Logo
Logo
×

রাজনীতি

সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পরেও কৌশলী ছক বিএনপি’র

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পরেও কৌশলী ছক বিএনপি’র

সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পরেও কৌশলী ছক বিএনপি’র

Swapno



নারায়ণগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসনের ৪টিতে বিএনপির দলীয় এমপি প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই তালিকা প্রকাশ করেন। এতে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনে মাসুদুজ্জামান মাসুদ।


এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলে ও কৌশলী অবস্থানে থেকে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছেন ‘এটাই চূড়ান্ত নয়’ দল চাইলে এতে পরিবর্তন আনতে পারবে। তার ঘোষণায় এখনো আশা ছাড়েনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এদিকে সূত্র জানিয়েছে, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে ও বঞ্চিত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দল।


সেই ক্ষেত্রে বঞ্চিত মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যে যার যার মতো করে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন এবং ধানের শীষের পক্ষে ভোটারদের থাকতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করার নির্দেশ মোতাবেক কাজ আবারো শুরু করতে যাচ্ছেন। এদিকে আসনগুলোতে দলটির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় বঞ্চিত অনেক নেতা নাখোশ। মনোনয়ন নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের সরাসরি কেউ বিরোধীতা না করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের কিংবা তাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডে এই ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও গুঞ্জন চলছে।


কিন্তু এটা এখনো কেউ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি সকলেই মনোনয়ন চূড়ান্তের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু দলের হাইকমাণ্ড কোনো প্রকার ‘বিদ্রোহ’ বরদাশত করবে না বলে জানিয়েছে তৃণমূলের নেতারা। দল থেকে পরিষ্কারভাবে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বর্তমানে মনোনীত প্রার্থী এবং বঞ্চিতরা আগের মতোই ধানের শীষের গুণগান জনগণের সাথে গাইবার জন্য বলা হয়েছে।


এদিকে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি কোন মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলে ও ইঙ্গিত হিসেবে জমিয়তে উলামায়ের প্রার্থী মনির হোসাইন কাসেমীর নাম উড়ছে। তারপরে ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেউ এখনো বসে নেই। গতকাল ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব যিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি ও তারেক রহমানের ৩১ দফা জনগণের হাতে পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করছেন। তা ছাড়া দলীয় কৌশলী নির্দেশনা মোতাবেক আজ থেকে আবারো মাঠে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইতে ৩১ দফা হাতে নিয়ে বেড় হতে পারে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতরা।


সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে সম্ভাব্য মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন এসব আসনে দলটির জেলা ও মহানগর পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়ন বঞ্চিত এ নেতারা প্রকাশ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তাদের কর্মী-সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পুরোনো আন্দোলন-সংগ্রামের ভিডিও-ছবিও পোস্ট করছেন। এর বাহিরে ও অনেকেই ইতিমধ্যে নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে করছেন নানা বৈঠক। তা ছাড়া স্থানীয়রা বলছেন, মনোনয়ন পেলেও জয় নিশ্চিত বা সহজ হবে না।


নারায়ণগঞ্জ-১ তথা রূপগঞ্জ আসনে আপাতত দিপুর প্রতিদ্বন্দ্বি বা প্রতিপক্ষ নাই। এখানে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ পেয়েছিলেন। তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন না। ফলে সেখানে দিপুর সামনে বাধা কম হলে ও বিএনপি থেকে কেউ প্রার্থী হলে দিপুর জন্য ফ্যাক্টর হতে পারে। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ মনোনয়ন পেলেও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে আজাদকে কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে।


নারায়ণগঞ্জ-৩ তথা সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নান মনোনয়ন পেলেও এখানে শক্ত প্রতিপক্ষ সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন ও রেজাউল করিম। তাদের মধ্যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে মান্নানকে কঠিন বেগ পোহাতে হবে। নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনে মাসুদুজ্জামান মনোনয়ন পেলেও এখানে সাবেক সাংসদ সদস্য আবুল কালাম সতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে বা বন্দরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে বড় প্রতিদ্বন্দ্বি হতে পারেন। এদিকে বিএনপি থেকে গিয়ে অন্যদল বা স্বতন্ত্র হওয়ার পরিকল্পনা ইতিমধ্যে নেই কিন্তু দলীয় কৌশল মোতাবেক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দ্রুতই সতেজ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে থাকার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


এদিকে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাসকুদুল আলম খোরশেদ। নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন।


তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। এর বাহিরে জোটের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জমিয়তে উলামায়ের মনোনীত প্রার্থী মনির হোসাইন কাসেমী। নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।


নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন। নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা দুলাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহম্দে টুটুল। এরা নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইলে ও দল এদের কাউকেই দেয়নি মনোনয়ন। কিন্তু এখনো এদের বঞ্চিততা চূড়ান্ত হয়নি এরা মনোনয়ন চূড়ান্তের শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান মোতাবেক মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন