Logo
Logo
×

রাজনীতি

জামায়াতের আগাম পাঁচ প্রার্থী ঘোষণায় ব্যাপক আলোচনা

Icon

রাকিবুল ইসলাম

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

জামায়াতের আগাম পাঁচ প্রার্থী ঘোষণায় ব্যাপক আলোচনা

জামায়াতের আগাম পাঁচ প্রার্থী ঘোষণায় ব্যাপক আলোচনা

Swapno

 আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে ডিসেম্বরে তা নিয়ে চলছে আলোচনা। যদিও আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের রূপরেখা চাইছে। জামায়াতে ইসলামী শুরুতে নির্বাচনের তাগিদ না দিলেও কিছুদিন আগে দলটির আমির শফিকুর রহমান দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের কথা বলেছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের দিন-তারিখ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা আসেনি। যদিও অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন। ভোটের সময় নিয়ে এমন অবস্থার মধ্য বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় নিজেদের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে শুরু করেছে ‘সংস্কারকে’ বেশি গুরুত্ব দেওয়া দল জামায়াতে ইসলামী।



এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নির্বাচনের আগে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছিল দেশের অন্যতম এই বড় দলটি। এমনকি এ নিয়ে তাদের এক সময়ের মিত্র ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গেও তাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনে এক ভাবে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের-৫টি আসনের জামায়ায়তে ইসলামী দলের প্রার্থী ঘোষনা হয়েছে। যেখানে নির্বাচনের দিনক্ষন নির্ধারণ হয় নাই সেখানে জামায়াতে ইসলামী কেন এত তাড়াতাড়ি প্রার্থী ঘোষনা করলো। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জে জেলাটি গুরুত্বপুর্ণ হওয়ায় এখানকার ৫টি আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে।
 জানযায়, দেশজুড়ে দলীয় ইউনিটগুলোকে সক্রিয় করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে দেশের বিভিন্ন জেলা সফর করছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তারই অংশ হিসেবে ৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন।



 জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে যখন জেলায় জেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তখন একইসঙ্গে দলটি ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি নির্বাচনি মঞ্চে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এক সময়ের জোটসঙ্গী বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধের প্রেক্ষাপটে জামায়াত এ ধরনের একটি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই তাদের এই ধরনের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে ৩ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের কাঞ্চন শাখার একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে প্রকাশ করা হয় ৫টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ও তালিকা। বিষয়টির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে তালিকাটি শেয়ার করেন ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া। সেই সাথে প্রার্থীদের জন্য দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ-১ আসন তথা রূপগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসাইন মোল্লা। তিনি ইতিপূর্বে জামায়াতে ইসলামীর হয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ-২ আসন তথা আড়াই হজার থেকে নির্বাচন করবেন অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা। তিনি দুপ্তারা ইউনিয়নের সাবেক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সমাজকল্যাণ সম্পাদক। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন তথা সোনারগাঁও উপজেলা থেকে নির্বাচন করবেন কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া। তিনি ইতিপূর্বে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন তথা ফতুল্লা-সিদ্দিরগঞ্জ থেকে নির্বাচন করবেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার। তিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন তথা সদর-বন্দর আসন থেকে নির্বাচন করবেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, মহানগর ও জেলার দীর্ঘদিনের সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমেদ।



প্রকাশিত তালিকা দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে যোগ্য এবং নির্বাচনী মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। পাঁচটি আসনে নির্বাচনে সবগুলোতে জয় না পেলেও পেতে পারবেন সম্মানজনক ভোট। কোন কোন প্রার্থী একাধিক আসনে জয় ছিনিয়ে আনতেও সক্ষম। জামায়াতের দল হিসেবে শক্ত অবস্থান থাকলেও বেশিরভাগ এলাকাতেই দলটির সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী নয়। সে কারণেই দলীয় নেতৃত্ব চাইছেন প্রতিটি এলাকাতেই যেন সংগঠন হিসেবে দলটির কার্যক্রমে গতিশীলতা আসে।



রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের না থাকার সুযোগে বিএনপিই এ মুহূর্তে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল, যার দেশে কর্মী ও সংগঠন আছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই জামায়াত নেতৃত্ব মনে করছে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি জায়গাতেই দলের অবস্থান তৈরি করা সহজ হবে। এজন্য যেসব এলাকায় দলটি দুর্বল কিংবা যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগের অবস্থান এতদিন শক্ত বলে জনমনে ধারণা আছে সেসব এলাকাতেই জামায়াত সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে, যাতে তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করে দলের একটি অবস্থান তৈরি করতে পারে। এছাড়া যারা প্রার্থী হবে তাদের শক্ত অবস্থান তৈরী করতে পারেন। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জেও ব্যতিক্রম ঘটে নাই।
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন