নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির
মনোনয়নপ্রত্যাশীরা প্রচারণার চেয়ে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত
যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা প্রচারণার চেয়ে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আসনভিত্তিক একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। এমতা অবস্থায় নিজেদের যোগ্যতা প্রমান দিতে সামাজিকসহ নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিন আসনেই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যাপকভাবে মাঠে থাকায় চলছে নির্বাচনী প্রতিযোগীতা। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনী আসনের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা সব দিক দিয়েই এগিয়ে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন। এই আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকায় কঠোর প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর বাহিরে ও নারায়ণগঞ্জ-১,৩,৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নানাভাবে মাঠে নেমে কাজ করে যাচ্ছেন।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জ -২ আসন (আড়াইহাজারে) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী প্রচারণাসহ তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা বাস্তবায়নের থেকে বেশি ব্যস্ত হয়ে পরেছেন আধিপত্য বিস্তারকে নিয়ে। ইতিমধ্যে গত বছরের ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর থেকেই প্রায় ১৪ মাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৩০ টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবই বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই বলয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার এর মধ্যে বলয়গুলো হলো মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক সাংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর এই তিন বলয়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ১৪ মাসে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকশত নেতাকর্মী ও সাধারণজনগণ আহত হয়েছেন।
এদিকে কিছুদিন পূর্বে এই আসনের দুই প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ ও মাহমুদুর রহমান সমুনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দোসরদের সাথে আতাঁত করার বিষয়সহ নানা বিষয়কে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক সমালোচনা লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে বর্তমানে নির্বাচনী আমেজ নিয়ে জমে উঠেনি নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার)। এই আসনে তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সপ্তাহে একদিন শুক্রবারে আজাদের পক্ষে তার ভাই রাকিব নামকা ওয়াস্তে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালায়। একইভাবে প্রার্থী আতাউর রহমান আঙ্গুর, মাহমুদুর রহমান সুমনেরও দেখা যাচ্ছে না কোন ভূমিকা। এদিকে বর্তমানে আওয়ামী লীগ না থাকায় আড়াইহাজারে বিএনপির শত্রু বিএনপি হয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে করছেন দফায় দফায় সংঘর্ষ। বর্তমানে সেই আধিপত্য বিস্তার নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি নেতাকর্মীসহ সেই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) এই আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচনায় থাকা কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন দুইজনেই যেন সমালোচনার জন্ম দিচ্ছেন। এই দুইজনকে নিয়েই নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে আলোচনা সমালোচনা অনেক চলছে। তাদের নামে সাথে যুক্ত হয়ে গেছে বিতর্কিত কর্মকান্ড। বিশেষ করে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে নিজেদের বিতর্কমুক্ত রাখতে পারেনি তা ছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই আসনটিতে আওয়া মী লীগ এবং বিএনপি প্রায় সমানভাবেই নেতৃত্ব নিয়ে আসছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোতে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন। কিন্তু গত ৫ আগষ্টের পরবর্তী সময়ে এই আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট ও আলোচিত নেতা ইতোমধ্যে অনেক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি গেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পরবর্তী সময়ে তারা নিজেদেরকে বিতর্কমুক্ত রাখতে পারেননি । নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে উচ্চবিলাসীতার অভিযোগ উঠেছে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই শহরজুড়ে দামী গাড়ি হাকিয়ে চলতেন। নেতাকর্মীরা কষ্টে দিন যাপন করলেও সেদিকে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ থাকতো না। ক্ষমতায় না থেকেও দামী গাড়ি হাকানো এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর আরও কয়েকটি দামী গাড়ির মালিক হয়ে যাওয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তার আয়োর উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তিনি কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন সেসকল বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। এদিকে মাহমুদুর রহমান সুমন আওয়ামী লীগ সরকারের সমযয়ে কোনো মামলার আসামী হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হলেও মাহমুদুর রহমান সুমন বেশ ভালো অবস্থানেই ছিলেন।
তিনি আওয়া মী লীগের সাথে আঁতাত করে রাজনীতি করে আসছেন বলে অভিযোগ করা হয়। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে সেই আসনের সাবেক আওয়ামী লীগের সাংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে শেল্টারসহ তার বাসায় আশ্রয় দেওয়া অভিযোগসহ উঠে। একই সাথে এই আজাদ ও সুমনের বাহিনীর বিরুদ্ধে পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে দখল বানিজ্যেসহ মামলা বানিজ্যে, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তারে বিএনপির এই তিন মনোনয়ন প্রত্যাশীর গ্রুপের সাথে একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া এই আসনে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুলের বিরুদ্ধে গত ৫ আগষ্টের পরবর্তীতে অভিযোগ না উঠলে ও বিগত দিনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠা সংস্কারপন্থী সেই সিল আবারো গর্জে উঠছে। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনের পূবেই আড়াইহাজার ব্যাপক সমালোচনায় জর্জড়িত হয়ে উঠেছে, যাকে ঘিরে ক্লিন ইমেজের অভাবে ভূগছে আসনটি। এদিকে বর্তমানে নির্বাচনী আমজে ছড়িয়ে ফেলতে প্রতিটি আসনের নেতাকর্মীরা কাজ করলে ও এরাব বর্তমানে আধিপত্য নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পরেছেন।


