Logo
Logo
×

রাজনীতি

না.গঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন ঘিরে উত্তেজনা

মনোনয়ন দ্বন্দ্বের শেষ কবে

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

মনোনয়ন দ্বন্দ্বের শেষ কবে

মনোনয়ন দ্বন্দ্বের শেষ কবে

Swapno

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত ও মনোনয়ন বঞ্চিতদের ব্যাপক প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কে কত লোক জমায়েত করে শোডাউন দিবে, কে কত লোক নিয়ে সমাবেশ করে চমক দেখাবে নিয়মিত এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির মাধ্যমে যে যার যার অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন। একই সাথে মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান নানান কৌশলে মনোনয়ন বঞ্চিতদের তার পক্ষে নিতে চাইছে যেখানে সম্মতি জানিয়ে অনেকেই তার সঙ্গে একত্মতা করছেন।


কিন্তু মনোনয়ন বঞ্চিত ৩ হেভিওয়েট নেতা সাড়া দিচ্ছেন না মাসুদুজ্জামানের ডাকে। এদিকে গতকাল বিএনপির মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, যে মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে সেখান থেকে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভবনা অনেকটাই কম। ইতিমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সেই বার্তা নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার দিচ্ছেন মনোনীত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ইতিমধ্যে এখনো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ৩ জনের একটি ঐক্যজোট এখনো সক্রিয় রয়েছে যাকে ঘিরে প্রশ উঠছে মনোনীত ও বঞ্চিতদের যুদ্ধের শেষ কোথায়?


এদিকে মনোনয়ন বঞ্চিত ৩ নেতা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সাংসদ সদস্য এড. আবুল কালাম, মহানগর বিএনপি নেতা আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল। বর্তমানে এরা (সদর-বন্দরে) পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, পাল্টা পাল্টি শোডাউন, পাল্টাপাল্টি গণসংযোগ করেছেন। একই সাথে বর্তমানে পাল্টাপাল্টিভাবেই বিএনপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আশুরোগ মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় ওয়ার্ড-ইউনিয়নে দোয়া ও মাহফিল করা করছেন নেতারা। যাকে ঘিরে সকল ক্ষেত্রেই মনোনীত ও মনোনয়ন বঞ্চিতদের একই রকম লোকসমাগম লক্ষ্য করা যায়।


এমনভাবেই বর্তমানে ব্যাপক প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে গত শুক্রবার বন্দরে মনোনয়ন বঞ্চিতদের জনসভায় নেতারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির এমপি নির্বাচিত করতে হলে ত্যাগী একজনকে মনোনয়ন দিতে হবে। হঠাৎ করে জেগে উঠা কোন শিল্পপতির হাতে মনোনয়ন তুলে দিলে আসনটি হাত ছাড়া করতে হবে। বিএনপির তৃণমূলের নেতারা এই প্রার্থীকে মেনে নিতে পারছে না। অচিরেই বিএনপি এ বিষয়ে জাগ্রত না হলে আগামীতে মশাল মিছিল করা হবে। কিন্তু বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় বর্তমানে মনোয়ন বঞ্চিতরা নিরবতা পালন করেন।তা না হলে আজকে শুক্রবার শহরের মিশনপাড়ায় বিশাল সমাবেশ করার পরিকল্পনা ছিলো নেতাদের।



এদিকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের বিদায়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। দীর্ঘ দেড় যুগ পর রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা থাকা বিএনপি এখন যেন নতুন করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে। সরকারের ঘোষণার পর যে “যৌক্তিক সময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে”, সেই প্রতিশ্রুতিকে ঘিরেই দলটি এখন সারাদেশে নিজেদের পুনর্গঠনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। যদিও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল এখনও ঘোষণা হয়নি, তবুও বিএনপির মনোনীত ও বঞ্চিত প্রার্থীরা মাঠে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। কেউ জনপ্রিয়তা যাচাই করছেন, কেউবা তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছেন।


গ্রামে-গঞ্জে উঠান বৈঠক, দোয়া মাহফিল, সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন সব জায়গাতেই এখন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ সময় পর বিএনপি এভাবে মাঠে এমন উচ্ছ্বাস নিয়ে নেমেছে, যা দলটির সংগঠন পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়নকে ঘিরে উত্তেজনা শহরে রাজনীতিতে অনেকটাই প্রভাব পরছে।


এদিকে সদর ও বন্দর নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি এ জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসন। এ আসনে বিএনপি মনোনয়ন চেয়েছিলেন অন্তত ১০ জন। তাদের মধ্যে বেশি আলোচনায় ছিলেন সাবেক যুবদল নেতা ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, বিএনপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও শিক্ষক আলিয়ার হোসেন।


পরবর্তীতে গত (৩ নভেম্বর) ২৩৭ আসনে মনোনয়ন ঘোষণা করেন বিএনপি যেখানে দল মাসুদুজ্জামানকে প্রার্থী ঘোষণা করেন এর পর তাদের বিরোধিতা আরও তীব্র হয়। গত ১৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সাখাওয়াত, কালাম, টিপু, আবুল কাউসার আশা এবং আবু জাফর বাবুল অভিযোগ করেন, “মাসুদুজ্জামান কখনো বিএনপি করেননি। গত ১৫ বছরে তিনি সরকারঘনিষ্ঠ সুবিধা পেয়েছেন। বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামেও ছিলেন না। আমরা চাই, ধানের শীষ এমন কাউকে দেওয়া হোক, যিনি অন্তত গত ১৫ বছর দল করেছেন।” এ দাবিতে তারা নিয়মিত কর্মসূচি পালন করেন এবং তৃণমূলে সমর্থন গড়ে তোলার চেষ্টা চালান এবং নানাভাবে সফলতা ও অর্জন করেন।


এ দিকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু সম্ভাব্য প্রার্থী বিরোধীতায় থাকলেও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাসুদুজ্জামানকে সমর্থন জানান। কারণ তিনি দলীয় প্রার্থী এবং দলীয় সিদ্ধান্তের সাথে একমত। যাকে ঘিরে দলে লক্ষ্য করা যায় নানা সমীকরণ। কিন্তু বর্তমানে কোনভাবেই থেমে নেই প্রতিযোগীতা বর্তমানে মনোনীত প্রার্থী নিজের শক্তি বড় করতে মনোনয়ন বঞ্চিতদের পাশে চাইছেন একই সাথে মনোনীত প্রার্থীর বিরোধীতা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিন পর্যন্ত দেখতে চাইছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা।


গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঘোষিত ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তা ছাড়া বাকি ৬৩ আসন থকে ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন তিনি।


আর বাকি ২৭টি জোটের জন্য রাখা হয়েছে এমন ইঙ্গিত ও পাওয়া যায়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে তৃণমূলসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে আওয়াজ উঠছে মনোনীত ও বঞ্চিতদের যুদ্ধের শেষ কোথায়। তা ছাড়া সূত্র উঠছে, নারায়ণগঞ্জে ৫ টি আসনে এটাই চূড়ান্ত থাকবে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী সংখ্যা মাত্রা ছাড়াবে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন