Logo
Logo
×

রাজনীতি

মনোনয়ন বিতর্কে নির্বাচনের আগে চ্যালেঞ্জে বিএনপি

Icon

লিমন দেওয়ান

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

মনোনয়ন বিতর্কে নির্বাচনের  আগে চ্যালেঞ্জে বিএনপি

মনোনয়ন বিতর্কে নির্বাচনের আগে চ্যালেঞ্জে বিএনপি

Swapno



আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী ঘোষণার পর তৃণমূল থেকে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মুখে পড়ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এই পরিস্থিতি দলটির সামনে নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলছে তৃণমূলের নেতারা। এদিকে গত (৩ নভেম্বর) ২৩৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই সারাদেশে প্রায় তিন ডজন আসনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করছেন। সেসব আসনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের মনোনয়নের দাবিতে চলছে এসব বিক্ষোভ। এদিকে সারাদেশের ন্যায় রাজধানীর লাগায়ো জেলা নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী ঘোষণার পর এখনো সেখানে দেখা যায়নি কোন প্রকারের বিক্ষোভ মিছিল।


কিন্তু ত্যাগী-নির্যাতিত নেতারা মনোনীত হিসেবে ঘোষিত না হওয়ায় অনেকটাই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এই জেলায় বিএনপির তৃণমূলের মাঝে। যাকে ঘিরে বর্তমানে মনোনয়ন বঞ্চিতরা এখনো সমর্থন দেয়নি প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীদের। এদিকে মনোনীত প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়ন চূড়ান্ত রাখতে মনোনয়ন বঞ্চিতদের দারস্ত হচ্ছে এবং কেন্দ্রেীয় হাইকমাণ্ড থেকে সীম্পৃতি পেতে চাইছেন, কিন্তু মনোনয়ন বঞ্চিতরা কোনভাবেই প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীদের পাত্তা দিচ্ছেন না। সকলের মুখে একটাই আওয়াজ মনোনয়ন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা এককভাবে মাঠে থেকে ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়ে যাবেন।


তা ছাড়া বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী রূপগঞ্জে একটি ঐক্য সৃষ্টি করতে পেরেছেন। যাকে ঘিরে মনোনয়ন বঞ্চিতরা সকলেই একে একে করে দিচ্ছেন তাকে সমর্থন। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-২ আসন (আড়াইহাজারে) বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ। যিনি ইতিমধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিতদের ঐক্য করতে না পারলে ও তিনি এই আসনে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অনেকটাই যোগ্য বলছে তৃণমূলের নেতারা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকে শুরু করে দলীয় কর্মসূচি এবং সর্বশেষ দলীয় ঘোষিত হরতাল-অবরোধে ব্যাপক ভূমিকা ছিলো এই নজরুল ইসলাম আজাদের যাকে ঘিরে তাকে মনোনীত প্রার্থী করায় অনেকটাই উচ্ছাসিত আড়াইহাজারবাসী।


কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়নকে ঘিরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে অসেন্তাষ। এই দুইটি আসনে বিতর্কিত লোক দ্বারা কমিটি গঠনে অনেকটাই অস্তোষ প্রকাশ করছেন তৃণমূল। তা ছাড়া ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের আওয়ামী লীগ সংশ্লিতার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তা নিয়ে শুরু হয়েছিলো হৈ চৈ অনেকেই বলেছিলেন এগুলো এডিট না এ আই দিয়ে বানানো। কিন্তু গতকাল (১১ নভেম্বর) মিট দ্যা প্রেসের ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানে এই ছবিগুলো আসল এবং এগুলো আওয়ামী লীগের সেই সন্ত্রাসীদের চাপে পরে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মাসুদুজ্জামান।


একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান যেন (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁও) এর একটি বিতর্কিত নাম। যার বিরুদ্ধে গত ৫ আগষ্টের পর থেকেই চাঁদাবাজি, টোল প্লাজা লুট, স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এর বাহিরে ও শত শত অভিযোগে কোনঠাসা তিনি। এর বাহিরে ও গত (১০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকায় (মুক্ত খবর) পত্রিকার একজন গণমাধ্যমকর্মী তার বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি তাকে বলেন,


সারাদেশেই বিএনপির লোকেরা চাঁদাবাজি করে, তা ছাড়া তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের লোকজন ঢাকায় চাঁদাবাজিসহ সব করে তাদের নিয়ে লিখেন। তার এমন মন্তব্যের মাধ্যমেই তার মনোনীত প্রার্থীতার যোগ্যতা যাচাই হয়েছে বলছেন তৃণমূলে। সব মিলিয়ে বর্তমানে পরিবর্তন নাকি চূড়ান্ত এটা নিয়েই নারায়ণগঞ্জে চলছে নানান আলোচনা। যাকে ঘিরে বর্তমানে মনোনয়ন বিতর্কে চ্যালেঞ্জে বিএনপি।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থীদের বিষয়ে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করতে বিএনপি কিছু স্বাধীন সংস্থাকে কাজে লাগিয়েছে। ৩ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ২৬ জেলায় অন্তত ৩৮টি বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এমনকি বিএনপি কর্মীরা সড়ক ও রেলপথও অবরোধ করেছেন। মেহেরপুর, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে অন্তত ৩০ জন বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন। প্রার্থী ঘোষণার পরদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদেরকে দল 'যথাযথ সম্মান ও দায়িত্ব' দেবে। কিন্তু এতে ও সংঘর্ষ, বিক্ষোভ মিছিল এবং ক্ষোভ কিছুতেই কমছে না।  


যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বচ্ছ ও ন্যায্য মনোনয়ন প্রক্রিয়ার অভাবেই এই অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। যাকে ঘিরে বিএনপি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে বিএনপির ফলাফলের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন নিয়ে নানা বিতর্কে ভেসে আসছে পরিবর্তনের হাওয়া। কিন্তু পরিবর্তন প্রশ্নে এই দুইটি আসনের প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীদের মন্তব্য, এটা দলের সিদ্ধান্ত, দল যদি আমার থেকে ভালো কাউকে পেয়ে তাকে আমার জায়গায় মনোনীত করতে চায় সেটা পুরোই দলের সিদ্ধান্ত, সেদিকে আমরা চূড়ান্ত। আমরা সকলেই ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে প্রস্তুত।  

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন