
টিটু’র দুই রানায় বালু ভরাটে নয়-ছয়
ফতুল্লা স্টেডিয়ামে বালু ভরাটের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিসিবির সাবেক পরিচালন তানভীর আহমেদ টিটুর দুই পার্টনার এস.এম রানা ও শেখ মো.আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (রানা) বিরুদ্ধে। বর্তমানে দুই রানাই দেশের মধ্যে পলাতন রয়েছেন। গত ২০২৩ সালে স্টেডিয়ামটিতে বালু ভরাটের বরাদ্দ আসে। কিন্তু সেই বালু ভরাটের কাজটি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারী নেন তানভীর আহমেদ টিটুর আস্থাভাজন ক্রিকেটার শেখ মো.আব্দুল্লা আল মাসুদ (রানা)।
পরে সেই বালু ভরাটের কাজটি দুই রানায় পরিচালনা করেন।কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পালিয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যান বালু ভরাটের কাজটি। পরবর্তীতে সেই বালু ভরাটের কাজটি ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা রিয়াজ চৌধুরীকে দেওয়া হয়।
এদিয়ে ফতুল্লা স্টেডিয়ামে নাম প্রকাশ্যে নিচ্ছুক কয়েকজন জানান, অনেক দিন ধরে স্টেডিয়ামটি পানিতে ডুবে থাকতো। পরে ২০২৩ সালে স্টেডিয়ামটির সংস্কারের উদ্যেগ নেন বিসিবি। সেখানে প্রথমে স্টেডিয়ামে বালু ভরাটের টেন্ডার হয়। কিন্তু তানভীর আহমেদ টিটু সেই ট্রেন্ডারে অন্য কোন ঠিকাদারকে ট্রেন্ডার ড্রপ করতে দেননি। তারই কাছের লোক দুই রানাকে সেই কাজটি দেন।
আলিফ এন্টারপ্রাইজ নামে একজন ক্রিকেটার শেখ মো.আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (রানা) সেই কাজের ঠিকাদারী নেন। পরে কিছু বালু ভরাট করেই তারা সকলে পালিয়ে যায়। যেহেতু তারা আওয়ামীলীগের দোসর তাই রানা পালিয়ে যায়। এদিকে এস.এম রানা কয়েকদিন পালিয়ে থাকার পরে বিমান বন্দর থেকে পুলিশের হাতে আটক হন।
কিন্তু ক্রিকেটার শেখ মো.আব্দুল্লাগ আল মাসুদ (রানা) এখনও ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার পরে তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকদের ম্যানেজ করে আবারও নিজের ঠিকাদারী বহাল রাখার চেষ্টা করছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত পনেরো বছরে এই স্টেডিয়ামের জলাবদ্ধাতা নিরসনের জন্য কোটি টাকার বরাদ্দের বেশিরভাগ অংশ শামীম ওসমান, তার শ্যালক সাবেক বিসিবি পরিচালক তানভীর আহাম্মেদ টিটু সহ তার নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট লুটপাট করে খেয়েছে। স্টেডিয়ামটি শামীম ওসমান ও তার শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর ছিলো টাকার গাছ।
সর্বশেষ গত ২০২৩ সালে স্টেডিয়ামটিতে বালু ভরাটের বরাদ্দ আসে। কিন্তু সেই বালু ভরাটের কাজটি ৬-৭ জন ঠিকাদার নেওয়ার জন্য সার্কুলার জমা দিলেও সেই কাজটি অল্প টাকার পান তানভীর আহমেদ টিটুর আস্থাভাজন ক্রিকেটার শেখ মো.আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (রানা)। শেখ মো.আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রানা নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার কাশিপুর বড় মসজিদের শেখ নাজিম উদ্দিনের ছেলে। বিগত সরকার আমলে ক্রিকেট বোর্ডে তার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো। তানভীর আহমেদ টিটু ও এস.এম রানার সাথে ছিলো তার অন্য রকম সর্ম্পক।
তাদের আর্শিবাদেই আলিফ এন্টারপ্রাইজ এর নামে বালু ভরাটের কাজটি তিনি পান। কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকার পালিয়ে গেলে সেই স্টেডিয়ামের কাজও বন্ধ হয়ে পরে। পরে ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে নিয়ে সেই বালু ভরাটের কাজটি করেন ঠিকাদার।
কিন্তু গত ১৫ মে রিয়াদ চৌধুরী গ্রেফতার হলে ১৬ মে আবার তার বিরুদ্ধে সেই বালু ভরাটের ঠিকাদার একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন।
এবিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনেকে জানান, ফতুল্লা স্টেডিয়ামটির বালু ভরাটের যে কাজ পেয়েছে সবাই আওয়ামীলীগের দোসর। তানভীর আহমেদ টিটু ছত্রছায়া তার আস্থাভাজনরা কাজটি পায়। পরে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে সেই কাজ বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দেয়। তারা সকলেই এই ফতুল্লা স্টেডিয়ামের কাজ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করে।
এ বিষয়ে ঠিকাদার শেখ মো.আব্দুল্লা আল মাসুদ (রানা) যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি স্টেডিয়ামের বালু ভরাটের কাজটি আলিফ এন্টার প্রাইজ এর নামে পায়। আলিফ এন্টার প্রাইজ নামে আমার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেই সময় কাজটি পাওয়ার জন্য ৫-৭ জন টেন্ডার সার্কুলার জমা দেয়। কিন্তু আমি মাস্টার্স ক্রিকেটার বলে বোর্ডে আমার পরিচিতি রয়েছে। তাই অল্প রেটে তারা আমাকে কাজটি দিয়েছে। আমার ৬০ লক্ষ ঘন ফুট বালু ভরাট করার কথা ছিলো। আমি ২৬ লক্ষ ঘনফুট থেকে একটু কম ভরাট করেছি।