না.গঞ্জের মাটিতে শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের বিচার হবে : এড.সাখাওয়াত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

তারেক রহমান কর্তৃক রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানা শ্রমিকদলের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তারেক রহমান কর্তৃক রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানা শ্রমিকদলের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় নন্দীপাড়া রেল লাইন সংলগ্ন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কে.এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, বাংলাদেশে রাষ্ট্র কাঠামোটাকে গত আওয়ামী সরকার এরকম পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেটাকে এতো নেওয়ার পরে দুর্বল করে ফেলেছে। যার কারনে এই রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা আমাদের নেতা তারেক রহমানের ঘোষণা করতে হয়েছে। আওয়ামীলীগ এদেশ থেকে জনগণের ভোটের অধিকারকে নির্বাসিত করেছে। গত ১৫ বছর এ দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। তাদের ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে লাগে নাই। এই ভাবেই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ভোটার হয়ে গেছে। এই বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ সহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাধ্যমে এদেশের মানুষের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা আওয়ামীলীগের নেতা এই শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রী, তার এমপি, বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান, সেলিম ওসমানরা কুক্ষিগত করে রেখেছে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের টাকা তারা বিদেশে পাঁচার করেছে। লক্ষ লক্ষ কোটি ডলার আজকে তারা বিদেশে পাঁচার করেছে। তাদের সেই টাকা বাংলার জনগণের টাকা। সেই জনগণের টাকা বাংলার জনগণের হাতে ফিরে আনতে হবে। আমরা মনে করি যারা দুর্নীতি করেছে, খুন, গুম, হত্যা, নির্যাতন করেছে তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। শেখ হাসিনা সহ তাদের সকল দোসরদের যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে এবং জনগণকে যে কষ্ট দিয়েছে, সেই কষ্টের বিচার এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের হবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবো, ঐক্যবদ্ধ থেকে জনগণের পাশে থাকবো। জনগনের আপদে-বিপদে আমরা সব সময় পাশে থাকবো। আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন জনগণের পাশে থাকার জন্য। আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে যদি কেউ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কেউ চাঁদাবাজি করে, কাউর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘর দখল করে, কাউকে নির্যাতন করে তাহলে তাদেরকে বহিস্কার নয় শুধু তাদেরকে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হবে। সুতরাং সবাই সাবধান হবেন। আমাদের এই নারায়ণগঞ্জকে আমরা একটি সুন্দর নারায়ণগঞ্জ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের পার্শ্ববর্তী একটি রাষ্ট্র আমাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ সৃষ্টি করে তারা একটি সুবিধা নিতে চায়। তাদের সেই সুবিধা থেকে আমরা সবাই সর্তক থাকবো। হিন্দু-মুসলিম আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা এদেশে জন্মেছি, এই দেশেই আমাদের মৃত্যু হবে। এই দেশেই আমার পূর্ব পুরুষরা ছিলো, এই দেশেই আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম থাকবে। সুতরাং যারা হিন্দু-মুসলিম বৈষম্য সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের ব্যাপারে সর্তক থাকবেন। পার্শ্ববর্তী একটি রাষ্ট্র ভারত এই প্রভাকান্ড চালিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিভিন্ন বিবাদ বানাতে চায়। কিন্তু আমরা বলতে চাই আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই ভাই ভাই। এখানে কোন সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, সবাই আমরা এই বাংলাদেশেই বেঁচে থাকবো, বাংলাদেশেই মরবো।
এসময় প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আওয়ামীলীগ ৭১’ থেকে ৭৫ ক্ষমতায় এসেছিলো, ৯৬ থেকে ২০০০ এ ক্ষমতায় এসেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলো। আপনারা আওয়ামীলীগের ইতিহাস জানেন। তাদের ইতিহাসেন শেষ নেই, আওয়ামীলীগ এমনই অপকর্ম করেছে, শেখ হাসিনা এমনই অপকর্ম করেছে যে তার সাথে তার এমপি,মন্ত্রী সবাই পালিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা আশা করবো নারায়ণগঞ্জে বা বাংলাদেশে যে রাজনীতিরই আসুক বা আমার দলই হোক যে, এমন কোন কর্মকান্ড করবো না যে, আমাদের পালিয়ে যেতে হয়। আমরা জনগণের পাশে থাকতে চাই। জনগণের সুখে-দুখে থাকতে চাই। জনগণের জন্য আমরা আমাদের জীবন বাজি রেখে কাজ করতে চাই। তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছে জনগণের পাশে থাকার জন্য, জনগণের বিপদ-আপদে থাকার জন্য। আজকে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে, আমরা বাংলাদেশের মানুষ আশা করেছিলাম অতিশিগ্রই নির্বাচন দেবে কিন্তু তারা সংস্কারের নামে সময় কালক্ষেপন করছে। আমরা বলতে চাই এই সংস্কার বিএনপি অনেক আগে থেকেই শুরু করেছে। প্রথম সংস্কার শুরু করেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান, দ্বিতীয় সংস্কার বেগম খালেদা জিয়া এবং তৃতীয় সংস্কার এই গত ৫ আগস্টের পূর্বে তারেক রহমান ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ওনি ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের ২০কোটি মানুষ এবং দেশি-বিদেশী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বুদ্ধিজীবিদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এই ৩১ দফায় কি আছে? বেকার সমস্যার কথা বলা আছে, ছাত্রদের কথা বলা আছে, মা-বোনদের কথা বলা আছে, শ্রমিকদের কথা বলা আছে, বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের কথা বলা আছে। কৃষকদের কথা বলা আছে। অতএব আমরা আশা করবো, তারেক রহমান যে ৩১ দফার ঘোষণা দিয়েছে সেটার কি আপনাদের সমর্থন আছে? যদি থেকে থাকে তাহলে আপনারা তারেক রহমানের পাশে থাকবেন, মহানগর বিএনপির, নারায়ণগঞ্জ থানা শ্রমিকদল এবং ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির পাশে থাকবেন। বিএনপি যদি আপনাদের রায়ে ক্ষমতায় আসে তাহলে অবশ্যই আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাঁসি ফোটাতে চাই। আমাদের সাধারণ মা-বোনদের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। এই হাসি ফুটিয়ে আমরা বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ এবং একটি সুখি বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাজহারুল ইসলাম জোসেফ বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, তা আমার নেতা তারেক রহমান আগে থেকেই দিয়ে দিয়েছেন। এটাকে কাজে লাগালে বর্তমান সরকারের কাজ করার জন্য সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে এদেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার আহবান জানাই। সদর থানা শ্রমিকদলের আহবায়ক মো.অলক ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো.কামাল মোল্লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আর আরিফ, ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তার সহ প্রমুখ।