বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের ঘোষনা দিয়েছেন দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর সেই নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সারাদেশের প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দের মাঝে দলীয় নবায়ণ ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করা। তারই ধারাবাহিতায় নারায়ণগঞ্জেও থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীদের এই সদ্য ফরম দিতে বলা হয়েছে কিন্ত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাাঁয়ে এই সদস্য ফরম নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উছেঠে।

খোঁজ নিয়ে যানা যায় এই নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বিগত দিনে যারা বিএনপির রাজনৈতির সাথে জড়িত থেকে জুলুম অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাদেরকে এই সদস্য ফরম দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে।

আরও জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান যিনি প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর মাঝে এই সদস্য ফরম সুন্দরভাবে বন্টন করার কথা থাকলেও তিনি  সেই কাজটি করেননি। অভিযোগ রয়েছে, সোনারগাঁয়ের জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা এই ফরম পেলেও প্রকৃত নেতাকর্মীরা দলীয় সদস্য ফরম না পাওয়াতে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

শুধু তাই নয় দলীয় নেতাকর্মীদের ফরম না দিয়েই তিনি ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন আর সেটা নিয়ে সোনারগাঁ এখন উত্তাল। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে এমন প্রতারনা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন এমনকি কোন কোন নেতাকর্মী তার শাস্তিও দাবি করেছেন।
গত ২২ এপ্রিল সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নে একটি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আর এই আয়োজনে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক আশরাফ প্রধানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন। আর এই অনুষ্ঠানেই মান্নানের প্রতি প্রচন্ড ক্ষোভ ঝাড়লেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এসময় বিএনপির এক নেতা বলেন, আমরা যখন তাদের কাছে দলীয় ফরম চাই তখন তারা আমাদেরকে দলীয় ফরম দিতে অস্বীকৃতি জানায় এমনকি ফরম তাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আনতে বলেন। সোনারগাঁ থেকে তাদের কোন দলীয় সদস্য ফরম দেওয়া হবেনা।

এ সময় সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক আশরাফ প্রধান সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মান্নানকে উদ্যেশ্যে করে বলেন, আমরা বিগত দিনে রাজপথে ছিলাম আজকে আমাদেরকে ফরম দেওয়া হচ্ছেনা  আমরা আপনার বিচার চাই লাগলে আমরা হাইকোর্ট যাবো আপনার নামে মামলা করবো।

কেন্দ্রে আপনার নামে নালিশ জানানো হবে, কেন আপনি আমাদের দলীয় ফরম নিয়ে ছলচাতুরি করছেন। এই সোনারগাঁবাসী জানে কারা ৫ তারিখের পর বিভিন্ন ফ্যাক্টরী দখলে নিয়েছে এবং প্রতিনিয়তই চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। সোনারগাঁয়ের মানুষই আপনার মুখোশ খুলবে।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে ৫ টি আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ৩ আসন সোঁনারগাও এইটি গুরুত্বপূর্ণ আসন।

দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে এই সোঁনারগায়ের। দীর্ঘ ১৭ বছর এই আসনটি আওয়ামী লীগ  জাতীয় পার্টির দখলে ছিলো। তবে ৫ আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় হয়। আর ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ পরিচালনায় ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রধান উপদেষ্টা করার প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ইতিমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে এক বৈঠকে  আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দেন।

আর সেই ঘোষণার পর পরই সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও নির্বাচনের অনেকটা আভাস চলে এসেছে। তবে নারায়ণগঞ্জের ৫ আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ৩ আসন সোনারগাঁর আসনটি নিয়েই ব্যাপক আলোচনা সমালোনার সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে এই আসনটিতে বিএনপির হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী এই আসনের সাবেক এমপি রেজাউল করিম অন্যদিকে এলাকায় আধিপত্য দখলবাজী সহ নানান অপকর্মে জড়িত সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান।তিনিও এই আসনটিতে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।

তবে যখনই নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন আসন থেকে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করে তখনই পাল্টে যায় সোনারগাঁয়ের রাজনৈতির দৃশ্যপট। সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দরা নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনকে এই আসনের নির্বাচন করার জন্য জোর দাবি জানিয়ে যাচ্ছে।

আর সেই খবর শুনেই আজহারুল ইসলাম মান্নানের সমর্থকদের মাথায় হাত পড়েছে। তাই তারা সোনারগাঁয়ের যারা গিয়াস উদ্দিনকে সমর্থন করছেন সেই সকল নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে গিয়াস উদ্দিন সোনারগাঁয়ে শক্ত অবস্থান তৈরী করতে না পারে।