Logo
Logo
×

রাজনীতি

আবারও দিপু ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সন্দেহের তীর

Icon

লতিফ রানা

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

আবারও দিপু ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সন্দেহের তীর

আবারও দিপু ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সন্দেহের তীর

Swapno



# নতুন করে দিপু ভূঁইয়ার ওসমান প্রীতি নিয়ে আলোচনা
# ওসমান পরিবারের ব্যবসা এখন তার নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি
# নিজ গাড়িতে করে ওসমান পরিবারকে পালাতে সাহায্য করার অভিযোগ
# তাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্কের কথা বিএনপির হাই কমান্ডও জানে বলে অভিমত


গত ৩ নভেম্বর দেশের ২৩৭টি আসনে বিএনপি তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ব্যতীত বাকি ৪টি আসনে বিএনপি তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন আসনের ঘোষিত প্রার্থীদের বিপরীতে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করে প্রচারণা অব্যাহত রাখার খবর পাওয়া গেলেও প্রথম থেকেই অনেকটা নির্ভার ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের দলীয় প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু।


তবে এবার সেই দিপু ভূইয়ার আসন নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনলাইন সক্রিয় ব্যক্তি এবং অনলাইন মিডিয়ায় অত্যন্ত পরিচিত মুখ ড. কনক সারোয়ার। যেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি দিপু ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন। যেখানে দিপু ভূঁইয়াকে তিনি আওয়ামী লীগের পোষ্য এবং ওসমানীয় ঘনিষ্ঠ বলে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও দিপু ভূঁইয়াকে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবতই ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ছিল।


গত ২২ নভেম্বর ড. কনক সারোয়ার তার ভেরিফায়েড পেজ-এ দিপু ভূঁইয়াকে ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, গডফাদার খ্যাত এমপি শামীম ওসমান এবং আরেক প্রভাবশালী এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর ছায়াতলে থেকে ব্যবসা বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে তাকে শামীম ওসমান পরিবারের ব্যবাসায়ীক অংশীদার এবং শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বলে জানান।


এসব বিষয় তুলে ধরার পর আবারও দিপু ভূঁইয়াকে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়াসহ প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়নে তার নাম ঘোষণার বিষয়টি আবারও জেলার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠে।
 
এর আগে স্থানীয়সহ জাতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় দিপু ভূঁইয়ার আওয়ামী লীগ প্রীতি এবং নারায়ণগঞ্জ বিএনপির প্রধান শত্রু শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সাথে সখ্যতার বিষয়টি উঠে আসে। শামীম ওসমানের সাথে বিএনপি নেতা দিপু ভূঁইয়ার অন্তরঙ্গ সম্পর্কের কথা বিএনপির কেন্দ্র থেকে লন্ডন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বলেও জানা যায়। বিশেষ করে জুলাই গণ অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে শামীম ওসমানের পরিবার পালিয়ে যেতে সাহায্য করার বিষয়টি তৃণমূল বিএনপিকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল।


বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শামীম ওসমান আত্মগোপনে যাওয়ার আগে সর্বশেষ যে বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন সেই বাড়িটির মালিক ছিলেন দিপু ভূইয়া। বিষয়টি শামীম ওসমানের এক পারিবারিক বিশ্বস্ত ব্যক্তিই প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়। এমনকি তার কল রেকর্ড আছে বলেও জানা যায়।


সেই তথ্যমতে গুলশানে দিপু ভূইয়ার মালিকানাধীন গাউসিয়া ভবনে শামীম ওসমানকে তিনি একটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। গণ অভ্যুত্থানের আন্দোলন চলাকালীন সময় গত বছরের ১৯ জুলাই শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমান ছাত্র জনতার উপর গুলি বর্ষণ শেষে ঢাকা গাউসিয়া ভবনে অবস্থান নেন বলেও সেই সূত্র থেকে জানা যায়। সে সময় শামীম ওসমান পালিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়ালে ওয়ন ওসমান ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় তারা এখনো বাংলাদেশেই আছেন বলে নিশ্চিত করেন।


যে বাড়ি থেকে ভিডিও বার্তাটি দেয়া হয়েছিলো সেটি দিপু ভূইয়ার বাড়ি ছিল বলেই জানা যায়। একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমান আত্মগোপনে চলে গেলে দিপু ভূঁইয়ার গুলশানের বাড়িতে আটকা পরেন লিপি ওসমানসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। ঐ দিন রাত ১১ টায় দিপু ভূঁইয়া নিজেই তার কালো গ্লাস ঘেরা গাড়িতে করে তাদের নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।


দিপু ভূঁইয়ার আওয়ামী প্রীতি ও ওসমান প্রীতি নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে দিপু ভূঁইয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তাকে ওসমান পরিবারের সম্পত্তি ও ব্যবসা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করা হয়। যেখানে ওসমান পরিবারের গার্মেন্টস, পরিবহন, আবাসন ও শিপিংসহ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পদের ব্যবস্থাপনায় তার ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ ছিল। এর বাইরেও তার বিরুদ্ধে ওসমান পরিবারের ছত্রছায়ায়ই নারায়ণগঞ্জের চেম্বার অফ কমার্সের গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেন বলেও অভিযোগ আছে। ড. কনক সারোয়ারের এসব দাবি এবং পূর্বের বিভিন্ন অভিযোগে বর্তমানে আবারও টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছেন দিপু ভূঁইয়া।
 
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন