Logo
Logo
×

সংগঠন সংবাদ

১৪ বছর পর বিকেএমইএ’তে নির্বাচন, ৩৫ পদে ৩৮ প্রার্থী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

১৪ বছর পর বিকেএমইএ’তে নির্বাচন, ৩৫ পদে ৩৮ প্রার্থী

আগামী ১০ মে নিট পোশাক ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর নির্বাচন ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

Swapno

আওয়ামী লীগ শাসনামলের সময় নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি সেক্টর ব্যবসায়ী সংগঠনে ওসমান পরিবারের  সদস্যরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে বিগত শাসনামলে ব্যবসায়ী সংগঠন গুলোতে কোন ভোটের নির্বাচন হয় নাই। একক প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচন বিহীন কমিটি হয়েছে। এবার ১৪ বছর পর ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ’তে নির্বাচনের মাধ্যমে ৩৫ টি পরিচালনা পরিষদে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে। তাই ভোট নিয়ে এখন থেকেই ব্যবসায়ীদের মাঝে নির্বাচনে বইতে শুরু করেছে। বিগত সময়ে টানা ১৪ বছর একক ভাবে নির্বাচনে ভোট বিহীন সভাপতি পদে ছিলেন ওসমান পরিবারের অন্যতম মাফিয়া সেলিম ওসমান। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হওয়ার পরে আগষ্টে মাসে সেলিম ওসমান পদত্যাগ করেন।  



এদিকে আগামী মাসের ১০ মে নিট পোশাক ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর নির্বাচন ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু এখানেও জুট ব্যবসায়ী হাতেমের নেতৃত্বে ৩৫ পদে ৩৯ জন মনোনয়ন জমা দিলেও তার মাঝে ৪ জন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাদের বাহিরে আরও তিনজন প্রার্থী জমা দিয়েছে। যারা প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করায় আগামী ১০ মে ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে। এর আগে বিকেএমইএ’র সভাপতি পদটি গত ১৪ বছর আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন প্রভাবশালী ওসমান সাম্রাজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সেলিম ওসমান। গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক বাস্তবতা পরিবর্তনের সাথে বিকেএমইএ’তে ভোট্রে আমেঝ ফিরে আসতে যাচ্ছে।



অন্যদিকে বিকেএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের ৩৫টি পদে ৩৮ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর আগে ৯ এপ্রিল সংগঠনটির ৩৫ পদে ৪২ প্রার্থী মনোনয়ন জমা প্রদান করেন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৩৯ জন। ফলে প্যানেলবহির্ভূত প্রার্থী মাত্র ৩ জন। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল ১৯ এপ্রিল মো. হাতেম প্যানেলে ৩৫ জন এবং তাদের বাইরে ৩ জনসহ ৩৮ জনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। হাতেম প্যানেল থেকে ৪ জন প্রার্থীর প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।



জানা যায়, মো. হাতেম প্যানেলের ৪ জন প্রার্থী প্রত্যাহার নেয়া ব্যবসায়ীরা হলেন, এ এসএম কামরুল আহসান, মোস্তফা মনোয়ার ভূঁইয়া, মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, এম. নাসিরুদ্দীন। এছাড়া নির্বাচনে অংশ গ্রহনকারী ৩৫ প্রার্থীরা হলেন, ১. মোহাম্মদ হাতেম (এমবি নীট ফ্যাশন লিঃ), ২. মনসুর আহমেদ (মাদার কালার লিঃ), ৩. ফজলে শামীম এহসান (ফতুল্লা এ্যাপারেলস লিঃ), ৪. মোঃ সামসুজ্জামান (লিবার্টি নীটওয়্যার লিঃ মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ), ৫. অমল পোদ্দার (মেট্রো নিটিং এন্ড ডাইং মিলস লিঃ পানাম গ্রুপ), ৬. মোঃ মোরশেদ সারোয়ার (আরএস কম্পোজিট), ৭. মোহাম্মদ রাশেদ (প্যাসিফিক সোয়েটার লিঃ), ৮. আশিকুর রহমান (রহমান স্পোর্টস ওয়্যার লিঃ), ৯. মোঃ জামাল উদ্দিন মিয়া (জাহিন নিটওয়্যার লিঃ) , ১০. খন্দকার সাইফুল ইসলাম (আমানা নিটেক্স লিঃ) , ১১. রতন কুমার সাহা (পি. এম নিটেক্স (প্রাঃ) লিঃ), ১২. নন্দ দুলার সাহা (ওয়েবটেক্স এ্যাপারেলস লিঃ), ১৩. মোঃ আব্দুল হানড়বান (মেসার্স নীট সিন্ডিকেট), ১৪. ইঞ্জি. ইমরান কাদের তুর্য (সাউদার্ন নীটওয়্যার লিঃ), ১৫. ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ (ফকির ফ্যাশন লিঃ), ১৬. মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ (আল-আমিন এক্সপোর্ট লিঃ), ১৭. মিনহাজুল হক (ফতুল্লা ডায়িং এন্ড ক্যালেন্ডারিং মিল্স লিঃ), ১৮. ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন রিপন (শ্রাবণী নীটওয়ার লিঃ), ১৯. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (জেডএস ষ্টাইল বিডি লিঃ), ২০. আহসান খান চৌধুরী (চরকা টেক্সটাইল লিঃ প্রান আরএফএল গ্রুপ), ২১. মোঃ শাহরিয়ার সাইদ (ভি—টেক ফ্যাশন (প্রাঃ) লিঃ), ২২. রাজীব চৌধুরী (ইয়ং ৪ এভার টেক্সটাইলস লিঃ) ২৩. মোঃ মহসিন রাব্বানি (এ্যাবলুম ডিজাইন লিঃ), ২৪. সালাহ উদ্দিন আহমেদ (আইএফএস ট্যাক্সওয়ার (প্রাঃ) লিঃ), ২৫. মোঃ মনিরুজ্জামান (বাঁধন ফ্যাশন লিঃ), ২৬. এম. ইসফাক আহসান (আহসান কম্পোজিট লিঃ), ২৭. মোঃ মামুনুর রশিদ (এন.টি. এ্যাপারেলস ইউনিট ২ লিঃ), ২৮. রাকিব সোবহান মিয়া (ইন্সপায়ার সোর্সিং)



চট্রগ্রাম অঞ্চল থেকে, ২৯. গাওহার সিরাজ জামিল (ফোর এইচ ফ্যাশনস লিঃ (ফোর এইচ গ্রুপ)), ৩০. আহমেদ নূর ফয়সাল (ভিজুয়্যাল নীটওয়্যার লিঃ), ৩১. মোহাম্মদ শামসুল আজম (রিনোন এ্যাপারেলস লিঃ), ৩২. ফওজুল ইমরান খান (বেঞ্জমার্ক এ্যাপারেলস লিঃ), ৩৩. মোহাম্মদ সেলিম (ফারজানা ফ্যাশনস ওয়ার্ল্ড লিঃ), ৩৪. আব্দুল বারেক (মুনতাহা এ্যাপারেলস লিঃ),৩৫. মো. ইয়াসিন (মোঃ সনেট ফ্যাশনস লিঃ)।
তাছাড়া তাদের প্যানেলের বাহিরে রয়েছেন, ৩৬.জিএম হায়দার আলী (মার্টিন নিটওয়ার লি.),৩৭.মো.মনির হোসেন খান শেখ (মনিকা নিট এপারেলস লি.), ৩৮ মো. শাহজাহান মিয়া (রনি নিটওয়্যার লি.)। তবে তারা তিন জন যদি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে না নেন তাহলে পরিচালনা পরিষদের ৩৫ পদে নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণঅনুষ্ঠিত হবে।



মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে নির্বাচন কমিশন ১৯ এপ্রিল বিকাল ৫টায় ৩৮ জনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোটাররা ২০ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত তাদের ভোটার পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। ১০ মে ভোট গ্রহণের পর প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ১৪ মে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে।



বিকেএমইএ’র বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের বিরুদ্ধেও রয়েছে ‘জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা ও আওয়ামী লীগ সরকারঘেঁষা অবস্থানের’ অভিযোগ। হাতেম এখনও ‘ওসমান পরিবারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন’ বলেও অভিযোগ একাধিক ব্যবসায়ীর। যদিও এসব ছাপিয়ে তিনি বিগত ৯ মাস ধরে বিকেএমইএ’র নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন এবং এবারও প্যানেলসহ প্রার্থী হয়েছেন।



প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই টানা সপ্তমবারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সাবেক সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। নির্বাচনে জয়ী ঘোষণা করা হয় সেলিম ওসমান নেতৃত্বাধীন প্যানেলের ৩৫ জন পরিচালক। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর সংগঠনের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সেলিম ওসমান। এরপর গত বছরের ২৫ আগষ্ট বিকেএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পায় ঝুট ব্যাসায়ী মোহাম্মদ হাতেম। জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৫৭২ জন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন