Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

শিশুর টিকাকার্ডের সংকটে স্থবির জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

শিশুর টিকাকার্ডের সংকটে  স্থবির জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম

শিশুর টিকাকার্ডের সংকটে স্থবির জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম

Swapno

টিকাকার্ড টিকাদান কর্মসূচীর একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। শিশু জন্মের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর (ইপিআই) টিকা দিতে হয়। জন্মনিবন্ধন সনদ না পাওয়া পর্যন্ত যেকোনো শিশুর দালিলিক প্রমাণ হলো সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকা কেন্দ্র থেকে পাওয়া এই টিকাকার্ড।


তবে বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে টিকাদানের সবধরনের সরঞ্জাম থাকলেও প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে শিশু টিকাকার্ডের সংকট। সিভিল সার্জন থেকে কার্ডের সরবরাহ বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হয়েছে এই সংকটের। দেখা যায়, কার্ড না থাকায় হাসপাতালগুলোতে ফটোকপি করা কাগজ দেওয়া হচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও সাদা কাগজে লিখে তথ্য দিচ্ছেন টিকাদানে যুক্ত ব্যক্তিরা। তবে শিশুদের জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে টিকাকার্ডের অনুপস্থিতি বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাই মূল কার্ড না থাকায় তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।


হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী কিশোরী ও মহিলাদের টিকাকার্ড থাকলেও ০ থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের (ইপিআই) টিকাকার্ডের সংকট রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০-৩৫ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হলেও তাদেরকে টিকাকার্ড দিতে পারছেন না। বাধ্য হয়েই ফটোকপি করা কার্ড দিতে হচ্ছে।


সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া ও খানপুর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় শিশুদের নিয়মিত টিকা কার্যক্রম চললেও হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে টিকা কার্ডের সংকট। টিকা কার্ড না পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাসপাতালে টিকা নিতে আসা বাচ্চাদের অভিভাবকেরা। দেখা যায়, টিকাকার্ড না থাকায় অনেকেই টিকা না নিয়েই চলে যাচ্ছেন।


সূএ জানায়, কার্ডগুলো প্রথমে সিভিল সার্জনে আসে সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশন তারপর আমরা পাই। আগষ্ট থেকে আমরা কোনো টিকাকার্ড পাচ্ছি না। টিকাকার্ড ছাড়া মানুষ টিকাই নিতে চাচ্ছে না। আমাদের এখানে আমরা ফটোকপি দেই কিন্তু খানপুর হাসপাতালে টিকার কোনো ফর্মালিটিই মানে না।সিরিজের কাগজের পেছনে ডোজের তালিকা লিখে দেয় তারা। সেখানে কার্ডের কোনো প্রমানই নাই। সাব-সেন্টার গুলোতে সময় মতো টিকাদান কর্মী বসে না। টিকার পারপাসে টাকার নেওয়ার ও হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়।


হাসপাতালে শিশুকে টিকা দিতে আসা পারভিন বেগম বলেন, আজকে বাচ্চাকে প্রথম টিকা দেওয়ার জন্য এনেছি। কিন্তু এসে শুনি টিকা কার্ড নাকি শেষ। আমাকে একটা ফটোকপি দিছে। তবে কবে নাগাদ কার্ড দিবে এটা জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, তারা এই সম্পর্কে সঠিক কিছু জানেনা।


সেখানে আরেকজন অভিভাবক বলেন, বাচ্চার জন্মনিবন্ধন করতে গেছি সেখানে তারা টিকাকার্ড চাইছে। কিন্তু আমার কাছে ফটোকপি করা কার্ড। আামাকে মূল কার্ড দেওয়া হয়নি। মূলকার্ড ছাড়া নাকি জন্ম নিবন্ধন করা যায় না। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
সাবিকুন নামে একজন বলেন, আমার বাচ্চার বয়স মাএ ৫ মাস।


বাচ্চার টিকার কোনো কার্ড দেইনি। একটা ফটোকপি দিয়েছে আপাতত সেটি দিয়েই টিকা দিচ্ছি। কার্ড নাকি অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখনো নতুন করে কোনো কার্ড আসেনি। টিকা নিতে আসা সাইফুল নামে একজন শিশুর অবিভাবক জানান, আমার মেয়ের প্রায় সব টিকাই দেওয়া হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে শুনি মূল কার্ড লাগবে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফটোকপি করা কার্ড দিয়েছে। জন্ম নিবন্ধন অফিসে ফটোকপি মানছে না।


খানপুর হাসপাতালে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ( ইপিআই) প্রোগামের সদস্য মনজুর হোসেন বলেন, বছর খানেক ধরে টিকা কার্ডের সাপ্লাই নাই। সারা বাংলাদেশেই এই সমস্যা। ১০ মাসের টিকা যারা দিতে আসে তাদের ফটোকপি দেওয়া হয় আর যাদের প্রয়োজন তারা অনলাইন থেকে তুলে নিবেন।


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান জানান, মেইন জায়গা থেকেই সাপ্লাই নেই যেখান থেকে টিকাকার্ডটি আসে। বৈদেশিক বিভিন্ন সমস্যার কারনে টিকা কার্ড আসছে না। তবে কবে আসবে এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন