নাসিক প্রশাসক ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ
নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে ঐক্যমত্যের বিকল্প নেই

লতিফ রানা
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে ঐক্যমত্যের বিকল্প নেই
# কদম রসূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে, বন্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই
# কর্তৃপক্ষকে নারায়ণগঞ্জে মেট্রো রেলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার চেষ্টা করবো
# নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় প্রয়োজনীয় অভিযান চালানো সম্ভব হয় না
# আগামী বর্ষার আগেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ সম্পন্ন করতে পারবো
# শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ শহরের মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে
পরিকল্পনার অভাবে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) এর প্রশাসক ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদম রসূল সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রাখার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, এর পশ্চিম পার্শ্বের র্যাম্প এলাকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করছেন নাসিকের প্রকৌশলীরা। এছাড়া মেট্রো রেল প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জকে অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা, যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শ করা ও সময়মতো চলমান ড্রেনেজ কাজ শেষ করার বিষয়ে তিনি ভূমিকার রাখবেন বলেও আশ্বাস প্রদান করেন। গতকাল সোমবার দৈনিক যুগের চিন্তার সাথে এক একান্ত সাক্ষাতকারে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সমস্যা, উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি উন্নয়নের জন্য নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নারায়ণগঞ্জবাসীকে এক মত পোষণ করার আহ্বান জানান।
নাসিক প্রশাসক বলেন, নারায়ণগঞ্জ আপনাদের, তাই এর উন্নয়নে আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। উন্নয়নের বিষয়ে আপনাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। শহরের যানজট নিরসন, হকার সমস্যা, লাইসেন্সবিহীন ব্যাটারি রিকশার নিয়ন্ত্রণ এবং মীরজুমলাসহ বিভিন্ন সড়ক বেদখলের বিষয়ে তিনি বলেন, নাসিকের নিজস্ব কোন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় আমাদের ইচ্ছে থাকলেও প্রয়োজনীয় অভিযান চালাতে পারি না। এই বিষয়টি আমরা সমাধান করার চেষ্টা করছি। এই শহরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে পরিকল্পনার অভাব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে। আমরা যদি নারায়ণগঞ্জবাসীর সহযোগিতা পাই তাহলে তা বাস্তবায়ন সহজ হবে।
শহরের সড়কগুলোর পানিবদ্ধতার বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন যে ড্রেনেজ ব্যবস্থায় কাজ চলমান আছে এই কাজ সম্পন্ন হলে শহরের রাস্তাগুলোতে আর পানি আটকিয়ে থাকার সম্ভাবনা নেই। ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় শহরবাসীর সাময়িক সমস্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই সমস্যা বেশি দিন থাকবে না। সিটি করপোরেশন এই ড্রেনেজ ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার উপর জোর দিয়ে বৃহদাকারে করছে। আমরা আশা করতেছি আগামী বর্ষার আগে আমরা আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ সম্পূর্ণ শেষ করতে পারবো। তারপরও কাজ চলমান অবস্থায় বৃষ্টির পানি যতটা সম্ভব দ্রুত সরানোর ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া আছে।
কদম রসূল সেতুর নির্মাণ কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদম রসূল সেতুর নির্মাণ কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে, তাই এই কাজ বন্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই সেতুর র্যাম্প নিয়ে যে সমস্যার কথা হচ্ছে এই বিষয়টি নিয়ে সচিব মহোদয়ের সাথে প্রাথমিক কথা হয়েছে। এই র্যাম্প এলাকা নিয়ে আমরাও পর্যবেক্ষণ করছি। এর বিভিন্ন কারিগরি দিক পর্যালোচনা করে এখানকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান নকশায় র্যাম্প এর যে অবস্থান আছে তা রেল লাইনের উপর দিয়ে এগিয়ে নেওয়া যায় কি না, উত্তর দিক দিয়ে যে র্যাম্প এর দাবি আছে তা বাস্তবায়ন করা যায় কি না, এই র্যাম্প বর্তমান নকশার জায়গায় রেখে বিকল্প আরও একটি র্যাম্প এর ব্যবস্থা করা যায় কি না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা কারিগরি বিষয়ের কাজ করে যাচ্ছি। আশাকরি আমরা সেতুর কাজ চলমান রেখেই র্যাম্প এর অবস্থান নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর মতৈক্যে একটি সুন্দর সমাধান করতে পারবো।
মেট্রো রেল প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জ সদর ও মদনপুরকে সংযুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মতো একটি জেলায় মেট্রো রেলের সংযোগ থাকা খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে আমি আমার সাধ্য মতো কাজ করার চেষ্টা করবো। কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো, প্রয়োজনে বাংলাদেশে রেল মন্ত্রনালয়ের সম্মানিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করবো। আপনাদের দাবি, চাহিদা এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর এই মেট্রোরেল কতটা প্রয়োজন তা তুলে ধরতে চেষ্টা করবো।