Logo
Logo
×

রাজনীতি

আলোচনায় জামায়াতের প্রার্থী আব্দুল জব্বার

Icon

যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

আলোচনায় জামায়াতের  প্রার্থী আব্দুল জব্বার

আলোচনায় জামায়াতের প্রার্থী আব্দুল জব্বার

Swapno

আগামী  ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় আলোচনা সভা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক দল গুলোর সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা। তবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সনের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।  তবে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচনের পরে নির্বাচন নিয়ে আওয়াজ কম শুনা যাচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় ভাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর এক প্রার্থী হিসেবে মাঠে ঘাঠ থেকে শুরু করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। বিপরীতে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে মাঠে রয়েছেন। আগামী নির্বাচন কঠিন হবে বলে বার বার মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড.ইউনুস ২০২৬ সনের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন হতে পারে বলে ঘোষনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের সময় নিয়ে এমন অবস্থার মধ্য বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় নিজেদের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে ‘সংস্কারকে’ বেশি গুরুত্ব দেওয়া দল জামায়াতে ইসলামী।  সেই হিসেবে ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দলের ঘোষিত প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মানুষের সাথে মিশে নিজেদের অবস্থান তৈরী করছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠে নেমে মানুষের সাথে গণসংযোগ করছেন।

বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ মহানগর আমীর আব্দুল জব্বার পুরোদমে মাঠে নেমে প্রচারনায় রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তিনি নানা কাজের মাধ্যমে মানুষের মাঝে নিজেকে তুলে দরছেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সেবামুলক কাজ করছেন।

দীর্ঘ দিন জামায়াতে ইসমালমীর নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর কার্যালয় বন্ধ করে রেখেছিল পালিয়ে যাওয়া দল আওয়ামী লীগ। এমনকি দলটির নিবন্ধন বাতিল করে তাদের কোন ধরনের কার্যক্রম করতে দেয়া হয় নাই। আর এতে করে দলটি প্রকাশ্যে এসে মানুষের মাঝে তেমন কোন কাজ করতে পারে নাই। কিন্তু গত বছরের ৫ আগষ্টের নারায়ণগঞ্জ জামায়াতে ইসলামী প্রকাশ্যে এসে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে পাড়া মহল্লার মানুষকে নিজেদের কাছে টানছেন। জুলাই আগষ্টে ছাত্র জনতার আহত নিহত পরিবারের পাশে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে সবার আগে জামায়াতে ইসলামী পাশে দাড়িয়েছে। এছাড়া কালিরবাজার দোকান পড়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়িয়েছে। ফতুল্লার জলাবদ্ধতা মানুষের চলাচলের জন্য ফ্রি ভ্যানে পাড়া পাড়ের ব্যবস্থা করে মানুষের মন জয় করে নিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বার। যা অন্য কোন দলের তেমন কেউ করে দেখাতে পারে নাই।  

নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী রাজনীতিতে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা জানিয়ে দেয়ার আগেই জেলার ৫ টি আসনে নিজেদের প্রার্থীদের মেলে ধরতে শুরু করেছে দলটি। বিএনপির সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিপরীতে নিজেদের ধীরস্থির রাজনীতি এবং জনগণের কাছে যাওয়ার প্রবনতা তাদের আলাদাভাবে পরিচিত করিয়েছে। যেখানে ৫ আগস্টের পর থেকে বি.এন.পি, এন.সি.পি, হেফাজত অভ্যন্তরীন বিরোধে বিতর্কের জালে জড়িয়েছে, সেখানে নিজেদের ক্লিন ইমেজ ধরে রেখে সকল দলের সাথে ঐক্য জারি রেখেছে জামায়াত। পাশা পাশি মাঠে নেমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রার্থীদের নিজ এলাকায় সংযোগ শুরু করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় ‘জামায়াতের প্রার্থীরা এখন স্ব স্ব আসনের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন জনগনের কাছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমলে তুলনামূলক বঞ্চিত বা অবহেলার শিকার হওয়া অঞ্চলের বাসিন্দারা সাদরে গ্রহণ করছেন জামায়াতের প্রার্থীদের।

সুত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মহনাগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় সভা করে দলীয় কার্যক্রমের পাশা পাশি বিগত সময়ে নিজেরা কি পরিমান নির্যাতিত হয়েছে তা তুলে ধরছেন। এছাড়া ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য যা করনীয় তা তুলে ধরছেন। সেই সাথে তার নির্বাচনী এলাকার ফতুল্লা পাড়া মহল্ল্য়া গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলছেন। কোন এলাকার কি সমস্যা তা জেনে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।

অপরদিকে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির একঝাক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নেমেছে। নির্বাচন সামনে রেখে নিজেদের আসন পুনরুদ্ধারে ভোটের মাঠে নেমেছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থী। নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপি সভাপতি মামুন মাহমুদ, সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি শাহ আলম এবং জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি তৎপরতা চালাচ্ছেন। একই সাথে তারা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। এছাড়া বিএনপির জোট থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়াই করা জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীও প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। তিনিও আগামী নির্বাচনে বিএনপি জোট থেকে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন। জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার আমির মাওলানা মো. আবদুল জব্বারের বিপরীতে এখনো পর্যন্ত বিএনপির সম্ভাব্য ৫ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী নির্বাচন কঠিন হবে বলে বার বার নেতাকর্মীদের সতর্ক করলেও তারা এতে কর্ণপাত করছে না। ত্রাা নিজেদের মত করে মাঠে রয়েছে।

তথ্যমতে, দেশে এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে কোন রাজনৈতিক দল কত ভোট পাবে, এমন পরিসংখ্যান উঠে এসেছে বেসরকারি এক জরিপে। তাতে দেখা গেছে, বিএনপি সর্বোচ্চ ৪১.৭ শতাংশ ভোট পাবে। যদিও তা এখন আরও তলানীতে নেমেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জামায়াতে ইসলামী পাবে ৩১.৬ শতাংশ ভোট। তাদের ভোট ব্যাংক বেড়েছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। আর ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ৫.১ শতাংশ ভোট। উন্নয়ন গবেষণা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইনোভিশন কনসালটিং বাংলাদেশ পরিচালিত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘জামায়াত তার নিজস্ব রাজনৈতিক বুদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। কারও সাথে বিরোধ নয়, সবার সাথে ঐক্য এই মন্ত্রকে সামনে নিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যতিত বাকি সবার সাথেই সুসম্পর্ক রেখেছে তারা। নেতাকর্মীদের ঝুট বাণিজ্য, ঘাট দখল, হাট দখল, রাস্তার ইজারা, মাঠের ইজারা নিয়ে আর্থিক সংঘাতে যাবার প্রয়োজন হয়নি বিএনপি বা অন্য দলগুলোর সাথে। এই দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে অন্যান্য দলের প্রার্থীরা।  


Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন