কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ জেলা বিএনপির কার্যক্রম
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ জেলা বিএনপির কার্যক্রম
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি কাগজেই সীমাবদ্ধ রয়েছে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কোন প্রকার কর্মপরিকল্পনা এখনো গৃহীন হয়নি। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে সাইনিং পাওয়ারে থাকা নেতা নির্বাচনী দৌড়ে এখনো ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কোন কার্যক্রমে নেই।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ব্যানারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে তার বলয়ের নেতাদের বিভিন্ন প্রস্তুতি সভা কার্যক্রম পরিচালনার করতে দেখা গেলেও সেখানে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীবকে দেখা যায় না। এছাড়া মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর বিপরীতে মনোনয়ন বাতিলের দাবিতেও তিনি স্বাক্ষর করেন।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক ও মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়াকে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় মাশুকুল ইসলাম রাজীব। পরবর্তীতে কেন্দ্র থেকে এই তিনজন নেতাকেই সাইনিং পাওয়ার দেয়া হয়। সাইনিং পাওয়ার আসার পর তাদের নিকট দায়িত্ব ছিল প্রতিটি ইউনিট ভেঙ্গে নবরূপে সাঁজানো যেটা দলীয় প্রধানের নির্দেশনা ছিল সেই সাথে জেলা বিএনপির সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া।
এদিকে এসকল কার্যক্রম থেকে দূরে থেকে জেলা বিএনপির সাইনিং পাওয়ারে থাকা প্রতিটি নেতা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে থাকেন। সেই সাথে সংগঠন নিয়ে চোখে পড়ার মত তেমন কার্যক্রম না করলেও নেতৃত্বে পাওয়ার পর থেকেই জেলার নেতারা তাদের নির্বাচনী এলাকায় বলয় সৃষ্টি করে নির্বাচনী মাঠ পাকাপোক্ত করার মিশনে থাকতে যায়। জেলা বিএনপির অধীনে ৪টি আসন থাকলেও সেসকল আসনে জেলা বিএনপির নেতাদের কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি। এছাড়া এই চারটি আসনে থানা-উপজেলার মেয়াদত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা পেয়েছিল।
অদৃশ্য কারণে বর্তমান জেলা বিএনপির নিকট বিএনপির নেতাদের সবচেয়ে প্রতিক্ষার বিষয়টি তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যার ফলে বিএনপিতে নির্বাচনী ডামাডোল বাজার আগেই আগেই এই কমিটির বিদায় ঘন্টা চূড়ান্ত হতে যাচ্ছিল। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন কেন্দ্রীক রাজনীতি ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় বর্তমান কমিটি এখনো বলবৎ রয়ে গিয়েছে। এরপরই জেলা বিএনপির সাইনিং পাওয়ারে থাকা নেতারা পৃথক পৃথক ভাবে তাদের আসন কেন্দ্রীক নির্বাচনী প্রচার বলয় শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সূত্র মতে,নারায়ণগঞ্জ-৩,৪ আসনে প্রার্থী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনেই ছিল তার নির্বাচনী এলাকা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে ফতুল্লা একক এবং সিদ্ধিরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সীমানা পরিবর্তন হয়ে চলে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এদিকে দুটি আসনেই প্রার্থী হওয়ার আগে থেকেই তিনি ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় দলীয় কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। যার কারণে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন প্রকার কার্যক্রম করতে পারেননি। ইতিমধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরোধীতাও তিনি করছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হয়ে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া তার নির্বাচনী এলাকা শুধুমাত্র রূপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা বিএনপির নেতৃত্ব পাওয়ার পরবর্তী সময় থেকেই বর্তমানে তার নির্বাচনী এলাকায় শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ব্যস্তময় সময় পার করছেন। জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে থেকে জেলা বিএনপি নিয়ে কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার পর জেলা বিএনপিতে তার দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে সেটা তিনি অনেকটা ভুলেই গিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসার পর পরই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হন। এরপর থেকেই জেলা বিএনপি নিয়ে তেমন সাংগঠনিক কার্যক্রমে পিছিয়ে যান। দলীয় কর্মসূচি ছাড়া জেলা বিএনপির পক্ষে সাংগঠনিক গতি বাড়াতে কোন উদ্যোগ নেয়নি। এদিকে জেলার শীর্ষ তিন নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও আগামী নির্বাচনে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এগুলো নিয়ে ভাবছে জেলা বিএনপি শীর্ষ নেতারা।
বর্তমানে শুধুমাত্র নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণা এবং মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে চূড়ান্ত মনোনয়নে বিএনপি থেকে মনোনয়ন লাভের জন্য জেলা বিএনপির মত দায়িত্বশীল জায়গায় থেকেও বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধচারণ করে মনোনয়ন নিশ্চিতে মগ্ন রয়েছেন। এছাড়া বর্তমান কমিটি কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ থাকায় এই কমিটির নেতৃত্বে বিএনপির আগামী নির্বাচন পরিচালনাও দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।


