ত্বকী হত্যার ১৪৩ মাস উপলক্ষে আয়োজিত আলোকপ্রজ্জালন অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি
বিএনপির নেতারা ওসমান পরিবারকে পালাতে সহযোগিতা করেছেন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ত্বকী হত্যার ১৪৩ মাস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোকপ্রজ্জালন
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ত্বকীর হত্যাকারী ওসমান পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে একটি সংবাদপত্রে দেখলাম বিএনপির কে কে তাদের সীমানা পাড় করে বিদেশ পালাতে সহযোগিতা করেছেন। বিএনপিকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা মুখে একটা আর কাজে আরেকটা এ দিয়ে জনগণের কি উপকার করবেন? আপনাদের দলে ফ্যাসিবাদ, মাফিয়াদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা দৃশ্যমান ব্যবস্থা দেখতে চাই। গণহত্যাকারীরা পালাল কিভাবে? সরকারের, প্রশাসনের কার সহযোগিতার পালাল? তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ত্বকী হত্যার ১৪৩ মাস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোকপ্রজ্জলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এক যুগ হওয়ার পরও ত্বকী হত্যার বিচার হচ্ছে না। শেখ হাসিনা যাওয়ার পর ৬ জনকে গ্রেপ্তার ও জবানবন্দি নেয়া, এটাই কি বেশি। একটি হত্যার অভিযোগপত্র দিয়ে বিচার শুরু করার জন্য ৬ মাস কি যথেষ্ট না? আপনারা কি শেখ হাসিনার পথ ধরতে চান? হাসিনাকে হত্যার বিচার বন্ধ রাখার জন্য যেভাবে অপবাদ দিচ্ছি আপনারা কি সেই অপবাদ নেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন!
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে যে অব্যবস্থা তৈরী করেছিল তার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন সাধিত হয়নি। বিচার ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক হয়নি। ৬ মাসেও ২৪ এর হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি, বিচার করা তো দূরের কথা। আমাদের দেশের মানুষ বিচার চায় কিন্তু সরকার যখন বিচার করে না তখন মানুষ বিচার করার জন্য আইন হাতে তুলে নেয়। আজ তাই দেখতে পাচ্ছি। একদিকে ভুক্তভোগী আইন হাতে তুলে নিচ্ছে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার নিরবতার মধ্য দিয়ে তাদের দায় থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছে। কিন্তু সঙ্গবদ্ধ বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে মব-জাস্টিস প্রতিষ্ঠা করা এর দায় সরকারকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার, উপদেষ্টারা বিভিন্ন কথা বলছে, সহ্য করাবে না, বাজার ভাঙ্গা হচ্ছে আর দেয়া হবে না। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয় না। গত দু-তিনদিন যে উন্মাদনা হয়েছে আজ কেউ কেউ বলছে, এখন থামা দরকার। এতকিছু হচ্ছে, এসমস্তে আপনাদের সম্মতি ছিল। তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার ব্যবস্থার কাজ কি। দৃশ্যমান অপরাধ সংগঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, খুন করেছে, হেলিকাপ্টার দিয়ে গুলি চালিয়েছে। আপনারা তাদের বিচার করতে পারছেন না। কি চাচ্ছেন, এর বিচার ক্ষুদ্ধ জনগণ করবে? এটা কোনো সভ্য সরকার, দেশ হলো! আমরা এর নিন্দা জানাই। বলেছিলেন, সাড়ে ছয়শ আপনাদের জিম্মায় রয়েছে। কোথায় গেল তারা? টাকা খেয়ে তাদের বর্ডার পার করে দিয়েছেন। আর আপনারা এ দেশ রক্ষা করবেন, আমরা এটা বিশ্বাস করি না। টাকার কাছে যারা বারে বারে বিক্রি হয় তারা দেশ মানুষের কোনো কল্যাণে আসে না। এদেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযোদ্ধ হয়েছিল। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। স্বৈরাচারকে বিদায় করা হয়েছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার পথে যান। নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান, আজমেরী ওসমান, শাহ নিজামসহ যারা রয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দ্রুত অভিযোগপত্র সম্পূর্ণ করে আদালতে জমা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা বন্ধ হয়ে থাকা সকল হত্যার বিচার চাই।
এ সময় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে সহ-সভাপতি মনি সুপাস্থ এর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি হালিম আজাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, প্রদীপ ঘোষ বাবু, সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, সিপিবির শহর সাধারণ সম্পাদক সুজয় রায় চৌধুরী, বাসদের সংগঠক প্রদীপ সরকার প্রমুখ।