পকেট পিএস থেকে অপকর্মের সর্দার সেলিম, রুখবে কে?

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

পকেট পিএস থেকে অপকর্মের সর্দার সেলিম, রুখবে কে?
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের পিএস সেলিম হোসেন দিপুর একের পর এক বিতর্কিত কান্ডে সোনারগাঁয়ে বিএনপির রাজনীতিতে অস্থিরতা এবং বিএনপির ইমেজ ক্ষুন্নের একের পর এক গুরুতর অভিযোগ আসছে।
কেননা মান্নানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে এই স্বার্থলোভী পিএস সেলিম মামলা বাণিজ্য,চাঁদাবাজি,চুরি,ডাকাতির সাথে লিপ্ত হয়েছেন গড়ে তুলেছেন বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী। তাছাড়া মান্নানের বরাতে প্রশাসনকেও ব্যবহার করছেন প্রতিনিয়ত এই পিএস সেলিম। তাছাড়া মান্নান বলয়ের সকল অপকর্মের সর্দারে পরিণত হয়েছেন।
সূত্র বলছে, আওয়ামীলীগের শাসন আমল থেকেই এই চতুর স্বার্থলোভী পিএস সেলিম মান্নানের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামীলীগের সাথে নিয়মিত আঁতাত করে চলতেন। এছাড়া আওয়ামীলীগ নেতাদের পাতা বিভিন্ন ফাঁদে মান্নানকে পা রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন পিএস সেলিম। তাছাড়া সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের অন্যতম দোসর সকল সন্ত্রাসীদের জনকদের সাথে ছিল তার ঘনিষ্ঠতা যেমন: সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জি মাসুদুর রহমান মাসুমের নিকট তাকে প্রায়ই আসতে দেখা যেন ইউপিতে।
তাছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথেও সে সখ্যতা রাখতেন। যার আলোকে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর টাকায় ইফতার মাহফিলেরও আয়োজন করেন এবং সেই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধান অতিথি করেছিলেন।
তাছাড়া আওয়ামীলীগের টাকায় ইফতার মাহফিল হওয়ার সত্যতা প্রকাশ পায় যেভাবে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মান্নান রাজনৈতিক যেকোন সভা সমাবেশ তার ইউপি পিরোজপুর ইউপির মধ্যেই পালন করলেও শুধুমাত্র এই ইফতার মাহফিলটি সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ব্যানারে জামপুরে পালন করেন।
সূত্র বলছে, গত ৫ই আগস্টের পর সোনারগাঁয়ের ১০টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভায় পিএস সেলিমের মামলা বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজি বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে পিএস সেলিম তার অপকর্মের নয়া অধ্যায় শুরু করেন। কিন্তু তার অপকর্মের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তথা বিএনপির কোন নেতা তেক্ত বিরক্ত হয়ে মুখ না খুললেও গত ১৯জুন পিএস সেলিমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানববন্ধন করেছেন।
আর এই মানববন্ধনে বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ বলেন, সেলিম বলে তুই কত বড় নেতা হইছোস আমি তোকে দেখব আমরা যার যার মনমত রাজনীতি করি সেলিম আমাকে হুমকি দিচ্ছে। উনি বারদী ইউনিয়ন বিএনপির প্রয়াত সভাপতি আব্দুর রহমানের কুলখানিতে আমাকে কলারে ধরে অপমান করে মারমুখি আচরণ করেছে।
আমাকে মান্নান সাহেবের সাথে হাত মালানোর কারণে সেলিমের গুন্ডা বাহিনী আমাকে নির্যাতন করছে। এঘটনায় নূর মোহাম্মদের ভাগিনা বলেন, সেলিমের সন্ত্রাসী বাহিনী পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে মান্দেরপাড়া গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে মহিলা মানুষদের হুমকি দেয়াইছে যার ফলে আমার নানা,খালাসহ দুই জন অসুস্থ আছে।
তাদের বাড়িতে গিয়ে দরজায় লাথি ছোট বড় পরিবারের সকলকে হুমকি ধামকি দিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করেছেন। এছাড়া এই ভয় ভীতি দেখানোর সময় আমার এক মামা এবং মামাত ভাই দৌড়িয়ে পানিতে নিয়ে ফেলেছে। আমরা মেছলন্দপুর গ্রামের দিপুর এসকল কান্ডের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই সেলিমের বিচার চাই। মূলত, এসকল ঘটনা সেই কুলখানি অনুষ্ঠানের তুচ্ছা ঘটানাকে কেন্দ্র করে আর সেই অনুষ্ঠানে সেলিমরাই দোষ করেছে।
কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে রাত ২টায় পুলিশ এনে মেছলন্দপুর গ্রামে ২০-৩০জন লোক আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়েছে আমরা চক পাতালে পালিয়েছি কিন্তু আমাদের মা বোনকে হুমকি দিয়ে বলে গিয়েছে আগামীতে আমাদের কি করুন অবস্থা করবে সে সকল হুমকি ধামকি। এমনকি সে আবারও হুমকি ধামকি দিয়ে বলেছে র্যাব,পুলিশ,ডিবি দ্বারা আমাদেরকে শায়েস্তা করে গ্রাম ছাড়া করবে সে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে ২লাখ টাকা এবং ৩ লাখ টাকা চেয়েছে সে আমারা চাঁদা দিব কেন আমরা খারাপ লোক না যে চাঁদা দিব।
২০১৬ সালে আমাদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা দেয় সেই ডাকাতি মামলার ইস্যু টেনে আমাদেরকে হুমকি দেয়। আর এই ডাকাতি মামলা করিম মেম্বার সেলিম মিলে নিষ্পত্তি করে দিয়েছে কিছুদিন আগে বলেছিল যে আমরা শুধুই মামলা দিয়েছি অন্যজনের কথা শুনে তোদের মামলা আমরা শেষ করে দিলাম। আমাদের এখনো সেই ডাকাতি মামলার ভয় দেখিয়ে বাণিজ্য করার পায়তারা করছে।
এছাড়া সাম্প্রতিকালে আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সেখানেও জনতার ধোলাই খাওয়া দুই যুবক সেলিমের শেল্টারে চুরি করার স্বীকারোক্তি দেয় আল-আমিন,পারভেজ নামক দুই যুবক এবং এসকল চুরিতে শান্ত নামক আরও এক যুবকের জড়িত থাকার ও অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে সে সকল যুবকদের নিকট হতে সেলিম আবার স্বীকারোক্তি নেয়ায় যে সে এসকলের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
এদিকে পিএস সেলিম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবি করেন ডিবিসি চ্যানেলের একটি লাইভ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের জবাবে তিনি তার এলাকার বিষয়ে মাদক এবং ডাকাতদের নিয়ে তিনি কথা বলায় তার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার বলে সে স্ট্যান্ডবাজি করেন। এছাড়া তাকে হত্যা করা হবে এই মর্মে একটি জিডি করে ফের স্ট্যান্ডবাজির আশ্রয় নেন।
তবে বিএনপি থেকে এসকল অপকর্মে লিপ্ত থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও মান্নান এবং তার পুত্র সজীবের প্রভাবের ফলে দলীয় অ্যাকশন থেকে রেহাই পেয়ে ধীরে ধীরে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠচ্ছেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের পিএস সেলিম হোসেন দিপু। যার কারণে তাকে রুখতে ধমানোর কোন প্রকার উদ্যোগ নেই কারো।