Logo
Logo
×

রাজনীতি

আগ্রাসী খোকনকে ছেঁটে ফেলায় রূপগঞ্জে ফিরেছে স্বস্তি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

আগ্রাসী খোকনকে ছেঁটে ফেলায় রূপগঞ্জে ফিরেছে স্বস্তি

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন

Swapno

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বও দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। অতিসত্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, পট পরিবর্তনের পর থেকেই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ বিক্রি করে রূপগঞ্জে চাঁদাবাজি, দখল, লুটপাটে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছিলেন রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় সাধারণ জনগণ। কিন্তু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কুখ্যাত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ছেঁটে ফেলে দেওয়ায় সকলেই হাফ ছেড়ে বেঁচেছে এই দাগি,সন্ত্রাসী মার্কা চাঁদাবাজকে যাতে কোন ধরণের পদে আর পদায়ন না করা হয় তা নিয়ে তারেক রহমানের নিকট অনুরোধ জানিয়েছে পটপরিবর্তনের পর থেকে নির্যাতিত ব্যবসায়ীবৃন্দ। বর্তমানে রূপগঞ্জসহ নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ খোকনে ত্যক্ত-বিরক্তি প্রকাশ করছেন। বর্তমানে খোকনের বিদায়ে স্বস্তিতে ফিরেছে রূপগঞ্জ।

এ দিকে জেলা বিএনপির কমিটি ভাঙ্গার পূর্বে তদন্ত কমিটি জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোন বিতর্কিত তথ্য যা পেয়েছিলো। এর মধ্যে সবগুলোই ছিলো- তার কর্মীগণদের বিরুদ্ধে। এর বাহিরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের। তিনি রূপগঞ্জে একজন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। গত কয়েকদিন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ নানা অপকর্ম নিয়ে নারায়ণগঞ্জের প্রকাশিত দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকায় একাধিক সংবাদ পকাশিত হয়েছে। যাকে ঘিরে নেতাকর্মীরা সকলেই জেলা বিএনপির কমিটির ভাঙার পিছনে গোলাম ফারুক খোকনকে দুষছেন।

গোলাম ফারুক খোকনের বিরদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম উল্লেখ করা হলো- গত ৫ আগষ্টের পর রূপগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহল ও শিল্প কলকারখানা মালিকদের কাছে এক আতঙ্কের নাম হিসেবে পরিচিত ছিলো এই গোলাম ফারুক খোকন। গত ০৫ আগষ্ট পটপরির্বতনের পর থেকে এই খোকন তার লোকদের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পকারখানার ঝুট-ওয়েস্টিজ মালামাল দখল এমনকি বহু শিল্প কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে করেছেন চাঁদাবাজি। এছাড়া ও আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে আতাঁত করে নিয়েছেন মোটা অংকের সুবিধা। এর বাহিরে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ বিক্রি করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইউএস বাংলার কাছ থেকে রূপগঞ্জে তাদের ব্যবসা-বানিজ্যেসহ সব কিছু দেখার বিনিময়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা ও সুবিধা। এদিকে খোকনের আশকারায় তার লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার বিরুদ্ধে এমন বিতর্ক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ছাড়া ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের কাছে ও রয়েছে। এদিকে বিগত দিনে শুধু দিপু ভূঁইয়ার উপর আস্থা রেখেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খোকনকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। কিন্তু পথে পথে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইমেজ সংকটে ভুগছেন খোকন। এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে তার একত্মতা মিটিংয়ের ছবি প্রকাশে আসলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিতে পেইডে খোকনকে শোকজ করা হয়। যা নিয়ে জাতীয় কয়েকটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এদিকে যা দেখে দিপু ভূঁইয়া ও গোলাম ফারুক খোকন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হুমরি খেয়ে পড়েন যার ঘন্টা ২ পরেই রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিতে আরেকটি পেইডে আগের পেইডটি গুজব বলে কাটিয়ে দেওয়া হয়। তা ছাড়া ৫ আগষ্টের পর রূপগঞ্জের ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক ও আওয়ামী লীগের দোসর ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া, সুবিধা নেওয়া, রূপগঞ্জে প্রত্যেকটি ওয়ার্ড, পৌরসভা, ইউনিয়নের পকেট কমিটি নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গতে বাধা। ডজন খানিক অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে।

সূত্র আরো জানায়, কিছুদিন পূর্বে তারাবো পৌরসভা জুড়ে লুটপাটের পাশাপাশি দুই চালককে মারধর করে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রকল্পের ট্রাকভর্তি বালু লুটের ঘটনায় অভিযুক্ত লুটপাটকারী যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ায় হাফিজুর রহমান পিন্টু জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের চ্যালা হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে বিগত দিনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে থাকা গোলাম দস্তগীর গাজীর সাম্রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ করছেন এই বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক খোকন। তা ছাড়া সূত্র মতে, গোলাম ফারুক খোকনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের আওতাধীন দখলে রাখা গার্মেন্টসগুলোর নাম হলো- সিম ফেবিক্স, এস কে এফ ফার্মাসিটিকেল‘স, ওয়াটার ক্যামিকেল‘স, এসিআই, টাইগার কোমল পানীয়/মিনারেল ওয়াটার, মীর সিমেন্ট, মেঘনা গ্রুপ, রূপসী কনক্রিট, সিকদার সল্ট, বি এইচ এল গ্রুপ। একই সাথে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন জুড়ে তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে- গ্রামটেক, ফকির এপারেলস, সানজানা গার্মেন্টস। তা ছাড়া তারাবো পৌরসভা এলাকায় এ সি এস ট্রেক্সটাইল। সবই বর্তমানে খোকন ও তার লোকজনদের দখলে। এদিকে সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান বালু হাবিবের রূপগঞ্জ সকল ড্রেজারের নিয়ন্ত্রণ, নুরুজ্জামান খানের ১৭টি ড্রেজারের ব্যবসা পরিচালনা, রূপগঞ্জ উপজেলার সকল হাইজিং কোম্পানীর সমস্ত মিল ফ্যাক্টরী একক নিয়ন্ত্রণকারী, শীতলক্ষ্যা জেডির সকল লোড-আনলোড ড্রেজারের নিয়ন্ত্রণ সবই বর্তমানে একক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক খোকন। শুধু তাই নয় এমন আরো শত শত প্রতিষ্ঠান বর্তমানে খোকনের নিয়ন্ত্রণে।  তা ছাড়া রূপগঞ্জ দখলে রাখতে তাদের বলয়ের লোকজন দিয়েই মূলদল ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি সাজিয়ে রেখেছেন এই খোকন। এদিকে আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে আতাঁত করে রূপগঞ্জে একটি বিশাল আধিপত্য বিস্তারের পায়তারা করছেন তিনি। এ ছাড়া দাউদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীর মাধ্যমে পূর্বাঞ্চল এলাকায় জমি খেকো বনে যাচ্ছেন এই খোকন। বিভিন্ন অভিযোগে বর্তমানে লুটে এগিয়ে থাকলে ও রাজনীতিতে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন খোকন। তা ছাড়া জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক পদ বিক্রি করে রূপগঞ্জে খোকন যেন আরেক গাজীর পরিপূরক হিসেবে আখ্যা পেয়েছিলেন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন