প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও দেখা মিলল না সেই প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতাদের

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ
গত সাড়ে ১৫ বছর যখন ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ দেশে শাসন চালিয়েছে তখন জাঁকজমক করে বিশাল শোডাউন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের নেতারা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতেন। একই সাথে বিশাল বড় কেক কেটে দলকে তা দেখাতেন। গতকাল ছাত্রলীগের ৭৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হলেও নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগের কোন নেতার দেখা মিলে নাই। তাছাড়া এখানকার ছাত্রলীগকে একক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমানের ছেলে ওয়ন ওসমান। তার হাতের কব্জায় রেখেছে ছাত্রলীগকে। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাস ৫ আগষ্টে ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুকে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগের নেতারা পালিয়ে যায়। কয়েকজন নেতা পালিয়ে থেকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি স্ট্যাটাস দিয়ে সক্রিয় রয়েছেন। কিন্তু বিগত দিনে তারা বিশাল শোডাউন দেখিয়ে যে শক্তি প্রদর্শন করেছে তা যেন এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেল গত ৫ আগষ্টে।
এদিকে ৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠন ছাত্রলীগের ৭৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যায়। কিন্তু এদিন নারায়ণগঞ্জের জেলা মহানগর ছাত্রলীগের কোন নেতা কিংবা কর্মীর দেখা মিলে নাই। যদিও সংগঠনটিকে ইতোমধ্যে অন্তবর্তিকালিন সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তাছাড়া ছাত্রলীগের নানা অপকর্মে নারায়ণগঞ্জের মানুষ ছিল অতিষ্ঠ। এই ছাত্রলীগ ছিল ওয়ন ওসমানের গুন্ডাবাহিনী। তারা বিভিন্ন নির্বাচনের কেন্দ্র দখল করতে গিয়ে র্যাবের হাতে মার খেয়েছে।
দলীয় সুত্রমতে, ২০২৩ সনের ৩১ জুলাই এক বছরের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সোমবার (৩১ জুলাই) ছাত্রলীগের প্যাডে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটিতে মেহেদী হাসান সম্রাটকে সভাপতি এবং মো. রাসেল প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সেইসঙ্গে সহ-সভাপতি করা হয়েছে আনারুল হক এবং অনাবিল দাশ নির্ঝরকে। এছাড়া যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিমান্ত মল্লিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সম্রাট সুফিয়ানের নাম রয়েছে কমিটিতে। এই কমিটির আগে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি ছিলেন হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল। এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে ছিলেন আজিজুর রহমান আজিজ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু।
খোঁজ নিয়ে জানাযায় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান সম্রাট বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সক্রিয় হন। এছাড়া মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক হাবিবুর রহমান রিয়াদ মালয়েশিয়ায় থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি ছাড়েন। সেই সাথে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে বলে জানান দেন।
জানা যায়, ৩০ ডিসেম্বর আশরাফুল ইসমাইল রাফেল তার নিজেরে ভেরিফাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তবে ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও দেখা দিলেন বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দাপুটে সেই নেতা কিংবা কর্মীদের দেখা মেলেনি।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নেতৃত্বেই ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এক ঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে সেদিন যাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ।