Logo
Logo
×

রাজনীতি

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টানাটানিতে বিক্ষিপ্ত বিএনপির অঙ্গসংগঠন

Icon

এম মাহমুদ

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টানাটানিতে বিক্ষিপ্ত বিএনপির অঙ্গসংগঠন

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের টানাটানিতে বিক্ষিপ্ত বিএনপির অঙ্গসংগঠন

Swapno

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোতে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রভাব বিস্তার করে দ্বিখন্ডিত করেছে অঙ্গসংগঠগুলোকে। যার ফলাফল হিসেবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই জেলা ও মহানগর বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোতে বিভক্তি এবং প্রতিটি অঙ্গসংগঠনেই বিদ্রোহী বলয় সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে জেলা ও মহানগরের অঙ্গসংগঠনের নেতারাই সাংগঠনিক দায়িত্বের বাহিরে গিয়ে আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নিজেকে জাহির করছেন।

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক এবং সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি উভয়ই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন। এছাড়া তাদের মনোনয়ন প্রত্যাশার বাহিরেও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল ইসলাম আজাদের পক্ষে কাজ করছেন সাদেকুর রহমান সাদেক। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মাহাবুব রহমান এবং সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু উভয়ই আলাদা আলাদা বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জন্য কাজ করছেন। আর এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বলয়ের প্রভাবে তারা প্রায়ই দেখা যায় আলাদা ব্যানারে স্বেচ্ছাসেবকদলের রাজনীতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে। এর নেপথ্যের কারণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মাহাবুব রহমান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান বলয়ে রাজনীতি করেন অপরদিকে কাজী মনিরুজ্জামানের রাজনৈতিক এলাকার প্রতিপক্ষ বিএনপির রাজনৈতিক নেতা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া আর সেই দিপু ভূইয়ার সাথে রাজনীতি করেন সোনারগাঁয়ে বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু।

আর এই দুই শীর্ষ স্থানীয় এবং জেলার রাজনীতিতে চরম প্রতিপক্ষ যার ফলে তাদের প্রতিপক্ষের কারণে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনেও জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের রাজনীতিতে প্রভাব পরবে বলয় ভিত্তিক প্রভাবের কারণে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে তারা কাজ নাও করতে পারেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মজিবুর রহমান শুধু সোনারগাঁ কেন্দ্রীক শ্রমিকদলের রাজনীতি করছেন। তাছাড়া সোনারগাঁয়ের বাহিরে জেলাজুড়ে তার তেমন কোন সমর্থক নেই। এছাড়া সোনারগাঁয়ে তার সমর্থক নেই বললেই চলে তার সমর্থকের যোগান দিয়ে থাকেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। যে কিনা নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রত্যাশী শুধু তার পক্ষেই কাজ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মজিবুর রহমান।

কিন্তু জেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক মন্টু মেম্বার কোন প্রকার বলয় ভিত্তিক রাজনীতিতে এখনো জড়াননি। নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলে জেলা কৃষকদলের সভাপতি ডা. শাহীন এবং সদস্য সচিব আলম নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কাজী মনিরুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল ইসলাম আজাদের পক্ষে শুধুমাত্র কাজ করেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার অঙ্গসংগঠনের নেতারা কমিটি গঠনের পূর্বে এর আগ মুহুর্ত থেকেই বিভিন্ন বলয়ে বিভক্ত হয়ে কাজ করেন। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের অঙ্গসংগঠনে বলয়ভিত্তিক রাজনীতির প্রকট আকাড় ধারণ করেছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রভাবে। কেননা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতৃত্বেই নিয়ন্ত্রিত হত অঙ্গসংগঠনগুলো। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ার পর থেকেই অঙ্গসংগঠনের রাজনীতিতে ভাঙ্গন ধরে।

এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর য্বুদল সর্বপ্রথমেই মহানগর বিএনপি বাহিরে গিয়ে মহানগর যুবদলের বাহিরে মাসুদুজ্জামানকে নিয়ে যুবসমাবেশ করে মহানগর বিএনপির নিয়ন্ত্রণের বাহির থেকে চলে গিয়েছেন ষ্পষ্ট করেন। কিন্তু তারা মহানগর বিএনপির মূলধারা ত্যাগ করায় মহানগর যুবদলে পদবঞ্চিত মাজহারুল ইসলাম জোসেফ এবং মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান আবারও মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে যাচ্ছেন মহানগর বিএনপির নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত ইসলাম রানা এবং সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু মহানগর বিএনপির মূলধারার নেতৃত্বে থাকলেও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান প্রচারণায় নামার পরই মহানগর বিএনপির মূলধারা বাহিরের মাসুদুজ্জামানের নেতৃত্বে কাজ করতে থাকেন। এদিকে সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু মহানগর বিএনপির মূলধারার সাথেই স্বেচ্ছাসেকদলের রাজনীতি করছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম মহানগর বিএনপির সাথে সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে তিনি বহিষ্কৃত। কিন্তু সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান কারামুক্ত হবার পর থেকেই মহানগর বিএনপির মূলধারাকে এড়িয়ে চলেন।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষকদলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান প্রচারণায় নামার পরই মহানগর বিএনপির মূলধারা বাহিরের মাসুদুজ্জামানের নেতৃত্বে কাজ করতে থাকেন। এদিকে সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ এখনো নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির মূলধারার রাজনীতির সাথেই সম্পৃক্ত রয়েছেন। মূলত, বিএনপির নয়া মনোনয়ন প্রত্যাশী নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন ভাবে লোভ লালসা দেখিয়ে তাদের নেতৃত্বে নিয়ে এসে অঙ্গসংগঠনের নেতাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম করাচ্ছেন। আর এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রভাবে জেলা থেকে শুরু করে মহানগরে অঙ্গসংগঠনের রাজনীতিতে দ্বিখন্ডিত হয়েছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন