নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী সাবেক এমপি ছিলেন নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকার সময় দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাছাড়া নানা ভাবে নামে বেনামে অর্থ কামিয়েছে শামীম ওসমান।

কিন্তু তার এত সম্পদ তিনি নির্বাচনী হলফ নামায় উল্লেখ্য না করে ফাকি দিয়েছে। এছাড়া তাদের সম্পত্তি বিক্রির জন্য নানা পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করে দুদক। ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ শাসনামলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিশাল অর্থ কামিয়ে এখন পলাতক। এমনকি ২০২৪ সনের জানুয়ারীর দ্বাদশ নির্বাচনে গডফাদার শামীম ওসমান হলফ নামায় তার সম্পত্তির যে হিসেব দিয়েছের সেখানেও তথ্য গোপন করেছে।

শামীম ওসমানের কাছে বিভিন্ন টেন্ডার থেকে কমিশন, ব্যাবসায়িক জোন থেকে টাকার ভাগ নেওয়ার বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট।
এদিকে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি গডফাদার শামীম ওসমানের ২৯ ব্যাংক একাউন্ট ক্রোকের আদেম দিয়েছে আদালত।

নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শামীম ওসমানের নামে রাজধানীর পূর্বাচলে একটি প্লট এবং উত্তরায় ৯ কাঠা জমি রয়েছে, যেগুলো ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তার নামে থাকা ২৯টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে তথ্য মতে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ শহরের শেখ রাসেল পার্কে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে শামীম ওসমানকে উদ্দেশ করে আইভী বলেছিলেন, যিনি নিজের মুখেই বলেছেন তোলারাম কলেজে টাকার জন্য ফরম পূরণ করতে পারেননি, আজ উনি কোটি কোটি টাকার মালিক। আবার অন্যের দিকে চোখ তোলেন।

শামীম ওসমানের ১৬-১৭টি কার্গো জাহাজ আছে জানিয়ে মেয়র আইভী প্রশ্ন তোলেন, ‘উনি কিভাবে রাতারাতি ওই শিপের মালিক হলেন, কিভাবে উনি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন?’ শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে আরো বলেছিলেন, তিনি (শামীম) যখন-তখন দেশ ছেড়ে চলে যান। শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন দুবাই ও মালয়েশিয়াতে।

জানা যায় ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের হলফনামায় শামীম ওসমানের সোনারগাঁয়ের বারদীতে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১২৩ শতাংশ কৃষিজমি, ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট এবং ১৬ শতাংশ জমির ওপর ৭৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দোতলা আবাসিক বাড়ি দেখান। কিন্তুউত্তরায় ৯ কাঠা জমি রয়েছে সেই তথ্য শামীম ওসমান গোপন রেকেছে। এছাড়া তার নামে ২৯ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে যা হলফ নামায় উল্লেখ্য করেন নাই।

অথচ শামীম ওসমান নানা ভাবে নামে বেনামে অবৈধ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের অবৈধ টাকার অন্যতম উৎস ছিল ফতুল্লা বিসিক এলাকায় পোশাক কারখানাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে টাকা নেয়া। বিশেষ করে ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আহমেদ, লালপুর এলাকার জুয়েল, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী, যাঁরা প্রত্যেকেই শামীম ওসমানপুত্র অয়ন ওসমানের অনুসারী মিলে বিসিক থেকে চাঁদা তুলতেন। শুধু বিসিক থেকেই শামীম ওসমানের স্ত্রী  লিপি ওসমান এবং অয়ন ওসমানের নামে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আসত। এছাড়া সকল সেক্টরে ছিলে শামীম ওসমানের আধিপত্য।