মনির হোসাইন কাসেমীর বক্তব্য নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগকে ‘জামাই আদর’ মন্তব্যে বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আওয়ামী লীগকে ‘জামাই আদর’ মন্তব্যে বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভ
# প্রকাশ্য এ ধরনের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় : এড.টিপু
# জামাই আদর নয় মানুষ তাদের ধোলাই করবে : টিটু
# কোন ভালো লোক আওয়ামী লীগ করতে পারে না : বারী ভূঁইয়া
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হলেও যারা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলেন না, তাদের ‘জামাই আদরে’ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। তার এই মন্তব্য ঘিরে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ। গতকাল সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের সবাই খারাপ না। যারা অপরাধে যুক্ত ছিল না, তারা জামাই আদরে থাকবে।”
এই মন্তব্যের পরপরই বিএনপি নেতাদের একের পর এক বক্তব্য আসে, যা পুরো রাজনীতিতে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে। এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, “আমরাও জানি, আওয়ামী লীগের সবাই খারাপ না। কিন্তু তাই বলে প্রকাশ্যে জামাই আদর ঘোষণা এটা বাড়াবাড়ি। মাপকাঠি ঠিক রেখে কথা বলা উচিত।”প্রকাশ্যে এ ধরণের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, “জামাই আদরের কিছু নেই। আওয়ামী লীগ মানেই খারাপ। যারা ভালো তারা এলাকায়ই থাকে। আওয়ামী লীগের ভোট নিতেই সে এমন কথা বলেছে।”মানুষ তাদের জামাই আদরের পরিবর্তে ধোলাই করবে।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বারী ভূঁইয়া মনে করেন, “ভালো মানুষ আওয়ামী লীগ করতে পারে।তার মন্তব্য উসকানিমূলক।”যারা খারাপ কাজ করেছে, যারা এই ধরনের কাজের সহযোগিতা করেছে এবং যারা সব দেখেও চুপ ছিল সবাই একই অপরাধে অপরাধী।
সহ-সভাপতি হাজী শহীদুল্লাহ বলেন, “এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মনির কাসেমী বিএনপির কেউ না।সে অন্য একটি দলের। সে আগে এমপি হোক, তারপর দেখা যাবে কাকে জামাই আদর করে ।”
ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ বলেন, “তার নিজের কোনো ভোটব্যাংক নেই। বিএনপির উপর ভর করে আওয়ামী লীগের ভোট টানার চেষ্টা করছে।”
সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলী বলেন, “এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আওয়ামী লীগের অত্যাচার সহ্য করেছি। আমরা জানি কারা খারাপ করা ভালো।যারা মাঠে ছিল না তারা কিভাবে জানবে।পুনর্বাসন এর চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।”
কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল হোসেন রতন বলেন, “আমরা মাঠের কর্মীরা জানি কে ভালো, কে খারাপ। যারা মাঠে ছিল না, তাদের এ মন্তব্য উসকানি।”
বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান ফকির বলেন, “এই বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। ভবিষ্যতে যেন এমন মন্তব্য না করেন।”
এদিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক মামুন মাহমুদ, মহানগর আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন এবং জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাদের অনুসারীরা জানান, “এ ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা, যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
এদিকে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর ‘জামাই আদর’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও উত্তপ্ত। বিএনপি নেতারা একে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের অপচেষ্টা’ হিসেবে দেখছেন, আর স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন বিতর্কে জমে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, এই মন্তব্য কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠে নতুন কোন সুর বের হয় কি না।


