
পলাশের পাঁচ খলিফা এখনো এলাকায়
ফতুল্লাতে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরপরই পালিয়েছে। তবে এসকল সন্ত্রাসীরা তাদের গডফাদার শামীম ওসমানের পর আরেক নিরব সন্ত্রাসী লম্বা টুপিওয়ালা হিসেবে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক কাওছার আহমেদ পলাশ। নারায়ণগঞ্জে বিগত ১৬ বছর যাবৎ মানুষের প্রতি অন্যায় অত্যাচার সহ নানান রকম কার্যক্রম চালিয়েছে শুধু তাই নয় দখলবাজি, টেন্ডারবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্ম করেই একে একে করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। বিশেষ করে আর মূল ব্যবসা চাঁদাবাজি তার এই চাঁদাবাজির বৃহৎ ভাবে ছিলো বিভিন্ন গার্মেন্টস সেক্টর গুলো। বিভিন্ন সময় গার্মেন্টস শ্রমিকদের উসকে দিতেন এ শ্রমিক নেতা কাওছার আহমেদ পলাশ। শুধু তাই নয় পরিবহন সেক্টরে ছিলো তার বিশাল একটা নিয়ন্ত্রন বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে বৈধ পরিবহন সাথে সাথে অবৈধ যে সকল পরিবহন রয়েছে সেগুলো তার লোক দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রধান হোতা ছিলেন কাওসার আহমেদ পলাশ।
শুধু পরিবহন সেক্টরেই থেমে থাকেনি আলীগঞ্জ, দাপা , পাগলা এলাকাতে ড্রেজার বালু উত্তোলনেও ছিলো কাওসার আহমেদ পলাশের অনুসারীদের নাম। ইতিমধ্যেই সামপ্রতিক সময়ে যে সকল মামলা গুলো হয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলাতেই কাওসার আহমেদ পলাশ ও তার অনুসারীদের আসামী করা হয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের পাগলা শাখার সভাপতি আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর মেম্বার, আবদুর রাজ্জাক টিক্কা , জাকির মেম্বার, শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু , সোহেল আহমেদ, সাত্তার, শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু ও রিকসা চাঁদাবাজ আজিজুল সহ আরো বেশ কয়েকজনের নাম মামলাতে উঠে আসে। শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন হোসেন কাওসার আহমেদ পলাশের অতি ঘনিষ্টজন একজন কর্মী হিসেবে পরিচিত ফতুল্লাতে তার আর্শিবাদে ইতিমধ্যেই কয়েকটা গাড়ি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে আজিজুল অবৈধ অটোতে প্লেট দিয়েই প্রতি মাসে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার বেশি চাঁদাবাজি করতো। যার বড় একটি অংশ এই শ্রমিক নেতার কাছে দিতে হতো। প্রত্যেকটি চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন হিসেবে কাজ করতো।
জানা যায়, কোটা আন্দোলনকারী সাধারন শিক্ষার্থী ও সাধারন জনগণের এক দফা দাবির তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগষ্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতিদর কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন। তার দেশ ছাড়ার সাথে সাথে বেশ কিছু এমপি মন্ত্রী দেশ ছেড়েছে। এমনকি কোন কোন এমপি ,মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতারা দেশেই বিভিন্ন স্থানে পলাতক হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরও জানা যায় নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধরাও ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের সাথে সাথে তারাও নিজেদের গা ঢাকা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধ কেউ বাদ থাকেনি সবাই বিভিন্ন জায়গাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যে ফতুল্লায় থানায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়ে আর এই মামলায় ফতুল্লায় অধিকাংশ আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিগত দিনে ফতুল্লাকে যারা এক ত্রাসের রাজত্ব হিসেবে পরিনত করেছে তাদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা মামলা দেওয়া হচ্ছে। আর এই মামলা গুলোতে শ্রমিক নেতা পলাশ ও তার নেতাকর্মীদের নামে করা হচ্ছে। আর এই হত্যা মামলা ইতিমধ্যেই আস্তে আস্তে দীর্ঘ হচ্ছে। প্রথমে এই শ্রমিক নেতা ও তার অনুসারীরা এলাকায় থাকলেও এখন মামলা খাওয়ার পর ইতিমধ্যে তারাও গা ডাকা দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে সরকার পতনের পরপরই সমস্ত পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেছে আর এই চাঁদাবাজির গডফাদারাও পালাতে শুরু করে দিয়েছে।
শুধু তাই নয় পাগলা, আলীগঞ্জ, ফতুল্লাতে এখনো তাদের চাঁদাবাজির সেক্টরগুলো সচল আছে। বিভিন্ন লোকজন দিয়ে তারা তাদের এই চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েও গ্রেফতার না হওয়াতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাই অবিলম্বে এই সকল চাঁদাবাজদেরকে যেন আইনের আওতায় আনা হয় এমনটিই দাবি জানান।