
নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে ব্যাপক অনিয়ম ‘স্যার বলেছে লোক আনতে’
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস অনিয়ম চলছেই। দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ফের কার্য্যক্রম শুরু হলেও পাল্টায়নি সেবার ধরণ। এখনো ভোগান্তি পোহাচ্ছে পাসপোর্ট সেবা গ্রহিতারা। এমনি চিত্র ফুটে উঠেছে সেখানে।
এমনকি হাজার হাজার মানুষ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দিন পার করে দিলেও সেখানে কিছু অসাধু ব্যক্তির যোগসাজশে কেউ কেউ আগেভাগেই কাজ সম্পাদন করে চলে যাচ্ছে। এসময় গণমাধ্যমকর্মীর চোখে ধরা পড়ে খাবার সরবরাহকারী কাকলী নামে এক নারীকে একাধিকবার গ্রাহকদের বিনা বাধায় কক্ষে নিয়ে যেতে।
যদিও দাপ্তরিক কোনো কাজের দায়িত্বে উনাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। তবে তিনি কেনইবা এমন করছেন জানতে চাইলে খাবার সরবরাহকারী পরিচয়দানকারী কাকলী জানান, স্যার বলেছে লোক আনতে! এ কথার সত্যতা জানতে তার সেই স্যারের কক্ষে প্রবেশ করতেই ভোল পাল্টে যায়। এসময় সিরিয়ালে থাকা হাজারো গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়ে উঠে।
তারপর সেই স্যারের নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি তার নাম পরিচয় বলতে অপারগতা জানায়। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে এমন গোপনীয়তা অবশ্যই দুর্বলতার প্রকাশ পায়। এরপর বহুবার জিজ্ঞাসা করার পর তিনি অফিস সহকারী হিসেবে আছেন এটুকু জানান।
নাম বলা যাবে না! কিন্তু খাবার সরবরাহকারী নারী এ কাজে কেন লিপ্ত জানতে চাইলে অফিস সহকারী বলেন, আমার জানা নাই। আমার বিষয় পরে আগে উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে স্যার! ওইসময় শুরু থেকে লোক নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করা ভিডিও ধারণ করা অবস্থায় জানানো হলে তিনি ওই নারীকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সিরিয়াল ছাড়া লোক নিয়া আসছেন, তিনিও বলেন, আপনি না লোক আনতে বললেন। স্যার আমি সিরিয়াল মেনটেইন করি নাই, স্যার আমি সিরিয়াল মেনটেইন করি নাই!
এদিকে, এ বিষয়ে জানার জন্য নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক জামাল হোসেনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলেন নি। এছাড়াও তার মুঠোফোনে ব্যবহৃত ০১৭৩৩৩...... একাধিকবার কল দেয়া হলে সংযোগ স্থাপন হয়নি।
উল্লেখ্য, ৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কার্য্যক্রম শুরু হলে পরিদর্শনে করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তিনি তখন সাফ জানিয়ে দেন, সেবা গ্রহিতারা যেন ভোগান্তিতে না পড়ে। এছাড়া কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সকল গ্রাহক যেন নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট পেয়ে যায়। অফিসটি হবে পুরোপুরি দালালমুক্ত।
দ্রুত র্যাব-পুলিশের সমন্বিত অভিযান, শেল্টারদাতাদের নাম প্রকাশ ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী এখন জেগে উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে প্রশাসন জাগবে কবে?