Logo
Logo
×

রাজনীতি

বিএনপির যোগ্য প্রার্থী সংকটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ঝুঁকি নেবেন কে?

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

বিএনপির যোগ্য প্রার্থী সংকটে স্বতন্ত্র  প্রার্থী হতে ঝুঁকি নেবেন কে?

বিএনপির যোগ্য প্রার্থী সংকটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ঝুঁকি নেবেন কে?

Swapno

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বিএনপি ২৩৭টি আসনে তাদের প্রার্থীদের প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকেই মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সারদেশে প্রায় ৫০টিসহ নারায়ণগঞ্জের ৩ টি আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ, সংবাদ সম্মেলনসহ মশাল মিছিল চলছে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়নকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


এদিকে গত (৩ নভেম্বর) ঘোষিত তালিকায় নতুন, ‘হাইব্রিড’ ও আন্দোলনে নিস্কিয় ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ায় বিভিন্ন আসনে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা বাদ পড়েছেন। ফলে একাধিক আসনে ভাঙচুর, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ মশাল মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। তা ছাড়া মনোনয়ন বঞ্চিত অনেকের বক্তব্যে একটা বিষয় উঠে আসছে মনোনয়ন পরিবর্তন না হলে অনেকের এবারই শেষ নির্বাচন হিসেবে স্বতন্ত্র করার আভাস দিচ্ছেন। একই সাথে অনেকে এখন হাল না ছেড়ে চূড়ান্তের শেষ দিন পর্যন্ত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও হাল ছাড়ছেন না মনোনয়ন বঞ্চিতরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে কোনঠাসা হয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে পারে বলছে সূত্র।


এদিকে মনোনয়ন ঘোষণাকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা চূড়ান্ত মনোনয়ন নয়, যেকোনো আসনে পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়লে মনোনয়ন পরিবর্তন করতে পারে দলের স্থায়ী কমিটি। মনোনয়ন বঞ্চিতদের হতাশ না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়ন বঞ্চিত সহস্রাধিক নেতা অনেকটা হতাশ। এরমধ্যেই সাবেক এমপি যারা ছিলেন তাদের মধ্যে হতাশা বেশি।


প্রার্থী ঘোষণার রাত থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বেশ কয়েকজন নেতার সমর্থকরা।যদিও দলের হাইকমান্ড থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে- কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলেই বহিষ্কারের খড়গ নেমে আসবে। আখেরে কী সিদ্ধান্ত নেবেন মনোনয়ন বঞ্চিত এসব নেতা। তারা কি দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নাকি নিজেকে গুটিয়ে রেখে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করবেন।


তবে মনোনয়ন বঞ্চিত একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে নিজ আসনে যোগ্য প্রার্থী না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং যোগ্য প্রার্থীদের মাধ্যমে মনোনয়ন বিভিউ করতে কেন্দ্রিয়ভাবে আবেদন করেছেন। এদিকে জেলার কয়েকজন নেতা মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এখনো নারায়ণগঞ্জে এমন ঘোষণা আসেনি। তা ছাড়া ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এখনো দেওয়া হয়নি বিএনপির মনোনয়ন বলছে, এটা নাকি জোটের জন্য রাখা হয়েছে। যদি জোটেই দেওয়া হয় এই আসনে একাধিক বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী স্বতন্ত্র করার পরিকল্পনা রেখেছেন জানিয়েছে সূত্র।


তা ছাড়া বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী রূপগঞ্জে একটি ঐক্য সৃষ্টি করতে পেরেছেন। যাকে ঘিরে মনোনয়ন বঞ্চিতরা সকলেই একে একে করে দিচ্ছেন তাকে সমর্থন। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-২ আসন (আড়াইহাজারে) বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ। যিনি ইতিমধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিতদের ঐক্য করতে না পারলে ও তিনি এই আসনে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অনেকটাই যোগ্য বলছে তৃণমূলের নেতারা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকে শুরু করে দলীয় কর্মসূচি এবং সর্বশেষ দলীয় ঘোষিত হরতাল-অবরোধে ব্যাপক ভূমিকা ছিলো এই নজরুল ইসলাম আজাদের যাকে ঘিরে তাকে মনোনীত প্রার্থী করায় অনেকটাই উচ্ছাসিত আড়াইহাজারবাসী। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়নকে ঘিরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে অসেন্তাষ। এই দুইটি আসনে বিতর্কিত লোক দ্বারা কমিটি গঠনে অনেকটাই অস্তোষ প্রকাশ করছেন তৃণমূল।


তা ছাড়া ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের আওয়ামী লীগ সংশ্লিতার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তা নিয়ে শুরু হয়েছিলো হৈ চৈ অনেকেই বলেছিলেন এগুলো এডিট না এ আই দিয়ে বানানো। কিন্তু গত (১১ নভেম্বর) মিট দ্যা প্রেসের ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানে এই ছবিগুলো আসল এবং এগুলো আওয়ামী লীগের সেই সন্ত্রাসীদের চাপে পরে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মাসুদুজ্জামান। এমনতা অবস্থায় মনোনয়ন বঞ্চিত চার নেতা সাখাওয়াত-কালাম-বাবুল-টিপু একাট্টা হয়ে মাঠে নেমে অনেকটাই চাপে রেখেছেন মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানকে।


বর্তমানে হাজারো হাজারো বিএনপির সমর্থকদের নিয়ে নিয়মিত বিএনপির ৩১ দফার প্রচারণাসহ নানাভাবে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির কাজ করে যাচ্ছেন। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান যেন (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁও) এর একটি বিতর্কিত নাম। যার বিরুদ্ধে গত ৫ আগষ্টের পর থেকেই চাঁদাবাজি, টোল প্লাজা লুট, স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এর বাহিরে ও শত শত অভিযোগে কোনঠাসা তিনি।


এর বাহিরে ও গত (১০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকায় (মুক্ত খবরÑ পত্রিকার একজন গণমাধ্যমকর্মী তার বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি তাকে বলেন, সারাদেশেই বিএনপির লোকেরা চাঁদাবাজি করে, তা ছাড়া তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের লোকজন ঢাকায় চাঁদাবাজিসহ সব করে তাদের নিয়ে লিখেন।


তার এমন মন্তব্যের মাধ্যমেই তার মনোনীত প্রার্থীতার যোগ্যতা যাচাই হয়েছে বলছেন তৃণমূলে। একই সাথে ইতিমধ্যে নিয়মিত মান্নানের মনোনয়ন বাতিলের দাবীতে সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁও এলাকায় চলছে নিয়মিত মশাল মিছিল এবং বিক্ষোভ মিছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে পরিবর্তন নাকি চূড়ান্ত এটা নিয়েই নারায়ণগঞ্জে চলছে নানান আলোচনা। যাকে ঘিরে বর্তমানে মনোনয়ন বিতর্কে চ্যালেঞ্জে বিএনপি। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জে এবার একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে থাকবে বলে গুঞ্জন উঠছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন