Logo
Logo
×

রাজনীতি

কচ্ছপ গতিতে জেলা বিএনপি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

কচ্ছপ গতিতে জেলা বিএনপি

কচ্ছপ গতিতে জেলা বিএনপি

Swapno



জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম যেন কচ্ছপগতিতে ঠেকেছে। কারণ জেলা বিএনপির শীর্ষ পদধারীর মধ্যে অগ্রভাগেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। যেটা জেলা বিএনপির কমিটির নেতৃত্বে আশিয়ান হওয়ার পূর্বে ছিল না। বর্তমানে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে থাকা নেতারা দলীয় কার্যক্রম পালনের নামে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীতার বিষয়টি স্পষ্ট করছেন। এছাড়া জেলা বিএনপির সাংগঠনিক ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়গুলো মোটা দাগে থাকলেও সেগুলো নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই।


দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নব কমিটিকে ঘিরে ছিল নানা প্রত্যাশা এবং জেলায় বিএনপির রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে একটি শক্তিশালী সংগঠনের রূপ দেখার প্রত্যাশায় ছিল তৃণমূল বিএনপি। তবে সেই প্রত্যাশা এবং পরিবর্তনকে প্রধান্য না দিয়ে জেলা বিএনপিতে সাইনিং পাওয়ারে থাকা নেতারা ব্যক্তিগত রাজনীতিকে পাকাপোক্ত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন যার মধ্যে তাদের নির্বাচন কেন্দ্রীক রাজনীতি অন্যতম। যার কারণে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে দীর্ঘদিন ধরে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।


এছাড়া জেলা বিএনপিতে নব কমিটির অবদান বলতে আহ্বায়ক পূর্ণ কমিটি গঠন করতে পেরেছেন। তবে জেলার প্রতিটি ইউনিটকে ঢেলে সাঁজানোর জন্য তৃণমূলের তীব্র প্রত্যাশা থাকলে সেই প্রত্যাশা নিয়ে ভাবছে না জেলা বিএনপির নব কমিটি। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি গ্রুপিং রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে দলীয় কার্যক্রম পালন করার লক্ষ্যে একটি কৌশলী কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্র নেতা নির্বাচিত করলেও পর্দার অর্ন্তরালে ফের নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির গ্রুপিংয়ের রাজনীতি গোপনীয় ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরেই সাংগঠনিক গতিশীল রাজনীতির প্রত্যাশায় তৃণমূল বিএনপি।


তবে তাদের প্রত্যাশা থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছেন জেলার নেতারা। কেননা সাংগঠনিক কার্যক্রম পালনে বণিবনা বলয় ভিত্তিক গ্রুপিং রাজনীতির সাথে ফের মিশে যাচ্ছে জেলা বিএনপির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। সূত্র বলছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি  অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক  মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মাসুকুল ইসলাম রাজিব, শরীফ আহম্মেদ টুটুল এবং মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে সদস্য করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে গত ২৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত।


এছাড়া জেলা বিএনপির কমিটিতে  মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক  মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মাসুকুল ইসলাম রাজিবকে সাইনিং পাওয়ার দেন কেন্দ্র। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৩৩ জনের মধ্যে অধিকাংশ নেতাই থানা উপজেলার নেতৃত্বে রয়েছেন। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরই অভিযোগ করতে থাকেন জেলা তৃণমূলের নেতারা বলয় ভিত্তিক গ্রুপিংয়ের রাজনীতিকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে কেননা থানা পদধারী অনেক নেতাই জেলার পূর্ণ কমিটিতে জায়গা করে দিয়েছেন। এদিকে পদবঞ্চিত অনেক নেতা এবং বলয় ভিত্তিক রাজনীতির প্রভাবে নেতা সমর্থকদেরও ঠাঁই দেয়া হয়নি।


যার ফলে জেলা বিএনপি কমিটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। পরবর্তীতে জেলা বিএনপির বিভিন্ন সভা সমাবেশ কর্মসূচিতে গ্রুপিং রাজনীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তবে এরমধ্য জেলা বিএনপির পূর্ণ কমিটির পর এর পরবর্তী স্টেজ হিসেবে থানা উপজেলার কমিটি গঠনের জোড়ালো দাবি উঠলেও থানা উপজেলার কমিটি গঠনে কোন প্রকার কার্যক্রম গ্রহণ করছে না। তবে থানা উপজেলার কমিটি পরিবর্তন বা বিলুপ্ত করা হবে এমন ভাবে আশ্বস্ত করেন জেলা বিএনপি।


কিন্তু এমন আশ্বস্তের পর এখনো সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি ফেরাতে পারেনি। এরমধ্যে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধির বাহিরে নিজেদের ব্যক্তিগত রাজনীতি পাকাপোক্ত করার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নির্বাচনী রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকায় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং সাইনিং পাওয়ারে থাকা জেলা বিএনপির কমিটিতে আহ্বায়ক থাকা মামুন মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মাসুকুল ইসলাম রাজিব যেন সংগঠনের কথা ভুলেই গেছেন। কারণ প্রত্যেকেই যার যার নির্বাচন আসনে মাঠ পর্র্যায়ের দলীয় প্রোগ্রাম পালনের ব্যস্ত সময় পার করছেন।


এরমধ্যে মাসুকুল ইসলাম রাজিব পূর্বে জাতীয় নির্বাচন প্রার্থী হবার কথা স্পষ্ট না করলেও তার পক্ষে এখন নারায়ণগঞ্জ-৪,৫ দুটি আসনেই প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে। সেই সাথে রাজীবও এই দুটি আসনের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালানা করছেন।


এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত প্রার্থী হিসেবে মামুন মাহমুদ এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া নিজেদের নির্বাচনী কার্যক্রমের একটি অংশ হিসেবে দলীয় বিভিন্ন সভা সমাবেশ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। এদিকে তাদের ঘাড়ে যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আওতাধীন উপজেলা এবং থানা মেয়াদত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত শেষে পুর্নগঠন করার তৃণমূল পর্যায় থেকে ব্যাপক দাবি রয়েছে।


জেলা বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক মেরামতের একটি অংশ হচ্ছে থানা উপজেলার কমিটি পুর্নগঠন। কিন্তু জেলা বিএনপির সাইনিং পাওয়ারে থাকা নেতাদের প্রত্যেকেই জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এখনই তারা থানা উপজেলার কমিটি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে চাচ্ছে না। কেননা থানা উপজেলার কমিটিতে হাতে দেয়াই মানে তাদের নির্বাচনে প্রস্তুতিতে গুরুতর ক্ষতি সাধন হয়ে যাওয়া। যার জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে তাদের মন নেই। কচ্ছপগতিতে চলছে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন