মান ভাঙানোর চ্যালেঞ্জে সফল হচ্ছে না মনোনীত প্রার্থীরা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
মান ভাঙানোর চ্যালেঞ্জে সফল হচ্ছে না মনোনীত প্রার্থীরা
নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন বিএনপি। এর পরই নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনের একাধিক মনোনয়ন বঞ্চিতদের সাথে মনোনীত প্রার্থীদের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে মনোনীতদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ কেউ রাজপথে আবার কেউ কেউ অনলাইনে নেমেছেন বঞ্চিতরা। অন্যদিকে বিভিন্নবার বঞ্চিতদের বাসা বাড়িতে গিয়েও দেখা সাক্ষাৎ না পেয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পেয়ে ও মান ভাঙাতে পারছেন না প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীরা। বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে পরেছেন মনোনীত প্রার্থীরা। এদিকে গত ৩ নভেম্বর নাম ঘোষণার পরেই বিএনপির সকল স্তরের নেতাদের একত্রিত শুরু করেন রূপগঞ্জে বিএনপি মনোনীত মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু।
একদিন পরেই তিনি চলে যান মনোনয়ন প্রত্যাশী অপর নেতা কাজী মনিরুজ্জামানের কাছে। সহযোগিতা চান ধানের শীষের জন্য। মুহূর্তে পাল্টে যায় চিত্র। কিন্তু এমনইভাবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান সাক্ষাৎ করেছেন সেই আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও অধ্যাপক রেজাউল করিমের সাথে কিন্তু কোনভাবেই মান্নান তাদের মান ভাঙাতে সক্ষম হয়নি। একইভাবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ বিভিন্ন কৌশলে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক সাংসদ সদস্য আবুল কালাম ও আবু জাফর আহম্মেদ বাবুলের মান ভাঙাতে সক্ষম হয়নি।
ইতিমধ্যে সাখাওয়াত ও টিপুর বাসভবনে গিয়ে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করলে ও সেখান থেকে সমর্থন নিয়ে আসতে পারেনি মাসুদুজ্জামান মাসুদ। যার ঘিরে তারা এখনো মাঠে নামতে পারেনি একত্রে। এদিকে মনোনয়ন বঞ্চিতদের একটাই ঘোষণা তারা মনোনয়ন চূড়ান্ত ঘোষণার দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। যাকে ঘিরে এখন মান ভাঙিয়ে একত্রিত হতে পারলেন না মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিতরা যাকে ঘিরে চ্যালেঞ্জে মনোনীত প্রার্থীদের মিলছে না সফলতা।
সূত্র জানিয়েছে, এর আগে গত (৩ নভেম্বর) সারাদেশের বিএনপির ২৩৭ টি আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের ৪টি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকেই কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক নিজেদের মনোনয়ন চূড়ান্ত এবং পাকাপোক্ত করতে সকল বিভেদ ভূলে ঐক্যের চ্যালেঞ্জে মনোনয়ন বঞ্চিতদের মান ভাঙাতে কাজ শুরু করেন প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীরা। এদিকে মনোনয়ন ঘোষণাকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা চূড়ান্ত মনোনয়ন নয়, যেকোনো আসনে পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়লে মনোনয়ন পরিবর্তন করতে পারে দলের স্থায়ী কমিটি।
মনোনয়ন বঞ্চিতদের হতাশ না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু চুড়ান্ত নয় বিষয়টি মাথায় নিয়ে এখনো মনোনয়ন বঞ্চিতরা মনোনীত প্রার্থীদের সাথে একত্মতা প্রকাশ করেনি। সকলেই পরিবর্তন পরিবর্তন চেয়ে হাইকমান্ডে করছেন নানা আলোচনা। তা ছাড়া ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীদের নিয়ে নানা হৈ চৈ লক্ষ্য করা যায়। এদিকে (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁও) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমানসহ উঠে আসে ব্যাপক সমালোচিত ঘটনা। যাকে ঘিরে মনোনয়নে বিতর্কিতকাণ্ডে মান্নান।
একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠতা ও ওসমান সংশ্লিষ্ট নানা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যা নিয়ে তিনি দেশের বাহিরে থেকে এসে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এগুলোর জবাব দিয়ে বলেন, ওসমানরা তাকে চাপে ফেলে তাদের সাথে ছবি তুলতে বাধ্য করতো। এমন নানা বার্তা দিয়েই তিনি মান ভাঙাতে মনোনয়ন বঞ্চিত আবুল কালামের বাসায় গেলে তাকে না পেয়ে তার মেয়ের সাথে কথা বলে আসেন।
একই সাথে এর দুইদিন পরই তিনি বাকি মনোনয়ন বঞ্চিতদের কাছে যান এবং তাদের মান ভাঙনোর চেষ্টা করলে সেখানে মনোনয়ন বঞ্চিত খন্দকার মাকসুদুল আলম খোরশেদ মান ভেঙে তার সাথে একত্মতা প্রকাশ করলে ও বাকি সাখাওয়াত ও টিপু এখনো তাদের মান ভাঙেনি। যাকে ঘিরে গতকাল শুভেচ্ছা মিছিলে মাসুদের পাশে খোরশেদকে দেখা গেলেও দেখা যায়নি সাখাওয়াত-টিপুকে। ইতিমধ্যে গুঞ্জন উঠছে আখেরে কী সিদ্ধান্ত নেবেন মনোনয়ন বঞ্চিত এসব নেতা। তারা কি দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নাকি নিজেকে গুটিয়ে রেখে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করবেন। এমন নানা আলোচনা হচ্ছে রাজনৈতিক ময়দানে।


