Logo
Logo
×

রাজনীতি

বিএনপির ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতাদের পকেট ভারী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

বিএনপির ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতাদের পকেট ভারী

বিএনপির ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতাদের পকেট ভারী

Swapno

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মাঠে থেকে রাজনীতিসহ দলীয় সকল আন্দোলন সংগ্রামে অন্যতম ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিলেন মহানগর বিএনপি। বিগত কমিটি থাকাকালীন মহানগর বিএনপি একটু ঝিমিয়ে থাকলে ও এখন নতুন কমিটি আসার পর থেকেই গত ৩ বছর যাবৎ মহানগর বিএনপি রাজপথে সরব রয়েছে। কিন্তু এর আগে ২০২২ সালে কমিটি গঠনের পরের দিন তৈমূর আলম খন্দকারের উসকানীতে মহানগর বিএনপির কমিটি থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী মূল কমিটির সাথে বিদ্রোহ করেছেন। পরবর্তীতে তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপি ছেড়ে অন্য দলের মহা-সচিব হয়ে গেলে তার পিছনে থাকা মহানগর বিএনপির বিদ্রোহ নেতারা সকলেই তাকে ছেড়ে কালাম বলয়ে যোগদেন। কিন্তু এর মধ্যে বিএনপির আলোচিত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর, ২৮ সেপ্টেম্বর, ১ মাস ব্যাপী লাগাতার হরতাল-অবরোধ সবর্শেষ ২৪ সালের জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনেও ছিলো না বিদ্রোহ করা নেতারা। এভাবে দীর্ঘদিন পরিচালিত হওয়া পর গত ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর বিগত আন্দোলন সংগ্রামে না থাকে ও বড় নেতা হয়ে গেছেন সেই বিদ্রোহ করা (সদর-বন্দরের) ৬ জন বিদ্রোহ নেতা।

যারা কোন পক্ষেই গিয়েই কোন প্রকারের চমক দেখাতে পারেনি। তারা বিগত দিন থেকেই মহানগর বিএনপির ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতা হিসেবে পরিচিত, তারা সকলেই কর্মীহীন। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর পূণরায় নির্বাচনী হাওয়া উঠলে সেই হাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে উঠেছেন একাধিক প্রার্থী। বর্তমানে সকল আসন থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন সব থেকে বেশি আলোচনায় এই আসনে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় সকলের টার্গেট এই আসনেই। বর্তমানে এই আসনে দুই শিল্পপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে থাকলে ও প্রথম শিল্পপতি হিসেবে মাঠে এককভাবে ছিলেন মডেল গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান মাসুদ। যাকে ঘিরে তাকে সমর্থন দিয়ে ইতিমধ্যে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহ সেই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতারা আশ্রয় দিয়েছেন। তারা হলেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, যুগ্ম আহ্বায়ক সবুর খান সেন্টু, সদস্য ফারুক হোসেন, এড. বিল্লাল হোসেন, এড. শরিফুল ইসলাম শিপলু, আলমগীর হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন। বর্তমানে শিল্পপতি মাসুদকে সমর্থন দিয়ে এদের পকেট ভারী করে ফেলেছেন। কিন্তু এই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতারা। তা ছাড়া দলীয় কোন প্রেগামে এদের বড় কোন শোডাউন দেখেনি নগরবাসী। গত ৫ আগষ্টের পূর্বে বা পরবর্তীতে রাজপথে ছিলো না এদের কোন ভূমিকা। কিন্তু আজকে একজন শিল্পপতির টাকায় পকেট ভারী করে নিজেদের বড় নেতা দাবি করছেন এই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতারা। বর্তমানে এই ৬ নেতা মডেল মাসুদের বিভিন্ন পোগ্রামে বক্তব্যে দেন তারা রাজপথের ত্যাগী নেতা কিন্তু আন্দোলন সংগ্রামে বিগত দিনে থাকা কেউ তাদের চিনতে ও রাজি নয়। এদের দ্বারা (সদর-বন্দরের) ভোটারদের মন জয় করা যাবে না মনে মনে করছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। যার কারণ হিসেবে এরা যেখানেই পকেট ভারী করতে পারে সেখানেই অবস্থান নেয়। বিগত দিনে যেমন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুলের দিকে ছিলো কিন্তু এখন ভারী টাকার গন্ধে আরেক দিকে মুখ দিয়েছেন। এমনই টাকার ওজন অন্যদিকে বেশি হলে সেখানেও এই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতাদের যেতে বেশি সময় লাগবে না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার পর থেকেই কমিটি থেকে ১৫জন বিদ্রোহী নেতা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। যার ফলে মহানগর বিএনপি দুইভাবে বিভক্ত হয়ে পরে। কিন্তু ১৫ জন পদত্যাগ করার পরে ও কমিটিতে থেকে যায় আরো ২৬ জন আর এদেরকে নিয়েই দলীয় সকল কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত ও সদস্য সচিব টিপু। তাদের ব্যাপক নেতৃত্বে ৩ বছরের মধ্যে নানা বাধা ও ষড়যন্ত্রের পরে এখনো টিকে থাকাসহ ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন মহানগর বিএনপি। কিন্তু সেই বিদ্রোহ করা ১৫ জন নেতা বর্তমানে ছিন্নমূলে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন প্রভাবশালী পরিবারের তালিকায় থাকা এদের বাহিরে বাকি সকলেই আলাদা আলাদাভাবে যার যার রাজনীতি করছেন। এতোদিন মহানগর বিএনপির কয়েকজন মডেল মাসুদের সাথে থাকলে ও বর্তমানে মডেল মাসুদের সাথে মহানগর বিএনপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক সবুর খান সেন্টু ফুলেল তোড়া দিয়ে মাসুদের সাথে একত্মতা প্রকাশ করেছেন। এমন একে একে করে মহানগর বিএনপির সাথে বিদ্রোহ করা নেতারা কালাম বলয় ছেড়ে মডেল মাসুদের ছায়াতলে চলে যাওয়ায় এদিকে পুরাতন কর্মী সংকটে পরছেন আবুল কালাম। তা ছাড়া বর্তমানে এই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতারা নিজ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচন করলে ও সেখানে ভোট পাবে না বলছে তৃণমূলের অনেকেই কিন্তু এখন তারা ভোট চাইছেন শিল্পপতিরদের জন্য আর নিজেদের পকেট ভারী করছেন। মূলত তারা ভোট নয় পকেট ভারী করতেই নয়া নয়া ফাঁদ তৈরি করতে মরিয়া রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জানান, এই কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কমিটিতে থাকা কিছু নেতাকর্মী ছাড়া বাকি কেউ কোন কর্মী নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন না। সবাই জামাই সেজে আসে স্টেজের ভালো একটি চেয়ারে বসে তার পর কর্মসূচি শেষ করে চলে যায়। এ ছাড়া তাদের কোন কাজই নেই। এ বিষয় নিয়ে দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ দলের নেতাকর্মীরা তাদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করে কিন্তু কোনটাতেই কোন কাজ হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগষ্টের পরেই সেই ‘ওয়ান ম্যান শো’ নেতারা শিল্পপতিদের টাকা খেয়ে ফুলে ফেপে গিয়ে নিজেদের বড় নেতা হিসেবে দাবী করছেন।  


Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন