মনোনয়ন প্রশ্নে বিএনপির সাংগঠনিক স্থবিরতা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
মনোনয়ন প্রশ্নে বিএনপির সাংগঠনিক স্থবিরতা
বিএনপির মনোনীত ও বঞ্চিতদের দ্বন্দ্বে কোনঠাসা হয়ে পরেছেন বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। চূড়ান্ত নাকি প্রাথমিক সেই বিবেচনায় কে যাবে কোন নেতার পিছনে তা নিয়ে নেতাদের মধ্যেই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এদিকে সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে ও মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই নেতা পরিবর্তন করেছেন একাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা। যাকে ঘিরে বিএনপি,যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষকদলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিভক্তি যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা।
এদিকে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিসহ বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়াসহ সেই বিভক্তিতে দেখা মিলছে। বর্তমানে জেলা বিএনপি মনোনয়নকে ঘিরে বিভক্তিতে একই সাথে মহানগর বিএনপি যাকে ঘিরে বিএনপির সংশ্লিষ্ট অঙ্গসংগঠনগুলোতে ও বিভক্তি ও স্থবিরতা রয়েছে। যাকে ঘিরে আগামী এয়োদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে ও সাংগঠনিকভাবে কোন কার্যকালাপ তৈরিতে নেই বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তা ছাড়া বর্তমানে জেলা ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক/সদস্য সচিবরা মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বর্তমানে মনোনীতদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে রয়েছে। যাকে ঘিরে মনোনীত প্রার্থীদের পাশে থেকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে নারাজ সেই নেতারা। এদিকে মনোনয়নের পরপরই ছিন্নভিন্ন হয়ে পরেছে বিএনপির রাজনীতি।
সূত্র বলছে, গত দুই দফায় ২৭৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বিএনপি। যাকে ঘিরে মনোনীত প্রার্থীরা উচ্ছ্বাসিত ও বঞ্চিতরা উত্তেজিত। একই সাথে নির্বাচন কমিশনের দেয়া সূত্র অনুযায়ী আগামী ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা হতে যাচ্ছে এয়োদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের তফসিল। যাকে ঘিরে বর্তমানে মনোনয়ন চূড়ান্ত নাকি প্রাথমিক সেই হিসেব-নিকেশ মিলাচ্ছেন বিএনপির মনোনীত ও বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এদিকে গত (৩ নভেম্বর) ২৩৭টি আসনে মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সারদেশে প্রায় ৫০টিসহ নারায়ণগঞ্জের ৩ টি আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ, সংবাদ সম্মেলনসহ মশাল মিছিল চলছে।
ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়নকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে গত (৩ নভেম্বর) ঘোষিত তালিকায় নতুন, ‘হাইব্রিড’ ও আন্দোলনে নিস্কিয় ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ায় বিভিন্ন আসনে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা বাদ পড়েছেন। ফলে একাধিক আসনে ভাঙচুর, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ মশাল মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। তা ছাড়া মনোনয়ন বঞ্চিত অনেকের বক্তব্যে একটা বিষয় উঠে এসেছে মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে অনেকের এবারই শেষ নির্বাচন হিসেবে স্বতন্ত্র করার আভাস দিচ্ছেন।
একই সাথে অনেকে এখন হাল না ছেড়ে চূড়ান্তের শেষ দিন পর্যন্ত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। এদিকে গত বৃহস্পতিবার নতুন করে আরো ৩৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যাকে ঘিরে ফের সেই সকল আসনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় বর্তমানে প্রকাশ্যে সেই আসনের মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে বিরোধীতা করে যাচ্ছেন।
একই সাথে জেলা বিএনপির ১নং সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সেই আসনে প্রত্যাশী যাকে ঘিরে বর্তমানে বিগত দিনের দ্বন্দ্ব ভূলে বর্তমানে গিয়াস-মামুন মাহমুদ একত্রে মান্নানের বিরোধীতা ও কঠোর সমালোচনা করছেন। এদিকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বর্তমানে মান্নানের সাথে একত্মতা প্রকাশ করে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। যাকে ঘিরে বর্তমানে জেলা বিএনপিতে রয়েছে বিভক্তি। একইভাবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু প্রথমত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে আন্দোলন করলে ও পরবর্তীতে সুবিধা ও স্বার্থে মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে একত্মতা প্রকাশ করে ফেলেন এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
যাকে ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা ছিলেন তিনি। এদিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বর্তমানে পূর্বের মতোই ঐক্যজোটে একত্রিতভাবে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানের বিরোধীতা করে যাচ্ছেন। একই সাথে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের একাংশ মাসুদুজ্জামান ও একাংশ এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে রয়েছেন। একইভাবে বিএনপির বিভিন্ন থানা ও উপজেলার নেতারা বিভক্তিতে রয়েছে। যাকে ঘিরে বিএনপির ঘোষিত যে ঐক্য তা গঠন হচ্ছে না। যাকে ঘিরে আগামীর নির্বাচনে বিএনপির সফলতা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন বলছে তৃণমূল।


