানে তিনি সোনাকান্দাসহ বন্দর থানা এলাকা জুড়ে একক আধিপত্য বিস্তার পরিচালনা করছেন বর্তমানে তিনি তার বলয় দ্বারা গঠিত করেছেন বন্দরে বিএনপির একটি আলাদা গ্রুপ। অন্যদিকে গত বছর একটি হত্যা মামলায় দীর্ঘ সময়ে কারাগারে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা। ওই সময় বন্দর থানা বিএনপিকে একক ক্ষমতায় ঘিরে রেখেছিলেন।
বর্তমানে তিনি বন্দরে একক ক্ষমতায় থাকতে সভাপতি শাহেন শাহ এর সাথে আলাদা হয়ে সামাজ্যে তৈরি করেছেন। এরা দুই নেতাই বন্দর থানাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ যার লক্ষ্যে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে তাদের বিদ্রোহী বিএনপি গ্রুপ রয়েছে। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম এর ছেলে মহানগর বিএনপির পদত্যাগকারী সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা বন্দরে আলাদা প্রভাবে একক সমাজ্যে নিয়ন্ত্রণ করে দখলদারিত্বে রয়েছেন। একই সাথে তার চাচা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল তার অবস্থান থেকে দখল দারিত্বে প্রায় ব্যস্ত হয়েছেন আলাদা গ্রুপ।
অন্যদিকে রয়েছেন বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ লিটন এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বন্দর উপজেলা বিএনপির রাজনীতি। কিন্তু সেখানেও তাদের একক নিয়ন্ত্রণ নেই। বন্দর উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে তাদের বিরুদ্ধে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহীন আহম্মেদ এর নেতৃত্বে একটি প্রতিপক্ষ দাঁড়িছে।
শাহীন আহম্মেদের সাথে রয়েছে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রস্তাবিত) তাওলাদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মহসিন মিয়া সহ একধিক ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদধারীরা। বিভিন্ন সময় তারা বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ লিটনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তাদেরকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বর্তমানে বন্দর উপজেলায় দুইটি গ্রুপই নিয়ন্ত্রণ করছেন। অন্যদিকে জাকির খান গ্রুপের কয়েকটি পক্ষ বন্দরে রয়েছে তারা জাকির খানের নির্দেশনায় সকল কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। এদিকে গত ৫ আগস্টের পর এই পরিবারে মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। সকল নেতাকর্মীদের মাঝে যাকে ঘিরে বর্তমানে বন্দর জুড়ে একের পর এক বিশৃঙ্খলা কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে কিছুদিন পূর্বে আশা-হান্নান গ্রুপের দ্বন্দ্বের সংঘর্ষে প্রান হারিয়েছে দুই গ্রুপের কুদ্দুস ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মেহেদী। যাকে ঘিরে বন্দর বর্তমানে রেড জোন। সর্বশেষ বন্দরের রাজনীতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গড়ায় সেটাই দেখার বিষয়।