-copy-68bfec3f9a22e.jpg)
তফসিল না হতেই রাজনৈতিক উত্তেজনা
# স্বেচ্ছাসেবকদল- জমিয়ত নেতাদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
ত্রয়োদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে। একই সাথে দল থেকে মনোনয়ন পেতে দলীয় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি নানা সামাজিকমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকে আবার নির্বাচন কেন্দ্রিক বিভিন্ন এলাকায় অফিস খুলে দলীয় কার্যক্রমকে চাঙ্গা করছে। বিশেষ করে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা সাইনবোর্ড এলাকায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শাখা অফিস চালু করে দলীয় কার্যক্রম করা হয়। কিন্তু অফিস উদ্বোধনের সপ্তাহ পার না হতেই তা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। যদিও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাইনবোর্ড জোন শাখা অফিস ভাঙচুরের জন্য জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাজুদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম জেলার সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান। বিপরীতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাজেদুল এই জমিয়ত নেতার বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ তুলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে জমিয়তের অফিস ভাঙচুর করলো কারা।
এদিকে পাল্টা পাল্টি অভিযোগে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেননা বিগত সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ হরদমে চলেছে। এমনকি তখন নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়ার মত ঘটনা স্বাভাবিক ছিল। তবে ২০২৪ সনের ৫ আগষ্টের পরেতো এখন আর ফ্যাসিস্টরা নেই। তাহলে তাদের কালাচারাল কারা ফিরিয়ে আনতে চায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফতুল্লা সাইনবোর্ড জোন শাখায় অবস্থিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেন দলটির নেতৃবৃন্দ। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। দলটির অভিযোগ, স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এই হামলা চালিয়েছে। নেতাকর্মীরা জানায়, রোববার বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে হামলাকারীরা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা সাইনবোর্ড জোন শাখার কার্যালয়ের নিচতলায় ভাঙচুর চালায়। এ সময় কার্যালয়ের সামনের ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দলটির নেতাকর্মীদের শান্ত করে।
এই ঘটনায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, “ভ্ইুঘরের ‘রূপায়নে ভাগিনা’ নামে পরিচিত মাজেদুল, বিপ্লব ও সোহাগের বাহিনীর নেতৃত্বে আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে।“আমরা ডিসি, এসপি ও ফতুল্লা মডেল থানার ওসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনজনকে গ্রেপ্তারের দাবী জানাই। কেননা তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে, প্রাচীন একটি সংগঠনের কার্যালয়ে আঘাত করার এমন দুঃসাহস তারা কোথায় পেয়েছে। এই গ্রুপের কোনো দলীয় পরিচয় নেই এবং তারা এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে থাকে বলে এলাকার মানুষ আমাদের জানায়। দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের প্রতিবাদে শিগগিরই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হবে।
অন্যদিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান কর্তৃক কার্যালয় ভাঙচুরের আনা অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার’ বলে দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য কাজী মাজেদুল হক। গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ভূঁইগর রূপায়ণ টাওয়ারে নিজ কার্যালয়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
কাজী মাজেদুল হক বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে আমি জানতে পারি যে, সাইনবোর্ডের জমিয়তে উলামা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান আমাকেসহ তিনজনকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট। আমরা কেউই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। গত ৬ সেপ্টেম্বর একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার মার্কেট দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
এই ঘটনায় জমিয়তে উলাময়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাজেদুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। একই সাথে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ জানিয়ে তা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। যদি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অফিস ভাঙচুর না করে তাহলে কারা ভাঙ্চুর করেছে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া নির্বাচনের আগে এই ধরনের পরিস্থিতি হলে তাহলে নির্বাচনের সময় কি হবে।