Logo
Logo
×

রাজনীতি

এবারও স্বপ্নভঙ্গ না.গঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

এবারও স্বপ্নভঙ্গ না.গঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

এবারও স্বপ্নভঙ্গ না.গঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

Swapno

আসন্ন   ত্রয়োদশ  জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রথম ধাপে  বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন সারাদেশে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেন, বাদ পড়া আসনগুলোর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটিও ছিল। এ আসনে এখনো চূড়ান্ত কাউকে প্রার্থী দেয়নি দলটি। দলের মহাসচিব জানিয়েছেন, বাদ রাখা আসনগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


তারই  ধারাবাহিকতায় আসন্ন  জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম  আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। আর এই ৩৬ টি আসন ঘোষণার মধ্য দিয়ে  বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা স্থান পেয়েছে। তবে বাকি যে আসনগুলো রয়েছে তার সবগুলো আসনই  জোটের প্রার্থীদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে যে সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীরা  রয়েছে  স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি।


পাঁচটি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলায় এবার চারটিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। শিঞ্চাঞ্চল ফতুল্লা ও সদর থানার এলাকার দু’টি ইউনিয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত নারায়ণগঞ্জ-৪। আসনটিতে এখনো চূড়ান্ত কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি দলটি। ফলে, আসনটিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা হবে নাকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো জোটের কোনো দলকে ছেড়ে দেওয়া হবে, এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর আলোচনা।


আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে আলোচনায় ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির  যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, সদস্য সচিব আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। এদিকে, গিয়াসউদ্দিন এ আসনে বিএনপির মনোনয়নে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হয়েছিলেন।


প্রথম ধাপে নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনের বিএনপির মনে নিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়, যাদের মধ্যে  মাসুদুজ্জামান মাসুদ (নারায়ণগঞ্জ-৫), আজহারুল ইসলাম মান্নান (নারায়ণগঞ্জ-৩), নজরুল ইসলাম আজাদ (নারায়ণগঞ্জ-২) এবং মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া (নারায়ণগঞ্জ-১) ধানের শীষের প্রার্থী হবেন।


তবে, দলীয় সূত্র বলছে, কৌশলগত কারণে বিএনপি এমন সিদ্ধান্ত নিলেও ঢাকার পাশে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে কোনো প্রার্থী না দেওয়ায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পাশাপাশি তৃণমূলেও ক্ষোভ রয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই কেন্দ্রে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন, হাইকমাণ্ড পর্যন্ত তদবির চলছে। গত কয়েকমাস ধরে সম্ভাব্য এ প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয়ও ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছিলেন তারা সরব।


গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অবস্থান বেশ শক্ত। নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমন ধারণাও রয়েছে দলীয় মনোনয়নের মধ্য দিয়েই নির্বাচনে বিজয়ের পথ অনেকটা সুগম হয়। কিন্তু দলীয় একাধিক সূত্র বলছে, আসনটি এবারও জোটভুক্ত কোনো দলকে ছেড়ে দেওয়া হবে। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নির্বাচনকালীন জোট করে।


ওই জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসাইন কাসেমী সেবার ধানের শীষ প্রতীকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচনে অংশ নেন। বহুল বিতর্কিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এবারও জমিয়তের এই নেতা আসনটিতে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।  মাস খানেক আগে নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বিএনপির আলোচিত নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে এক অনুষ্ঠানে এনে বিএনপির অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন।


কিন্তু ‘আজমতে সাহাবা’ নামে ওই সমাবেশে বিএনপির বাইরে নিজের দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি একেবারে নগন্য থাকায় তা সমালোচনারও জন্ম দেয়। ফলে, বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাসেমীকে জোটগতভাবে আসনটিতে ছাড় দিলে জিতে আসার সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তবে, বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জোটের ঘোষিত প্রার্থীর মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতার উপরও নির্ভর করছে অনেক হিসেব-নিকেশ। কেননা, কেবল কৌশলগত কারণে আসনটি বিএনপি ছেড়ে দিলেও সেখানে স্বতন্ত্র হিসেবে দলেরই একাধিক প্রার্থী দাঁড়াতে পারেন, এমন গুঞ্জনও রয়েছে। জোটগতভাবে বিএনপি ছাড় দিলেও ধানের শীষের বিপরীতে দাঁড়ানোর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না বিএনপির বিদ্রোহীদের।


তবে, সবকিছু ছাপিয়ে এ মুহূর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন চলছে, বিএনপি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন কার জন্য ছাড় দেবে, এবং জোটের কাঠামো কীভাবে স্থির হবে। একইসাথে জোটকে ছাড় দিলে বিএনপি তার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরও কীভাবে নিভৃত রাখবেন তাও বড় প্রশ্ন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন