Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

সুবিধা নিতে দিপু-মনিরের ছায়ার সংঘর্ষ

Icon

লিমন দেওয়ান

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

সুবিধা নিতে দিপু-মনিরের ছায়ার সংঘর্ষ

সুবিধা নিতে দিপু-মনিরের ছায়ার সংঘর্ষ

Swapno



নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আধিপত্য ও বিসমিল্লাহ আড়ৎ দখলকে কেন্দ্র করে গাজীর পিএস উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমানের পক্ষে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু গ্রুপ ও অনলাইন ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের পক্ষে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজীমনিরুজ্জামান মনির গ্রুপের ব্যাপক তাণ্ডবে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিলো রূপগঞ্জ।


প্রকাশ্যে গোলাগুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড, লুটপাটের ঘটনায় দুই গ্রুপের আহত ৩০। তা ছাড়া রণক্ষেত্রের পিছনে রূপগঞ্জ বিএনপির দুই গ্রুপ থেকে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামসহ দুই গ্রুপের আরো নেতাকর্মীরা সবই পানির মতো প্রকাশ্যে এমনকি এ ঘটনায় লোকাল অনলাইন ও পত্রিকা, জাতীয় অনলাইন ও পত্রিকাসহ ভারতীয় কয়েকটি অনলাইন মিডিয়া বিএনপির যারা জড়িত তাদের নাম উল্লেখ হয়ে প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ও ঘটনার ২ দিনে হয়নি মামলা এমনকি বিএনপির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে ব্যবস্থা যকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইছে রূপগঞ্জ জুড়ে। এদিকে শোনা যাচ্ছে বিএনপির দুই গ্রুপই কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে পট পরিবর্তনের পর নিজেদের সেই পুরনো দ্বন্দ্ব আবারো প্রকাশ্যে নিয়ে আসলেন।



গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ডে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে টানা তিনঘন্টা থেমে থেমে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।  পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ওই ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত এগারোটা পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।



স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ক্যাসিনো সম্রাট সেলিমের পক্ষে মোটা অংকের সুবিধা নিতে সংঘের্ষ জড়ান কাজী মনিরুজ্জামানের নির্দেশনায় ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদসহ প্রকাশ্যে না থেকে ও যারা দূর থেকে কাজী মনিরের নির্দেশনা অনুযায়ী লোক পাঠিয়ে পিছনে কলকাঠি নেরেছেন জেলা স্বেচ্ছাদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, যুবদল নেতা আবু মাসুম, ছাত্রদল নেতা সুলতান মাহমুদ, মোশারফ হোসেন। একই সাথে গাজীর পিএস উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমানের পক্ষে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর নির্দেশনায় প্রকাশ্যে সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের শুটার রাসেল, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাহিদ ভূঁইয়ার লোকজন, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওমর, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রিন্স, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রকিসহ দাউদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী, ভূলতা ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মী অনেকেই। এ ঘটনায় কোন পক্ষই মামলা না করলে ও গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে দিপু ভূঁইয়াসহ তার সাথে আতাঁত চলা আওয়ামী লীগের গাজীর লোকদের বিরুদ্ধে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন।



স্থানীয় সূত্রে ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংগলগ্ন সাওঘাট এলাকায় ১৬ বিঘা জমিতে থাকা বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের কাছ থেকে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাতিজা আইয়ুব খান ও আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমান ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ৎ গড়ে তোলেন।


বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়ৎটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান। অপরদিকে, সেলিম প্রধানের দাবি, ভূয়া চুক্তিনামা তৈরী করে জোর পূর্বক জমি দখল করে আড়ৎ গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। তাদের দুই পক্ষের কাছে একটির কাছে জায়গার মালিকানাধীন কাগজ আর আরেক গ্রুপের কাছে চুক্তিপত্রের কাগজ থাকায়। দুই পক্ষের কাছেই রূপগঞ্জ বিএনপির দ্ইু গ্রুপ অসুবিধা নিতে এদের পক্ষ নেয় ও তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়ায়।


গত মঙ্গলবার দুপুরে আড়ৎ এর পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়। এ সময় আড়ৎদার আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবর দিপু ভূঁইয়াকে অবগত করলে আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মাসুদুজ্জামানকে ভয় দেখাতে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী হিসেবে নিয়ে আসে।


এ সময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে মাসুদের লোকজন রফিকের লোকজনদের উপরে ইটপাটকেল ছুঁড়লে সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।


এ সময় কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করেন। সংঘর্ষে ঘটনায় আহতদের মধ্যে ছাত্রদল কর্মী রাফি আহমেদ ও রাজু ভূঁইয়ার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার রয়েছে। একই সাথে স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী মো. ইমন, মো. রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন, মনির হোসেন, ইয়ার হোসেন, তরিকুল ইসলাম, বিনয় বাবু, নুরুল ইসলাম ও মো. রাজু স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। সংঘর্ষে সেলিম প্রধানের ব্যবহৃত একটি জিপ গাড়ি জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়।


এ ছাড়া ১০ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসময় গাউছিয়া মার্কেট তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁটবাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছেঁ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।


কিন্তু বর্তমানে দুই নেতাই বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এখনো কোন মামলা হয়নি বলে শোনা যাচ্ছে। আর বর্তমান রূপগঞ্জের এই রণক্ষেত্রকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অবনতিকে ধুষঁছেন সাধারণ জনগণ।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, আজ রাত ১১ টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষর বিষয়ে কোন পক্ষই অভিযোগ বা মামলা করেনি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন