মাসুদুজ্জামানের পাশে শাহেনশাহ
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাবার পর থেকে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের পক্ষে কাজ করছিলেন। দলের ৩১ দফা বাস্তবায়নে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে শহর-বন্দরের অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা। ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী ঘোষণার পর দলের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো আনন্দ মিছিল বা মিষ্টি বিতরণ থেকে মাসুদুজ্জামান বিরত থাকলেও তার পক্ষে দলের নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের প্রচার ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে বন্দরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানের পক্ষে প্রচারণায় নামতে দেখা গেছে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতিকে। মাসুদুজ্জামানের পক্ষে প্রচারে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহসহ তার বলয়ের নেতাকর্মীরা। শাহেন শাহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর ঘনিষ্ঠ হলেও তাদের মাসুদুজ্জামানের পক্ষে প্রচারণায় দেখা যাওয়াতে ধানের শীষের পক্ষে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ এমন বার্তা পাওয়া গেছে। এদিকে বন্দর থানার আওতাধীন ৯টি ওয়ার্ড জুড়ে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ‘র ব্যাপক সমর্থন রয়েছে।
তা ছাড়া গত ৫ আগষ্টের পরবর্তী সময়ে বন্দর থানা জুড়ে শাহেন শাহ‘র ব্যাপক আধিপত্য রয়েছে। তা ছাড়া নাসিক ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বরত ছিলেন শাহেন শাহ। যাকে ঘিরে ভোটারদের ডোট টু ডোর হিসেবে তার একটি আলাদা অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইতিমধ্যে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলে ও বর্তমানে মনোনয়ন বঞ্চিতর তালিকাভুক্ত হওয়ায় তাদেরই কর্মী হিসেবে পরিচিত শাহেন শাহ বর্তমানে প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানের পকেটবন্দি হয়েছেন।
যা নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান আলোচনা উঠছে অনেকেই বলছেন সাখাওয়াত-টিপু এখনো মাসুদুজ্জামানকে প্রকাশ্যে ধানের শীষের কাণ্ডারী হিসেবে মানছেন না। তারা এখনো চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার দিকে তাকিয়ে থাকলে ও ইতিমধ্যে তাদের কর্মীরা ভোল পাল্টিয়ে প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামানকে সমর্থন দিচ্ছেন। বর্তমানে শাহেন শাহ‘র সমর্থন বন্দরে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে আলাদা ফ্যাক্টর হিসেবে বলা চলে।
সূত্র বলছে, ২০২৩ সালের (২২ ফেব্রুয়ারী) মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর থানা বিএনপির ৪১সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। যেখানে, নুর মোহাম্মদ পনেছকে আহ্বায়ক ও নাজমুল হক রানাকে সদস্য সচিব করে কমিটির অনুমোদন দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
পরবর্তীতে একই সালের ( ৯ জুন ) বিকেল তিনটায় বন্দরের ২৭নং ওয়ার্ড কুড়িপাড়া হাইস্কুল মাঠে বন্দর থানা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে শেষে সভাপতি পদে নুর মোহাম্মদ পনেছ ও শাহেন শাহ আহম্মেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে কাউন্সিলর ভোটারদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে শাহেন শাহ্ আহম্মেদ। নুর মোহাম্মদ পনেছ পান ২১ ভোট আর শাহেন শাহ্ আহম্মেদ পান ২৪ ভোট। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন নাজমুল হক রানা। যা পুরো কমিটিই মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর হাতে বানানো। কিন্তু যখনই নির্বাচনে সুবিধার হওয়া বইতে শুরু করলো তখনই ভোল পাল্টাতে শুরু করলো নেতারা।
এদিকে গত (৩ নভেম্বর) প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলে ও ৪৮ ঘন্টা পর গত (৫ নভেম্বর) মাসুদুজ্জামানকে পুরো বন্দরবাসীকে নিয়ে তার পক্ষে গণসংযোগের মাধ্যমে সমর্থন করেন বন্দর থানা বিএনপির এই সভাপতি শাহেন শাহ। এরপর থেকেই বন্দর মাসুদুজ্জামানের পক্ষে নানান কর্মসূচির আয়োজন করছেন আবার আরো রেখেছেন শাহেন শাহ যা মাসুদুজ্জামান দেশে আসলে পালন করবেন শাহেন শাহ।
তা ছাড়া বন্দরের ৯টি ওয়ার্ডে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাসুদুজ্জামানের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন শাহেন শাহ। সেই মোতাবেক বন্দরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নিয়মিত ভোটারদের সাথে সভা-সমাবেশসহ প্রতিটি ওয়ার্ডে লাগানো হচ্ছে মাসুদুজ্জামানের ব্যানার-ফেস্টুন। বর্তমানে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে বন্দর থানা এলাকা জুড়ে নির্বাচনী সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন শাহেন শাহ।
মাসুদুজ্জামানকে যোগ্য প্রার্থী আখ্যা দিয়ে বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ যুগের চিন্তাকে বলেন, শুধু নারায়ণগঞ্জে নয়, সারাদেশের মধ্যে যদি ক্লিন ইমেজের নেতা কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তা হলো মাসুদুজ্জামান মাসুদ ভাই। তিনি একজন যোগ্য লোক হিসেবে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে পরিচিত। তিনি বলেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার হাতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের ধানের শীষের প্রতীক তুলে দিয়েছেন আমরা তার সাথেই আছি এবং থাকবো। মাসুদুজ্জামান ভাইয়ের কোন বিকল্প নারায়ণগঞ্জে নেই। তিনিই এই আসনে যোগ্য। তিনি আরো বলেন, যারা বলছে মনোনয়ন ঘুরবে, এটাই চূড়ান্ত নয় তারা গুজব ছড়িয়ে নারায়ণগঞ্জের জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।


