ধোঁয়াশা কাটছে শীঘ্রই
সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজই কেন্দ্রীয় ঘোষণার মধ্য দিয়ে ধোঁয়াশামুক্ত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসন। ঘোষিত হতে যাচ্ছে কে হচ্ছেন চূড়ান্ত ধানের শীষের কান্ডারী। এক দিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দুইজন। যারা দুইজনই মাঠে নির্বাচনী প্রচারণা করে আসছেন। যাকে ঘিরে কে আসল প্রার্থী তা নিয়ে বিভান্ত্রে কর্মী-সমর্থকরা।
একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়া হচ্ছে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী। যাকে ঘিরে নিয়মিত গুজবসহ নানা আলোচনা-সমালোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে সকল বাধা পেরিয়ে আজকে ঘোষণা হতে পারে দুইটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন। এর আগে ২২ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা শেষে নারায়ণগঞ্জ-৫ সহ বাকি ২৮টি আসনে জোটের মিত্র প্রার্থী নাম ঘোষণা হওয়ার গুঞ্জন থাকলে ও আগামী ২৩ ডিসেম্বর এই ঘোষণা আসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সূত্র। তা ছাড়া ইতিমধ্যে তালিকা প্রায় চূড়ান্ত শুধু ঘোষণার অপেক্ষায়।
এদিকে গুঞ্জন রয়েছে আজেই সকল কিছুর সমাধান আসতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে প্রাথমিক ঘোষিত মনোনয়ন নিয়ে মাঠে মাসুদুজ্জামান একই সাথে দলীয় মনোনয়নপত্রের জন্য জামানতের রশিদ সংগ্রহ করেন এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। তা ছাড়া তিনি দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে মনোনীত করেছেন।
এদিকে বর্তমানে দুইজনই ধানের শীষের আসর প্রার্থী হিসেবে দাবি করছেন। তা ছাড়া এই আসনে বঞ্চিত এড. আবুল কালাম ও মহানগর বিএনপি নেতা আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল ছাড়েনি মাঠ এরা চূড়ান্ত পর্যন্ত মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে মাঠে আসছেন জমিয়ত নেতা মনির হোসাইন কাসেমী এমন আলোচনা রয়েছে।
এরই মাঝে এই আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ¦ শাহ আলম, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। কে হাসবে শেষ হাসি, কাকে দেওয়া হবে মনোনয়ন সব কিছুর অবসান ঘটতে যাচ্ছে আজই।
সূত্র জানিয়েছেন, গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় বিএনপি সারা দেশে ২৩৭ জনকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেয়। ওই তালিকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া ম মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ছিল। তবে তাঁর নাম ঘোষণার পরপরই চার মনোনয়নপ্রত্যাশী ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর বিপক্ষে মাঠে নামেন। গত (১৫ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম এবং প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল।
দফায় দফায় মাঠে পরিবর্তনের দাবীতে আন্দোলনরত অবস্থায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু মাঠ ছেড়ে মাসুদুজ্জামানকে সমর্থন দিলে শুরু হয় সমর্থন। কিন্তু মাঠে সক্রিয় ছিলেন সাখাওয়াত-কালাম-বাবুল। এরা হাল না ছেড়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত নিতে বসে থাকলে ও গত ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মাসুদুজ্জামান মাসুদ নিরাপত্তা, পারিবারিক চাপসহ পারিপার্শ্বিক কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এমন ঘোষণা দেওয়ায় দলের নেতারা তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট হন। এ সময় তাঁর অনুগত কর্মী ও সমর্থকেরা প্রেস ক্লাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তাঁকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ জানান। দুদিন পর (১৮ ডিসেম্বর) মাসুদুজ্জামান আবার নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন।
এ দিকে সাখাওয়াত হোসেন খান জানিয়েছেন, গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দলীয় কার্যালয়ে ডেকে আসনটিতে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য বলা হয়েছে বলে জানান এ বিএনপি নেতা। একই সাথে তিনি জানিয়েছেন গতকাল (২০ ডিসেম্বর) “আমাকে দল প্রার্থী হিসেবে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। আমিসহ এ প্রশিক্ষণে ১০০ জন প্রার্থী ছিলেন। এর আগে আরও ২০০ জন প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে”। যাকে ঘিরে বর্তমানে সাখাওয়াতকে বরণ করে নিচ্ছেন বিএনপির কর্মী সমর্থকরা।
এই খবরে কিছুদিন পূর্বে যারা মাসুদুজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে তার পাশে গিয়েছিলেন এদের মধ্যে অনেকেই ফেসবুক স্ট্যাটাসসহ নানাভাবে সাখাওয়াতের সাথে এসে একত্মতা প্রকাশ করছেন। সকলেই বলছেন ‘আলহাদুলিল্লাহ’ দল দেরিতে হলে ও ত্যাগীকে মূল্যায়িত করেছেন।
তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে ধানের শীষের প্রতীকের প্রার্থীর খোঁজে বিএনপি ও সাধারণ জনগণ। ১৯ বছর যাবৎ এই আসনে বিএনপির কোন এমপি নির্বাচিত হয়নি। ২০০৮ সালে বিএনপি প্রার্থী শিল্পপতি শাহ আলমকে পরাজিত করে আওয়ামীলীগের প্রার্থী নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ।
প্রার্থীদের দখলে ছিলো এই ফতুল্লা আসনটি। এবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন রয়েছেন তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। এদের মধ্যে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, শিল্পপতি শাহ আলম ও জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী নাম শোনা গেছে। বিএনপি ধানের শীষ প্রতীকের অপেক্ষায় দিন রাত কাটছে মনোনয়ন প্রত্যাশিত প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি জোটের প্রার্থীকে দেয়া হবে ২০১৮ সালের মত এমন নিশ্চিত করেছে বিএনপি সাথে মিত্র দলের নেতারা।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শিল্পপতি শাহ আলম। অন্যদিকে বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১৯৯৬ সালের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী। এখনো মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেনি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর ইচ্ছুক মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।
মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিএনপির সাথে জোট দলের প্রার্থী নাম ঘোষণা করা হতে পারে। এরপরই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়া হবে । ফতুল্লার আসনে বিএনপি সহ জোটের নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে আমাকে সমর্থন দিয়ে মাঠ গুছিয়েছেন। এদিকে বর্তমানে মনির হোসাইন কাসেমীর নাম উঠছে ফতুল্লা জুড়ে। কিন্তু তিনি তার মার্কা দিয়ে নির্বাচন করলে তার বাজেয়াপ্ত হতে পারে বলে ধারনা করছেন অনেকেই। যাকে ঘিরে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন সংগ্রহ করা শিল্পপতি শাহ আলম ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে গত ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী। একই দিনে আলহাজ¦ মুহাম্মদ শাহ আলম মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মাসুদুজ্জামান, সাখাওয়াত হোসেন খান, আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল ও আবুল কালামের ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে। নির্বাচন সরে দাড়ানো ঘোষিত মাসুদুজ্জামান মাসুদ বহাল থাকছেন,
নাকি সবুজ সংকেত পাওয়া সাখাওয়াত হোসেন খান পাচ্ছে মনোনয়ন এমন 'বার্তা ঘুরপাক খাচ্ছেন। একইভাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ও আন্দোলন সংগ্রাম করে ধানের শীষ না পেয়ে সুবিধাভোগী মনির হোসাইন কাসেমী জোটে ধানের শীষের মার্কা নিয়ে আসবেন তা নিয়ে চলছে সমালোচনা। এদিকে বর্তমানে আলোচান ঘুরপাক খাচেছ আজকেই কি চূড়ান্ত সব। তা ছাড়া আগামী ১২ ফেব্রয়ারী নির্বাচন যাকে ঘিরে হাতে সময় মাত্র অল্প কিছু যাকে ঘিরে দ্রুত মনোনয়নের সদস্য নিরসনে আসলে ধানের শীষের পক্ষে মনোনীত প্রার্থীরা টেনশনমুক্ত মাথায় প্রচার-প্রচারণায় থাকতে পারতেন এমনকি তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেন।


