হেফাজতের ভোট নিয়ে আলোচনায় মাওলানা ফেরদৌসুর

যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ভোটের নানা হিসেবে কষছেন, পিছিয়ে নেই ইসলামী দলগুলোও। এছাড়া চলছে জোটের সমীকরণ, জোটকে সমর্থনসহ নানা বিচার বিশ্লেষণ। ভোটের হিসেব সামনে নিয়ে এসেছে হেফাজতের ইসলামের পূবর্তন সংগঠকদের। নারায়ণগঞ্জে বিগত বছরগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ওলামায়ে কেরামদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মাওলনা ফেরদৌসুর রহমান। জমিয়তের ইসলামী ঐক্যজোট এবং ওলামা পরিষদের পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১৩ সাল থেকে সক্রিয় ছিলেন হেফাজতে ইসলামের মতো একটি সংগঠনকে সামনে রেখে। ওলামায়ে কেরামদের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে কখনো কখনো সমালোচনা, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। যার ফলে নারায়ণগঞ্জ তো বটেই ২০১৩ সাল থেকে সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান। নারায়ণগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে ওলামায়ে কেরামদের পক্ষ হয়ে কাজ করতে গিয়ে সমালোচনা ও হামলার শিকার হয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেছেন ওলামায়ে কেরামকে সাথে নিয়ে। তাই ভোটের আগে হেফাজতের এই সমর্থন টানতে মাওলানা ফেরদৌসুরকে কাজে লাগাতে চাইবে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা।
সূত্র বলছে, বিগত সময়ে হেফাজতের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, ঈমানী আন্দোলন ও মানুষের অধিকারের আন্দোলনে তিনি নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন। এর ফলেই ওলামায়ে কেরামের ভেতরে এবং ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশি মামলার শিকার হন মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান। তিনি ৪৬টি মামলা কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে ১৬টি মামলা সহ কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও এখনো কয়েকটি মামলা কাঁধে নিয়ে চলছেন। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান নানা ভাবে হেনস্থা হন। এছাড়া বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথের ছবি থাকাকে কেন্দ্র করে নানা সমালোচনাও তৈরি হয়। তবে এসবে পাত্তা না দিয়ে তিনি নানা কর্মসূচিতেও এখন অবধি সচল রয়েছেন। হেফাজতে ইসলামের মতো বৃহৎ একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যার ফলে আগামী নির্বাচনে ভোট টানতে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজে আসবে মাওলানা ফেরদৌসুর। সূত্র জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি অংশ তার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে নেতিবাচর প্রচরণায় সক্রিয় ছিলেন। তাকে নেতৃত্ব থেকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন তারা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব ঠিকই ধরে রাখেন তিনি। তার সমর্থকদের দাবি, ৫ আগস্টের পর থেকে গভীর পর্যবেক্ষণে জানা যায় ম‚লত তিনি ওলামায়ে কেরামের স্বার্থের জন্য কাজ করতে গিয়েই বিভিন্ন সংসদ সদস্যদের কাছে লিয়াজু করতে হয়েছে। বড় বড় ওলামায়ে কেরামের পক্ষ হয়ে কাজ করতে গিয়েই তিনি এককভাবে সমালোচনার শিকার হয়েছেন। ওলামায়ে কেরামের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কখনো এই দরবারে, কখনো ওই দরবারে যেতে হয়েছে তাকে। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যাদের জন্য তিনি লিয়াজু করেছেন, তারাই তাকে ট্যাগ লাগিয়ে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করে। তারা বলছেন, এত জুলুম-নির্যাতনের পরও তিনি আলেমদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। তার বেশ কয়েকজন সমর্থক জানান, তার একটি ভাড়া মাদ্রাসা ছিল, সেটিও শেষ হয়ে গেছে। তিনি একটি মসজিদে খুতবা দিতেন, সেই মসজিদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদের মাদ্রাসা, মসজিদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য অক্ষত থাকলেও মাওলানা ফেরদৌসু রহমান হারিয়েছেন । তিনি হারিয়েছেন তার মাদ্রাসা, তার মসজিদ, তার ঐতিহ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলছেন, যাদের জন্য মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান রাতদিন পরিশ্রম করে কাজ করেছেন, মূলত তারাই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা ভেবেছিল, সরকারের বিদায়ের সাথে সাথে ‘ওসমানীয় ট্যাগ’ যদি তাদের কাঁধে লাগে, তবে তাদের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। এই কারণে সেই ট্যাগ এককভাবে মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানের কাঁধে চাপিয়ে তারা নিজেদের সাধু সাজাতে চেয়েছিল। অথচ সবকিছু হারিয়েছেন মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান, আর যাদের জন্য করেছেন তারাই এখন তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
সম্প্রতি শহীদ মিনার থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন মাওলানা ফেরদৌসুর। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ-৫ পাঁচ আসনে জমিয়তের মনোনয়ন পাওয়ার পর তাক লাগানো একটি শোডাউন করে আবারও আলোচনায় আসেন তিনি। সূত্র জানিয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের সংগঠিত হয়ে মাঠে নামছেন মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান।