Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

পিএস সেলিমের দম্ভে ঝলসে যাচ্ছে মান্নান

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

পিএস সেলিমের দম্ভে ঝলসে যাচ্ছে মান্নান

পিএস সেলিমের দম্ভে ঝলসে যাচ্ছে মান্নান

Swapno


একজন রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত সহকারীর রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ও নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা না থাকলেও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ও নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতার অভাবে তার পিএস সেলিম হোসেন দিপুর বুদ্ধিমত্তায় সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা ও বিভিন্ন অপকর্ম সংগঠিত করেন।


আর এই পিএস সেলিমের মাধ্যমে মান্নানের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার কারণে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন মান্নান। যার কারণে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তেক্ত ও বিরক্ত মান্নানের সহযোগী পি এস সেলিমের উপর। তাছাড়া পিএস সেলিমের বুদ্ধিমত্তায় মান্নান রাজনীতি করতে গিয়ে ধীরে ধীরে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন দলীয় সভা সমাবেশে নিজেকে সংযত রাখতে পারছেন না প্রতিনিয়ত নেতাকর্মীদের সাথে উগ্র রূঢ় আচরণ করছেন মান্নান।


এসকল কর্মকান্ডকে পিএস সেলিম বাহাবা হিসেবে গন্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছেন। গত ৫ই আগস্টের পর সোনারগাঁয়ের ১০টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভায় পিএস সেলিমের মামলা বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজি বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে জনসাধারণ মুখ না থাকলেও গত ১৯ জুন পিএস সেলিমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।


পিএস সেলিম কান্ডে একাধিকবার মান্নান বেকায়দায় পড়লেও পিএস সেলিমের মধুতে সবসময়ই ডুবে থাকেন মান্নান ও তার পুত্র সজীব। যার ফলে সাম্প্রতিককালে এই বেপরোয়া পিএস সেলিমের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড অপকর্ম নেতাকর্মীদের তেক্ততা কোনটাই আমলে নেয়নি মান্নান।


সূত্র বলছে, মান্নান ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত পিএস সেলিম সোনারগাঁয়ের ১০ ইউনিয়ন পরিষদ ও ১টি পৌরসভায় আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্ন হত্যা মামলায় সংযোজন  বিয়োজন করা মাধ্যমে মামলা বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন আওয়ামীলীগের সরকারের পতনের পর। এমনকি সোনারগাঁয়ের ১০ ইউপি ও ১টি পৌরসভার সকল অপকর্ম সন্ত্রাস, নৈরাজ্য লুটপাটের শেল্টার দেন মান্নানের ছাঁয়া সেলিম বিনিময়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য লুটপাটের অর্থের ভাগ নেন। এছাড়া সোনারগাঁয়ে আলোচিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যায় নিহত আশিক হত্যা মামলায় তার মাকে আর্থিক সুবিধা দেয়া হবে বলে থানায় পাঠান পিএস সেলিম।


পরবর্তীতে থানায় এসে মান্নান আশিকের মাকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন। বিনিময়ে আশিক হত্যা মামলাকে পুঁজি করে হত্যা মামলায় মেতে উঠেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের কয়েক মাস আগে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর টাকায় এমন নজিরবিহীন ঘটনা ঘটানোর মাস্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করেছিলেন আজহারুল ইসলাম মান্নানের পি এস সেলিম ওসমান দিপু।


 সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে পিএস সেলিম নানা ভাবে ম্যানেজের চেষ্টা করে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী থেকে ইফতার মাহফিলের জন্য আর্থিক সহযোগীতা নেন।


আর্থিক সহযোগীতার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর পিএস সেলিম কৌশলে বিএনপির প্যাডে মান্নানের বিবৃতি হিসেবে এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এই ঘটনাকে মিথ্যা হিসেবে আখ্যা দিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতির কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেন পি এস সেলিম।


এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে মান্নান অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই পুরো সোনারগাঁয়ের বিএনপির রাজনীতিকে তার নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য মান্নানের পছন্দে ইউনিয়ন কমিটি থেকে শুরু করে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। আর এই সকল কমিটি গঠনের সময় পিএস সেলিম নানা ভাবে দেন-দরবার করে কমিটিতে ঠাঁই পাইয়ে দেয়া হবে বলে মান্নানের সাথে মধ্যস্থতা করানোর মাধ্যমে কমিটিগুলোতে পদের অযোগ্য নেতাদের ঠাঁই করে দেন পিএস সেলিম।


যার কারণে উপজেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা এই পি এস সেলিমের কারণে মান্নানের উপর তেক্ত ও বিরক্ত। তবে এই চতুর পি এস শুধু দেন-দরবারের কাজেই ব্যস্ত থাকেননি নিজেরও আখের গুছিয়েছেন। যেমন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদকের মত গুরুত্বপূর্ণ পদটি মান্নানকে ম্যানেজ করে পিএস সেলিম তার দখলে নিয়ে নেন।


এছাড়া পূর্ব থেকে উপজেলা বিএনপির সহযোগী অঙ্গসংগঠন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক পদ দখল করে রেখেছিলেন পারেননি সাংগঠনিক ভাবে কোন গতি ফেরাতে এই সংগঠন থেকে পরবর্তীতে ব্যর্থ হয়ে নিজেই পদত্যাগ করে ঠাঁই নেন উপজেলা মৎসজীবী দলের আহ্বায়ক পদে।


কিন্তু সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানের চতুর এই পি এস সেলিমের পাল্লায় পড়ে রাজনীতি করতে গিয়ে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ভাবে ধ্বংসের দিকে অতিবাহিত হচ্ছে মান্নান। সম্প্রতি পিএস সেলিম হোসেন দিপুর বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, গ্রেফতার বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে সাধারণ মানুষকে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বারদী ইউনিয়নের মান্দেরপাড়ার স্থানীয় এলাকাবাসী।


বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে মান্দেরপাড়া ব্রিজে এই মানববন্ধন করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এলাকাবাসী দাবি করেন ৫ ই আগস্টের পর থেকে এলাকার নিরীহ মানুষকে হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার চাদাঁবাজি করেন সেলিম হোসেন দিপু।



মানববন্ধনে মান্দেরপাড়া গ্রামের ফারুক বলেন, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নাম ভাংগিয়ে এলাকায় দখলবাজি, চাদাঁবাজি, মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় এই পিএস সেলিম হোসেন দিপু। এতে প্রতিয়মান হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মান্নান ফের নির্বাচনের আগে তার পিএস সেলিমের বিতর্কিত কান্ডে বেকায়দায় পড়নে যাচ্ছেন মান্নান।


এদিকে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে নবায়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদের উপস্থিতে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটুকে অশালীন শব্দ চয়ন অঙ্গভঙ্গি দেখান মান্নান। তার এসব অশোভনীয় আচরণ নিয়ে বেশ কয়েকদিন আগেও মন্তব্য করে সতর্ক করেছিলেন জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুজাহিদ মল্লিক। কিন্তু মান্নান তার পিএস সেলিমের বাহাবায় এসকল বিতর্কিত আচরণ কর্মকান্ড নিয়ে মোটেও অনুতপ্ত নন এবং আমলে নিচ্ছেন না তার ভুলে ভরা রাজনীতিকে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন