Logo
Logo
×

রাজনীতি

নতুন সমীকরণে ঝুঁকছে বিএনপি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

নতুন সমীকরণে ঝুঁকছে বিএনপি

নতুন সমীকরণে ঝুঁকছে বিএনপি

Swapno

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারীর প্রথমার্ধে হতে পারে বলে ঘোষণা রয়েছে। সে দিকে লক্ষ্য রেখে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের দিকে ঝুঁকছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এই পর্যায়ে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে দলটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জে একে একে জমে উঠা শুরু করেছে নির্বাচনী পরিবেশ।


মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই বর্তমানে মাঠে সরব রয়েছে এবং একের পর এক দলীয় পোগ্রাম বা নিজস্ব পোগ্রামে নির্বাচনী বিষয়ে আলোচনা করছেন। বিএনপি নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ১৮০ দিনের মধ্যে কি কি কাজ করবেন তারেক রহমানের সেই দিকে নির্দেশনা বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা জনগণের মধ্য পৌঁছে দিতে কাজ করছেন। এদিকে বিভিন্ন আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্য প্রত্যাশী বক্তব্যের মাধ্যমে তুলোধুনোসহ নানান নির্বাচন কেন্দ্রিক কর্মকান্ড নারায়ণগঞ্জ জুড়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম রয়েছে ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন নজর।

যারা বিগত দিনে রাজপথে কিংবা মিটিং মিছিল বা সক্রিয় রাজনীতি না করলেও বিএনপির বর্তমান সুসময়ে বিএনপির রাজনীতিতে ফায়দা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি মনা ব্যবসায়ীসহ বিএনপির অনেক নেতারা। যা নিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করা বিএনপি নেতারা ফুঁসে উঠেছে। বিএনপি নেতারা ব্যবসায়ীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে গ্রহণযোগ্য নজরে দেখছেন না। তা ছাড়া বর্তমানে যোগ্য-অযোগ্য অনেকেই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে উঠছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে বর্তমানে ৪ থেকে ৫ জন করে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে নির্বাচনকে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় নয়া নয়া মেরুকরণে রূপ নিচ্ছে।


সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন বেশকজন ব্যবসায়ী নেতাসহ বিএনপির বহু থানা, উপজেলা পর্যায়ের নেতারা। তা ছাড়া আন্দোলন সংগ্রামে হাত অর্থের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিএনপি মনা অনেক ব্যবসায়ী যেমন মনোনয়ন চাচ্ছেন তেমনই গত ৫ আগষ্টের পর নানাভাবে লুটপাটে জড়িয়ে কামানো টাকা দিয়ে ও অনেকে চাচ্ছেন মনোনয়ন। অনেকেই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অতীতে রাজনীতির মাঠ ছেড়ে ব্যবসায়িক কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন।


স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ আলোচনায় আছেন মডেল গ্রুপের মালিক মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও প্রাইম গ্রুপের মালিক আবু জাফর আহমেদ বাবুল। এদের মধ্যে মাসুদ এক সময় বিএনপির যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সেই বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ব্যবসা ঘোছাতে বিএনপির রাজনীতি থেকে সটকে পড়েন। কিন্তু সর্বশেষ ১৫ হাজার মানুষের সাথে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভূরিভোজের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করার মন্তব্য ব্যক্ত করেন তিনি।


অপর দিকে আবু জাফর আহমেদ বাবুল বিএনপি মনা ব্যবসায়ী নেতা। গত পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ নগরী সহ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার ফেস্টুন ব্যানারে প্রচারণা চালিয়েছেন আবু জাফর আহমেদ বাবুল। তিনি প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে। দুজনই নির্বাচনের আভাস দিলেও তারা কোন আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি সেটা পরিষ্কার করেননি এখনো। তারা বিএনপির রাজনীতি সরাসরি না করায় রাজপথের নেতাকর্মীরা বিব্রত হচ্ছেন।


বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছে, মনোনয়ন যুদ্ধে এরা বিএনপির হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশা করবেন এটা নেতারা কখেনোই আশা করেনি। যাদের মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকা নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হতে পারে।  অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসন থেকে আবারো নির্বাচনের পথে ব্যবসায়ী নেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির।


তিনি বিজেএমইএর নেতা। এর আগেও তিনি সংগঠনটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত বিজেএমইএর সভায় উপস্থিত ছিলেন কাজী মনির। ২০১১ সালের বিএনপির ডাকা হরতালে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় আওয়ামীলীগের লোকজন কাজী মনিরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ভাংচুর চালায়। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হলেও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে কখনই ছিলেন না সক্রিয়। ব্যর্থতার কারনে তার কমিটি বিলুপ্ত করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। ২০০৯ সালে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে কাজী মনির বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে পরাজিত হোন। এর পর থেকে দলীয় নেতা ছাড়া ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দিতে শুরু করেন এই কাজী মনির।


যাকে ঘিরে তিনি ব্যবসায় বেশি মগ্ন ছিলেন রাজনীতি ফেলেই। অন্য দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে সামনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাবেন। ২০০৯ সালে শুধুমাত্র ফতুল্লা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে করে প্রয়াত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে পরাজিত হোন তিনি।


২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শাহআলম। তবে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদে বহাল থাকেন। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় না থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের পুর্ব পর্যন্ত রাজনীতির আলোচনায় ছিলেন শাহআলম।


পরবর্তীতে আবারো তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এদিকে বিএনপিতে তিনি তার বলয়ের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে নির্দেশনা ও ডোনেশন করলে ও রাজপথে অনেকটাই নিষ্কিয় ভূমিকায় থাকায় শাহ-আলমে ও ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ী অনেকেই।


তা ছাড়া ও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৩ ও ১ আসনে বাড়ছে প্রার্থী সংখ্যা। বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহম্মেদ টুটুল, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভূঁইয়া অন্যদিকে সোনারগাঁও এলাকায় একে একে বাড়ছে প্রার্থীর সংখ্যা যাকে ঘিরে মেরুকরণে সৃষ্টি হচ্ছে।


ইতিমধ্যে ৩ যোগ্যতা সম্পূর্ণ ব্যক্তিরাই পেতে পারে বিএনপি মনোনয়ন যেখানে উল্লেখ রয়েছে, যাকে মনোনয়ন দিলে সাধারণ ভোটাররা খুশি হবে, এমন প্রার্থীর হাতেই নির্বাচনি টিকিট দেবে বিএনপি। তবে এক্ষেত্রে মৌলিক নীতি অনুসরণ করা হবে। এজন্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতি হিসাবে তিনটি যোগ্যতাকে অন্যতম মানদণ্ড হিসাবে সেট করা হয়েছে। এগুলো হলো-গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রামে দেশ ও দলের যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, দ্বিতীয়ত, যিনি সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং এলাকার জনগণের কাছে একজন ভালো মানুষ হিসাবে সুপরিচিত।


তৃতীয়ত, ভোটের রাজনীতিতে যিনি তার নির্বাচনি এলাকায় বেশি জনপ্রিয়। দলটির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এমন মানদণ্ডের কথা নিশ্চিত করেছে। বিএনপির এই ঘোষিত ৩ যোগ্যতা সম্পূর্ণের মধ্য ব্যবসায়ী নেতারা কেউ পরে না তা সুস্পষ্ট। এই যোগ্যতা সম্পূর্নতায় বিএনপির নেতাকর্মীদের হিসেবে চিহ্নিত যারা আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আলোচিতদের মধ্যে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক সাংসদ আবুল কালাম। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে রয়েছে, সাবেক সাংসদ আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন,


ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ব্যাপক আলোচনায় মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, অন্যদিকে প্রার্থী রয়েছে কাজী মনিরুজ্জামান, শরীফ আহম্মেদ টুটুল, মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, আতাউর রহমান আঙ্গুর, মাহমুদুর রহমান সুমন,


পাড়ভীন আক্তার, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় মুখে সেই আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন যদি তিনি এই আসনে নির্বাচনে অংশ না নেয় তা হলে রেজাউল করিম ও আজহারুল ইসলাম মান্নান, ইমতিয়াজ বকুল, আপেল এর বাহিরে ও মনোনয়ন যুদ্ধে আরো অনেক বিএনপি নেতারা অংশ নিবে এদের মধ্যে কেউ নিবে মনোনয়ন বোর্ডে গিয়ে হাত মিলাতে আবার কেউ নিবে ড্যামী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে।


তা ছাড়া বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোনয়ন দিতে ক্লিন ইমেজ খুজঁছেন নারায়ণগঞ্জ জুড়ে। যাকে ঘিরে গত ৫ আগষ্টের পরবর্তী সময়ে লুটপাটসহ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পরা বিএনপি নেতারা শরীরের ধুলো জেড়ে ক্লিন ইমেজে পরিণত হতে নানান কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।


Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন