Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

শাসনগাঁওয়ে চাঁদাবাজদের শেল্টার দেন স্বেচ্ছাসেবকদলের রাসেল

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

শাসনগাঁওয়ে চাঁদাবাজদের শেল্টার দেন স্বেচ্ছাসেবকদলের রাসেল

শাসনগাঁওয়ে চাঁদাবাজদের শেল্টার দেন স্বেচ্ছাসেবকদলের রাসেল

Swapno



শাসনগাঁওয়ের শাহী মসজিদ থেকে শাসনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৩০০ মিটারেরও বেশি জায়গা জুড়ে রাস্তা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী দোকানপাট। প্রথমে সীমিত আকারে শুরু হলেও এখন তা পরিণত হয়েছে একটি সুসংগঠিত চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটে। চাঁদাবাজির পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে তৈরি হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা, দুর্ভোগ এবং আতঙ্কের নতুন অধ্যায়।সূত্র  জানিয়েছে,এই চক্রটি শুধু চাঁদাবাজি করেই ক্ষান্ত নন।এই জায়গায় ভোরের দিকে এই চক্রটি জুয়ার বোর্ড বসায়।


স্থানীয় সূত্র, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে উঠে এসেছে একটি সুগঠিত চক্রের নাম, যার নেতৃত্বে রয়েছে হযরত, বরিশাইল্লা আমান, কাশেম, পাগলা বোরহান, চশমা রতন, আরাফাত ও পায়েল নামের একাধিক ব্যক্তি। এদের প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দাপটের সঙ্গে অবস্থান করছে। অভিযোগ উঠেছে—এই চক্র ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদের সেলটার প্রশ্রয়ে পরিচালিত হচ্ছে।রাসেল মাহমুদ এর মিছিল মিটিংয়ে এই চক্রকে সব সময় দেখা যায়।


চাঁদাবাজির বিষয়েএক দোকানদার জানালেন,"প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। না দিলে দোকান ভাঙে, মালপত্র ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এমনকি অনেকে মারধরের শিকারও হয়েছে।"


এই চাঁদাবাজদের রাজনৈতিক পরিচয় এবং স্থানীয় দলীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্যতাই মূলত প্রশাসনের নীরবতার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এমন চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বে শিশুদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। রিকশা চলাচল বন্ধ, ফুটপাত বন্ধ, স্কুলগামী শিশুদের ও তাদের অভিভাবকদের প্রতিদিনই বিকল্প পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।


একজন অভিভাবকের বক্তব্য,“বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে গেলে বাধ্য হয়ে দোকানগুলোর পাশ দিয়ে যেতে হয়। ভয় থাকে যদি কিছু বলি, ওরা এসে মারধর করে বা হুমকি দেয়।” এমন অবস্থায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো একাধিকবার অভিযোগ দেওয়ার পরও অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে এবং আগের চেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।


"এটি কেবল একটি চাঁদাবাজির ঘটনা নয়, এটি একটি এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে দেওয়ার প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি সবচেয়ে বিপজ্জনক, কারণ তখন প্রশাসন নিরব থাকে। "এই ধরনের পরিস্থিতিতে পুলিশ বা প্রশাসন যদি নির্লিপ্ত থাকে, তাহলে এলাকাবাসী চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। এর পরিণতি হয় খুন, হামলা।


একজন প্রবীণ এলাকাবাসী বলেন, “আমরা একদিন শান্তিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করতাম। এখন দোকানদার, পথচারী, এমনকি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন—এই দখলদার চক্রকে উচ্ছেদ করুন। ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা করুন।


প্রথমবার সংবাদ প্রকাশের পর কিছুটা সচেতনতা তৈরি হলেও, প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না থাকায় জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে আবারও মিডিয়ায় বিষয়টি উঠে আসায় সাধারণ মানুষ আশাবাদী যে এবার হয়তো প্রশাসন জবাবদিহি করতে বাধ্য হবে। শাসনগাঁওয়ের এই পরিস্থিতি কেবল একটি এলাকার সমস্যা নয়; এটি গোটা নারায়ণগঞ্জের চিত্রের প্রতিচ্ছবি হতে পারে, যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন