ফতুল্লার শিয়াচর এলাকার খুন, গ্রেপ্তার ৬
দুই পা বিচ্ছিন্ন করে ড্রামে ভরে ঝোপে ফেলে দেন প্রেমিকসহ স্ত্রী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

দুই পা বিচ্ছিন্ন করে ড্রামে ভরে ঝোপে ফেলে দেন প্রেমিকসহ স্ত্রী
ফতুল্লায় মো. নয়ন (৪৯) নামে এক মাদক কারবারিকে হত্যা করে লাশ ড্রামে ভরে ঝোপে ফেলে দেয় তার স্বজনরা। আড়াই বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেই এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন তিনি। নিহত নয়ন ফতুল্লার নন্দলালপুর এলাকার মো. সালামের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ফতুল্লার শিয়াচর এলাকার নির্জন ঝোপ থেকে লাশ উদ্ধারের ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে হত্যার সাথে জড়িত নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা (৪০), তার দুই মেয়ে সুমনা (২০), সানজিদা (১৮), সাবিনার পরকিয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল (৪৫) ও সহযোগী চয়ন (৪০) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাত ৯টার দিকে ফতুল্লার পিলকুনি প্রাইমারী স্কুলের বিপরীতে হিটলারের বাড়ির সামনে থেকে নিহত নয়নের বিচ্ছিন্ন দু পা উদ্ধার ও মানিক মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাদককারবারি নয়ন জেলে থাকার সুবাধে রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেলের সাথে পরকীয়ায় জড়ান সাবিনা। জেল থেকে বের হয়ে ঘটনা জানাজানি হলে নয়নকে খুনের পরিকল্পনা করেন সাবিনা ও রাসেল। সে অনুযায়ী নয়নকে খুন করে লাশ ড্রামে লুকিয়ে রাখেন তারা। কিন্ত পা দুটি ড্রামের ভেতর রাখতে সমস্যা হওয়ায় কেটে ফেলে বিচ্ছিন্ন পা অন্যত্র ফেলে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ঠোঙ্গা রাসেলকে গ্রেফতার করেছে। পরে রাসেলের স্বীকারোক্তি মতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকুড়ি দশ পাইপ এলাকা থেকে সাবিনা, তার দুই মেয়ে সুমনা, সানজিদা এবং হত্যার সাথে জড়িত চয়নকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নয়নের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, গাড়ি ছিনতাইসহ নানা অপরাধে ৮-১০টি মামলা রয়েছে। ৩-৪ বছর আগে নয়ন হেরোইনসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। ওই মামলায় নয়নের সাজা হয়। নিহত নয়নের প্রথম স্ত্রী সাহিদা ফতুল্লার পিলকুনি এলাকার বাসিন্দা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ফতুল্লার ব্যাংক কলোনী এলাকায় বসবাস করেন। ৪-৫ বছর আগে নয়ন সাবিনাকে বিয়ের পর প্রথম স্ত্রীর সাথে তার দূরত্ব বেড়ে যায়।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই রেহানুল ইসলাম বলেন, ঝোপের ভেতরে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ড্রাম এবং এর ভেতর থেকে পঁচা গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রামের মুখ খুলে পলিথিনে মোড়ানো লাশ উদ্ধার করে। তবে লাশের দুটি পা ছিল না। পুলিশ বিচ্ছিন্ন পা দুটির সন্ধান করছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশটি মাদক কারবারি মো. নয়নের। তিনি গত ৮-১০ দিন আগে জামিনে মুক্ত হয়ে এসে হত্যার শিকার হন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। খুনের মোটিভ উদ্ধার এবং হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতার ও লাশের বিচ্ছিন্ন পা দুটি উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।