Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

তেলচোর মেহেদীর ভাই লিটনকেও গ্রেপ্তারের দাবি

Icon

যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

তেলচোর মেহেদীর ভাই  লিটনকেও গ্রেপ্তারের দাবি

তেলচোর মেহেদীর ভাই লিটনকেও গ্রেপ্তারের দাবি

Swapno

সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বার্মাস্ট্যান্ড এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা ও তেলচোর আনোয়ার হোসেন মেহেদী বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে তার অপকর্ম সামলানো ভাই লিটনকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।  শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে র‌্যাব-১১ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। পরে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন মেহেদী সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বর্মাস্ট্যান্ড এলাকার আফির উদ্দিন মাদবরের ছেলে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, আনোয়ার হোসেন মেহেদীর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ২টি হত্যা মামলা, ১টি হত্যা চেষ্টা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার নামে জালিয়াতির মামলাও আছে। মেহেদীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো হলো- সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৫ (২২/১০/২০২৪),এফআইআর নং-২৭ (২৭/৮/২০২৪),এফআইআর নং-২৫ (২৬/৮/২০২৪)। স্থানীয়রা জানান, বিগত সরকার আমলে আনোয়ার হোসেন মেহেদীর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। তার বিরুদ্ধে গোদনাইল পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে সংগঠিতভাবে তেল চুরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।


সূত্র জানায়, শামীম ওসমানদের দোসর ও চিহ্নিত তেলচোর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মেহেদী ও তার ভাই লিটন গং এর পরিবার বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাদের নিয়ন্ত্রণেই চলছে অবৈধ তেল চুরি। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর মেহেদী পলাতক থাকলেও তার  ছোট ভাই লিটন, বড় ভাই বাচ্চু, ভাতিজা সোহাগ ও সোহান অবৈধ জ¦ালানী তেল চুরি করে বিক্রি করে পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি তাদের আর্থিক পৃষ্টপোষকতায় ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সম্বলিত পোষ্টার চাষাঢ়া, জেলা পরিষদ, নবীগঞ্জ ঘাট, জালকুড়ি স্ট্যান্ড, পুলিশ লাইন, জামতলা, খানপুর হাসপাতাল এলাকায় সাটানো হয়েছে। অনতিবিলম্বে এই সিন্ডিকেটকে গ্রেপ্তার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের স্বজনরা। তারা বলছেন, পতিত আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসন করতে প্রকাশ্যে এসব করছে প্রশাসন কেন তাদের আইনের আওতায় আনছে না। এর আগে গত শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে সিদ্ধিরগঞ্জসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে এ পোস্টার সাঁটানো হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর পর নিজেরাই ভিডিও করে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিচ্ছেন। এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেছে। এদিকে দেয়ালে সাঁটানো পোস্টারে দেখা গেছে, শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির পাশাপাশি শামীম ওসমানের ছবি সাথে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন মেহেদীর ছবি। পোস্টারে বড় করে লেখা ছিলো, ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ আর প্রচারে লেখা ছিলো ‘নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর মুক্তিবাহিনী।’ সিদ্ধিরগঞ্জসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের দেয়ালসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এবং বেশিরভাগ পোস্টারগুলো সাঁটানো হয়েছে বিএনপির পোস্টারের উপর।


কে এই মেহেদী : সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল এলাকার মৃত আফিরউদ্দিন মাতবরের ছেলে আনোয়ার হোসেন মেহেদী। তিনি দীর্ঘদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এ পরিচয়ে তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের খুব ঘনিষ্টজন হয়ে যান। এরপর থেকেই শামীম ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি তার মালিকানাধীন মেসার্স মেহেদী এন্টারপ্রাইজের আড়ালে দীর্ঘ বহুবছর যাবত চোরাই তেলের ব্যবসা করে আসছেন। বর্তমানে তিনি ওই এলাকার তেল চোর সিন্ডিকেটের প্রধান বলে স্থানীয়সূত্রে জানাগেছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের জায়গা জমি আত্মসাতের সাথেও মেহেদীর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আর এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। পাঁচ আগস্টের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন শামীম ওসমানের বিশ^স্ত সহচর এই আনোয়ার হোসেন মেহেদী। সবশেষে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী মামলাও হয়। গত বছরের ২৪ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাফেজ মো: হোসাইন আহম্মেদ (২০) নামে এক যুবককে হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে আসামী করা হয়। এ মামলায় তিনি ৬৮নম্বর আসামী বলে নিশ্চিৎ হওয়া গেছে।


মেহেদী ও তার তাই ভাই লিটনের নিয়ন্ত্রণে চোরাই তেলের ব্যবসা : শামীম ওসমান জ্বালানী তেলের ব্যবসা করতেন মেহেদী। এখন সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন মেহেদীর ভাই লিটন। লিটন সবাইকে বলে বেড়ান,  আমি এসপিকে মাসে ৫ লাখ  ও থানার ওসিকে প্রতি মাাসে ৩ লাখ টাকা দেই, যাহার কারণে আমার নামে ৫ আগস্টের পর কোন মামলা হয়নি। লিটন এ ব্যবসা পরিচালনা করে লিটন হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছে। আওয়ামীলীগ কে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য শামীম ওসমানের নির্দেশে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় অস্থির করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে এবং কিছু দিন পূর্বে ঢাকার তেজগাওয়ে এলাকায় আওয়ামী লীগ এর পক্ষে  যে মিছিল সংগঠিত হয় তার সমস্ত ব্যয় বহন করে লিটন । জানা গেছে, মেহেদীকে এই কাজের জন্য  নির্দেশ দেন শামীম ওসমান ও আজমেরী আসমান। এত কিছুর পরও লিটনের নামে কোন "মামলা হয়নি কেন এ প্রশ্ন সকলের কাছে । মুখে মুখে ঘুরপাক খাচ্ছে । তাছাড়া মেহেদী মামলা খেয়ে বর্তমানে  পলাতক রয়েছে।  


সূত্র জানিয়েছে, লিটনের নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশের সকল জ্বালানি তেলের চোরাই তেলের নিয়ন্ত্রণ চলছে।এই ব্যবসার অর্থ দ্বারা আওয়ামী লীগ এবং এসকল ব্যবসার অর্থ দ্বারা আওয়ামী লীগকে পুনরায় প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ ব্যয় করছে। লিটন বর্তমানে শামীম ওসমানের সকল সকল জ্বালানি তেল পরিবহন কাজে ব্যবহারকৃত জাহাজগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এবং তাহার নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১০০ টিরও বেশি বিমানের জ্বালানী তেল পরিবহনের জন্য ট্যাংকলরী বিদ্যমান, এসকল ব্যবসা পরিচালনা করছে লিটন ও আড়াল থেকে মেহেদী।


সূত্র জানায় মেহেদী ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক । এই পদবী ব্যবহার করে বার্মা স্টান্ডে সকল প্রকার আওয়ামী লীগ এর অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছে এবং বার্মা স্ট্যান্ড এর ডিপো ও ৬নং ওয়ার্ডের সকল ব্যবসা সাবেক কর্ডিন্সিলর মতির যোগ-সাজেশে নিয়ন্ত্রণ হত ও তাদের লিড দিতেন শামীম ওসমান ও আজমেরী ওসমান। মেহেদীর গাড়ীতে যে সকল কর্মচারী ছিল তাহারা সকলে দিল আওয়ামী লীগ ঘরনার নেতা-কর্মী  (প্রায় ৫০০) দিয়ে সিদ্দিরগঞ্জ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষের, জায়গা-জমি দখল করে নিত।


Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন